ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৪ জুলাই ২০২৪, ২০ আষাঢ় ১৪৩১, ২৭ জিলহজ ১৪৪৫

লিবিয়ায় জিম্মি নাটোরের ৪ যুবক উদ্ধার, পরিবারে আনন্দ

প্রকাশনার সময়: ১০ জুন ২০২৪, ১৮:২২

লিবিয়ায় জিম্মি থাকা নাটোরের গুরুদাসপুরের চার যুবককে উদ্ধার করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। এমন খবর শুনে চার যুবকের পরিবারে বইছে আনন্দের জোয়ার।

রোববার (৯ জুন) দুপুরে তাদের উদ্ধার করেছে লিবিয়ার সেনাবাহিনী।

গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. উজ্জল হোসেন জিম্মি থাকা প্রবাসীদের উদ্ধার ও অপহরণকারী চারজনকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

উদ্ধার হওয়া চার যুবক হলেন- উপজেলার বিয়াঘাট চরপাড়া গ্রামের মো. শাজাহান প্রাং এর ছেলে মো. সোহান প্রাং (২০), মো. তয়জাল শেখের ছেলে মো. সাগর হোসেন (২৪), মৃত শুকুর আলীর ছেলে নাজিম আলী (৩২) ও ইনামুল ইসলামের ছেলে মো. বিদ্যুৎ হোসেন (২৬)।

গত ৭ জুন (শুক্রবার) দৈনিক নয়া শতাব্দী পত্রিকার অনলাইনে ‘নাটোরের ৪ যুবক লিবিয়ায় অপহরণ, স্বজনদের আহাজারি’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদটি নজরে আসে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের। এরপর রোববার সাড়ে ১১টায় লিবিয়ার স্থানীয় প্রশাসন জিম্মি থাকা প্রবাসী ৪ জন শ্রমিককে উদ্ধার করেন। এসময় অপহরণকারীদের মধ্যে লিবিয়ার দুইজন ও বাংলাদেশের দুই জনসহ মোট চারজনকে আটক করে লিবিয়ার স্থানীয় প্রশাসন।

প্রবাসী সোহানের মা রুলি বেগম জানান, ‘গত ২ জুন তার ছেলেসহ প্রতিবেশী আরো তিনজন যুবককে লিবিয়ায় অপহরণ করা হয়। তারপর নির্যাতনের ভিডিও পাঠিয়ে চারজনের জন্য ৪০ লাখ টাকা মুক্তিপণ চায় অপহরণকারীরা। সন্তানদের এমন পরিস্থিতিতে দিশেহারা হয়ে পড়েছিলেন তিনিসহ তিন প্রবাসীর পরিবার। এরপর বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে লিবিয়া থেকে তার মোবাইলের ইমুতে ছেলে সোহান একটি ভিডিও বার্তা পাঠান।

সেখানে সোহান বলে, ‘আব্বা আমাদের লিবিয়ার স্থানীয় প্রশাসন ও সেনাবাহিনী অপহরণকারীদের কাছ থেকে উদ্ধার করেছে। তোমরা চিন্তা করো না। আমরা এখন নিরাপদে আছি।’ এমন খুশির খবরে প্রাণ ফিরে পেয়েছে চার প্রবাসীর পরিবার ও স্বজনদেও মধ্যে। তারা সরকার, গণমাধ্যম ও লিবিয়া প্রশাসনের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।

আরও এক প্রবাসী বিদ্যুৎ এর মা বিউটি বেগম জানান, ‘তার স্বামী অনেক পূর্বে থেকেই লিবিয়ায় শ্রমিক হিসাবে কাজ করতো। পরবর্তীতে তার ছেলেসহ প্রতিবেশী আরো তিন যুবককে নিয়ে লিবিয়ায় যান। তার ছেলেও অপহরণের শিকার হয়েছিলেন। অপহরণ হওয়ার পর থেকেই পরিবার ও স্বজনদের আহাজারি থামছিলো না। রোববার তার স্বামী কল করে জানায় চারজনকেই লিবিয়ার স্থানীয় প্রশাসন উদ্ধার করেছে।

গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. উজ্জল হোসেন জানান, লিবিয়ায় জিম্মি থাকা ৪ যুবকের উদ্ধারের ঘটনা পুলিশ সুপার জানিয়েছেন। সেই খবর চার পরিবারকে জানানো হয়েছে। বর্তমানে তারা সেখানকার সেনাবাহিনীর হেফাজতে রয়েছে। চার যুবকই সুস্থ ও ভালো আছে। নাটোর পুলিশ সুপারের নির্দেশে শুরু থেকে আজ পর্যন্ত পরিবারগুলোর সাথে পুলিশ সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখেছে।

উল্লেখ্য, প্রায় দুই বছর আগে সেই চার যুবক লিবিয়াতে কাজের জন্য যান। দুই বছরে কাজ করে উপার্জিত প্রতি মাসে ১৫-২০ হাজার করে পাঠিয়েছেন। অভাবের সংসারেও হতদরিদ্র পরিবারগুলো প্রবাসী সন্তানদের মুখের দিকে তাকিয়ে ছিলো। প্রবাস থেকে উপার্জিত টাকা দিয়ে ঋণ পরিশোধ করে সংসারে স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে নিয়ে আসবেন ভেবেই ঋণ করে ছেলেদের বিদেশে পাঠিয়েছিলেন।

নয়া শতাব্দী/এসআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ