লালমনিরহাটের পাটগ্রামে হোসেন আলী (৫০) নামে এক মুদি দোকানদারের মৃত্যুর পাঁচ ঘণ্টা পর মারা গেলেন তার স্ত্রী মনজুরা বেগম (৪২)।
শুক্রবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে স্বামীর মৃত্যুর প্রায় ৫ ঘণ্টার মাথায় শনিবার সকাল ১০টার দিকে স্ত্রী মারা যাওয়ার এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আনিছুর রহমান মানিক তাদের দু'জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অপরদিকে মনজুরা বেগমের মৃত্যু নিশ্চিত হতে শনিবার সকাল থেকে পল্লী চিকিৎসক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার এবং সবশেষে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দফায় দফায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও ইসিজি করানো হয়। নানা নাটকীয়তার পর অবশেষে হাতীবান্ধা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ইসিজির পর মনজুরা বেগমের মৃত্যু নিশ্চিত করে চিকিৎসক।
নিহত দম্পতির পরিবারের সদস্য এবং প্রতিবেশীরা জানান, মুদি দোকানে কাজ শেষ করে শুক্রবার রাতে বাড়ি ফিরে উঠোনের গাছের আম কুড়িয়ে ঘরে ঢোকেন হোসেন আলী। স্ত্রী মনজুরা বেগম সেই আম কেটে খেতে দেন তাকে। আম খাওয়ার কিছুক্ষণ পর রাত ৩টার দিকে হোসেন আলী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন।
এরপর কান্নাকাটির আওয়াজ পেয়ে বাউরা ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আনিছুর রহমান মানিক এবং অন্যান্য প্রতিবেশীরা সেখানে ছুটে গিয়ে দেখতে পান হোসেন আলী মারা গেছেন। স্বামীর মৃত্যু নিশ্চিত হয়ে কান্নাকাটি শুরু করেন মনজুরা বেগম। এরপর সকাল ৯টার দিকে সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়লে ইউপি সদস্য আনিছুর রহমান মানিক ভ্যানে করে পাশের বাউরা বাজারের পল্লী চিকিৎসক মাহির লাবিব মোনেমের কাছে নিয়ে যান।
সেখানে পরীক্ষা শেষে মনজুরা বেগমের মৃত্যু নিশ্চিত করেন পল্লী চিকিৎসক মোনেম। পরে তাকে বাড়িতে আনা হলে উপস্থিত কয়েকজন মনজুরা বেগমের মৃত্যু নিশ্চিত হতে অধিকতর পরীক্ষার কথা বলেন। পরে বাউরা বাজারের আপডেট ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে খবর দেওয়া হলে ইসিজি মেশিন নিয়ে ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারের আয়া শিউলি রাণী আসেন।
তিনি ইসিজি করে দেখতে পান মনজুরা বেগমের পালস নেই। পরে তিনিও মৃত ঘোষণা করেন মনজুরা বেগমকে। কিন্তু উপস্থিত কয়েকজন প্রতিবেশী শিউলি রাণীর সিদ্ধান্তে ভরসা না পেয়ে মনজুরা বেগমকে দ্রুত রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। সেখানে নিয়ে যাওয়ার পথে হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে পুনরায় ইসিজি করা হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নয়াশতাব্দী/টিএ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ