প্রিয়জনদের সঙ্গে পবিত্র ঈদুল আজহা'র আনন্দ ভাগাভাগি করতে দ্বীপ জেলা ভোলায় আসছে বহু মানুষ। রাজধানী ঢাকা ও লক্ষ্মীপুর থেকে ছেড়ে আসা প্রতিটি লঞ্চে রয়েছে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়। তিল ধারণের ঠাঁই নেই প্রতিটি নৌযানে। লঞ্চের পাশাপাশি লক্ষ্মীপুর থেকে স্পিডবোট ও ট্রলারযোগে উত্তাল মেঘনা পাড়ি দিয়ে ভোলায় আসছে শতশত মানুষ। যাত্রীদের সার্বিক নিরাপত্তা দিতে ঘাটগুলোতে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা জোরদার। নিয়মিত মনিটরিং করছে জেলা প্রশাসক।
শুক্র ও শনিবার এ দু'দিন এমনই চিত্র দেখা গেছে ভোলার ইলিশা লঞ্চঘাটে।
শনিবার (১৫ জুন) সকালে সরেজমিনে ভোলার ইলিশা লঞ্চঘাটে গিয়ে দেখা গেছে, রাজধানী ঢাকা ও লক্ষ্মীপুরের মজু চৌধুরি ঘাট থেকে ছেড়ে আসা প্রতিটি লঞ্চে রয়েছে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়। লঞ্চের ডেক থেকে শুরু করে ছাদ পর্যন্ত যাত্রীদের সয়লাব। ৩০ থেকে ৪০ মিনিট পরপর এই দু'টি নৌ-রুট থেকে ছেড়ে আসছে লঞ্চগুলো।
সকাল ৭টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত লক্ষ্মীপুরের মজু চৌধুরী ঘাট থেকে তিনটি সি-ট্রাক ও দু'টি লঞ্চ ছেড়ে এসেছে ভোলার উদ্দেশ্যে। প্রতিটি লঞ্চে ছিল যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়। একই অবস্থা দেখা গেছে রাজধানীর সদরঘাট থেকে ছেড়ে আসা তিনটি লঞ্চেও। নারী-পুরুষের পাশাপাশি শিশুসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ পরিবারপরিজনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে নাড়িরটানে বাড়ি আসছে।
সকাল ৮টায় মজু চৌধুরী ঘাট থেকে ৪'শ যাত্রী নিয়ে ছেড়ে আসা সি-ট্রাক এস টি খিজির-৭ এর মাষ্টার আবু হানিফ বলেন, বৃহস্পতিবার থেকে সরকারি ও বেসরকারি ছুটি ঘোষণা হওয়ার পর থেকে নৌযানে যাত্রীদের তীব্র চাপ বেড়েছে। ঘাটে লঞ্চ বেড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে হুমড়ি খেয়ে লঞ্চে উঠছে যাত্রীরা। কয়েক মিনিটের মধ্যে লঞ্চ ভরে যাচ্ছে।
একই কথা জানিয়েছেন, রাজধানী ঢাকার সদরঘাট থেকে ছেড়ে আসা দোয়েল পাখি-১ ও ১০ এর মাষ্টাররা। তারা বলেন, সদরঘাটে প্রচুর যাত্রী রয়েছে। যাত্রীর চাপ সামাল দিতে তারা হিমশিম খাচ্ছেন। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কতৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এর নির্দেশনা অনুযায়ী তারা লঞ্চগুলো ছেড়ে আসছেন। লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রীবহন ও বাড়তি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।
ঢাকা ও লক্ষ্মীপুর থেকে আসা বেশ কয়েকজন যাত্রীর সঙ্গে কথা বলেছে নয়া শতাব্দী। তারা নয়া শতাব্দীকে জানিয়েছেন, লঞ্চগুলো অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে না। বেশ কয়েকজন যাত্রী এবারের ঈদ যাত্রা স্বস্তিদায়ক বলে জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কতৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এর ভোলার সহকারী পরিচালক মো. শহিদুল ইসলাম জানান, এবারের ঈদে বিশেষ কোনো সার্ভিস নেই। কাঙ্খিত পরিমাণ লঞ্চ চলাচল করছে। প্রতিটি লঞ্চে যাতে অতিরিক্ত যাত্রীবহন ও অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা না হয়, সেজন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ঈদে যাতে করে যাত্রীরা স্বস্তি নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারে, সেজন্য বিআইডব্লিউটিএ এর পাশাপাশি ইলিশাঘাটে কোস্ট গার্ড, নৌ-পুলিশ ও জেলা প্রশাসকের ম্যাজিস্ট্রেট কাজ করে যাচ্ছে।
ভোলা জেলা প্রশাসক মো. আরিফুজ্জামান জানান, যাত্রীদের নিরাপত্তার স্বার্থে ভোলার প্রতিটি লঞ্চঘাটে প্রশাসন মনিটরিং করছে। ইতিমধ্যে অতিরিক্ত যাত্রীবহন ও অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করাসহ বেশকিছু কারণে কয়েকটি লঞ্চকে জরিমানা করা হয়েছে।
নয়াশতাব্দী/এনএইচ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ