রাজশাহী পুঠিয়ায় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। খাদিজা আক্তার (৩৫) নামে ওই কৃষি কর্মকর্তা আত্মহত্যা করেছেন নাকি তাকে হত্যা করা হয়েছে তা নিয়েই রহস্যের জাল ছড়িয়ে পড়েছে। তবে নিহতের বাবার বাড়ির পরিবার দাবি করছেন তাকে হত্যা করা হয়েছে।
এদিকে, ওই কর্মকর্তার রহস্যজনক মৃত্যুর কারণে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার স্বামীকে আটক করেছে পুলিশ। বুধবার (৩০জুন) দুপুরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক)হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছেন।
খাদিজা আক্তার পুঠিয়া উপজেলার জিউপাড়া ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের আব্দুল ওহাবের স্ত্রী। তিনি রাজশাহী পবা উপজেলা কৃষি অফিসের অধীনে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা হিসেবে চাকুরি কর্মরত ছিলেন। তার স্বামী ওহাব রাজশাহী পুলিশ লাইন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী শিক্ষক। মঙ্গলবার (২৯ জুন) দিবাগত রাতের যে কোনো সময় তাদের নিজ বাড়ি ডাঙ্গাপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
খাদিজা আক্তারের ভাই আবুল কালাম দাবি করেন, ‘আমার বোন আত্মহত্যা করেনি। তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। কারণ লাশের শরীরে আত্মহত্যার কোনো আলামত নেই। তাকে কৌশলে মেরে ফেলা হয়েছে। তাছাড়া ওই বাড়ির পাশের কোনো লোক খাদিজাকে ফাঁসিতে ঝুলতে দেখেনি। আমরা বিষয়টি আইনি ভাবে লড়ব।প্রতিবেশী সূত্রে জানা গেছে, আব্দুল ওহাব ও খাদিজা আক্তার বিয়ে হয়েছে প্রায় ২০ বছর আগে। খাদিজার বাবার বাড়ি বগুড়া জেলা সদরে। তারা র্দীঘদিন যাবত দু’জনেই চাকুরি সুবাদের রাজশাহী শহরে ভাড়া বাড়িতে থাকেন। কিন্তু প্রতি সপ্তাহের শুক্র ও শনিবার গ্রামের বাড়িতে চলে আসেন। আব্দুল ওহাব একজন শিক্ষিত মানুষ ও শিক্ষক হলেও তার স্ত্রীর উপর মাঝে মধ্যে অমানুষিক অত্যাচার করতেন। তাদের ঘরে তিনটি সন্তান রয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলেও তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
নিহতের ছেলে গালিব (৯) জানান, ঘটনার দিন রাতে এই বাড়িতে তারা তিন ভাই, মা-বাবা ও দাদী ছাড়া কেউ ছিলেন না। রাতে আমরা সবাই ঘুমিয়ে ছিলাম। বাবা ও মার মধ্যে কোনো ঝগড়া বা মারামারি আমরা দেখতে পাইনি। এরপর অনেক রাতে দাদী আমাদের ঘুম থেকে ডেকে তুলেছেন। এরপর গিয়ে দেখি মা মারা গেছেন। তবে কিভাবে মারা গেছেন তা আমরা বলতে পারবো না।
নিহতের স্বামী আব্দুল ওহাব জানান, আমরা রাতের খাবার শেষ করে শুয়ে পড়ি। এরপর সে কখন উঠে গিয়ে গলায় দড়ি দিয়েছে তা বুঝতে পারেনি। পরে রাত সাড়ে ১২টার দিকে ছোট ছেলে ঘুম থেকে উঠে কান্নাকাটি শুরু করে। এরপর তাকে রুমে না পেয়ে খুজাখোঁজি শুরু করি। এক পর্যায়ে পুরনো ঘরের তীরে তার ঝুলন্ত লাশ দেখতে পাই। এরপর সকালে থানায় খবর দেয়া হয়।
পুঠিয়া থানা অফিসার ইনর্চাজ (ওসি) সারোয়ার্দী হোসেন জানান, কৃষি কর্মকর্তার মৃত্যুর খবর পাওয়ার পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রামেক হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
তিনি আরো জানান, নিহতের মাথায় আঘাতের চিহৃ রয়েছে। এতে প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে এটা পরিকল্পিত হত্যা হতে পারে। তবে হত্যা না আত্মহত্যা ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে সঠিক ভাবে জানা যাবে।
নয়া শতাব্দী/এম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ