দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মহাসড়ক ঢাকা-টাঙ্গাইল বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়ক। এবারের ঈদ যাত্রায় এ মহাসড়কে উত্তরের পথে যানজটের আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্ট্যরা। বিশেষ করে এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত সাড়ে ১৩ কিলোমিটার যানজটের আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে যানজট নিরসনে এরমধ্যে বিভিন্ন প্রদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন পুলিশ। এতে ৭ শতাধিক পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন।
বঙ্গবন্ধু সেতু কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ঈদ যাত্রায় যাত্রীদের যানজট মুক্ত রাখার জন্য তারা সব রকম পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
এদিকে, আব্দুল মোমেন গ্রুপ যানবাহন চলাচলের জন্য নতুন করে এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতুর ৪ কিলোমিটার মহাসড়ক ব্যবহারের উপযোগী করে গড়ে তুলছেন। গত ঈদযাত্রায় ৪ এপ্রিল থেকে ৯ এপ্রিল পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু সেতুর ওপর ৫৩টি গাড়ি বিকল ও কিছু দুর্ঘটনা ঘটে। যে কারণে শেষ দিকে ঈদ যাত্রায় বঙ্গবন্ধু সেতু থেকে টাঙ্গাইলের ঘারিন্দা পর্যন্ত প্রায় ৩৫ কিলোমিটার সড়কে তৈরি হয় যানজট।
বিগত তিনটি ঈদকে ঘিরে দেখা যায়, গত বছরে রোজার ঈদে দুর্ঘটনার সংখ্যা ২০টি। একই বছরের কোরবানির ঈদে দুর্ঘটনার সংখ্যা ৫৯টি এবং চলতি গত ঈদুল ফিতরের দুর্ঘটনা সংখ্যা দাঁড়ায় ৮৩টি।
এবারও ঈদযাত্রায় একই শঙ্কায় যাত্রী ও চালকদের। তারা বলছেন, এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত সাড়ে ১৩ কিলোমিটার রাস্তার কাজ এখনো ভোগাচ্ছে। তাই সড়কে নজরদারি বাড়ানোর দাবি তাদের।
জানা যায়, মহাসড়কে যানজট মুক্ত রাখার জন্য গত ২৬ মে একটি সমন্বয় করেছেন পুলিশ সুপার। প্রতিটি দপ্তরের কাজ আলোচনার মাধ্যমে বণ্টন করে দেওয়া হয়েছে। তা এরমধ্যেই মাঠ পর্যায়ে কাজ চলছে। বড় আশঙ্কা থাকে এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত সাড়ে ১৩ কিলোমিটার মহাসড়ক। এ ছাড়াও গত কয়েক বছর ধরে উত্তরবঙ্গের যানবাহন একমুখী করে রাখা হয়। তা সেতু থেকে ভূঞাপুরের লিংক রোড় দিয়ে এলেঙ্গাতে উঠার জন্য ব্যবস্থা।
অপরদিকে, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা যানবাহন সরাসরি সেতুতে উঠার ব্যবস্থা করা হয়।
আব্দুল মোমেন লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার মোহাম্মদ মিজান সারোয়ার বলেন, সাড়ে ১৩ কিলোমিটার মহাসড়কের মধ্যে গত ঈদে ৪ কিলোমিটার ব্যবহারের উপযোগী করে দেওয়া হয়। এবারের ঈদেও নতুন করে আরো ৪ কিলোমিটার ব্যবহারের উপযোগী করা হয়েছে। ঈদের আগেই তা ব্যবহারের উপযোগী করে দেওয়া হবে। ঈদে ঘরমুখী মানুষ এবারে খুব একটা সমস্যা হবে বলে মনে করছে না।
বঙ্গবন্ধু সেতুর সাইট অফিসের নিবার্হী প্রকৌশলী আাহসানুল কবির পাভেল বলেন, সেতু দিয়ে যত ফিটনেসবিহীন যানবাহন কম আসবে, ততই দুর্ঘটনা কম হবে। এতে যানজটের সম্ভবনাও কম থাকবে। সেতুর পাশে যত যানবাহন দাঁড়িয়ে থাকবে ততই যানজট হবে। এই জন্যই চালকদের সচেতন করে তারা যেন সেতুর টোল ভাঙতির জন্য অপেক্ষা না করতে হয়। এটিকেই নজর দেওয়ার জন্য চালকদের বিশেষভাবে দেখা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার বলেন, এবছরে যানজট মুক্ত রাখার জন্য কয়েকটি পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তিনি মনে করেন এবছর বর্যাকাল শুরু হয়েছে। অপরদিকে পশুবাহী ট্রাক এরমধ্যেই চলা শুরু করেছে। এর মধ্যে আরেকটি যুক্ত হয়েছে উত্তরবঙ্গে থেকে মৌসুমী ফলের ট্রাক ভর্তি গাড়ি ঢাকা দিকে যাচ্ছে। এতে পশু ও মালামাল পরিবহন বৃদ্ধি পেয়েছে। এই পরিবহন চলাচলে নিবিঘ্ন করা জন্য জেলা পুলিশে ৭ শতাধিক সদস্য পালাক্রমে ২৪ ঘণ্টা দায়িত্ব পালন করবেন। এ ছাড়াও বৃষ্টিসহ প্রাকৃতি দুর্যোগে যাতে পুলিশ মাঠে থাকে সে ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, সেতুটির উপর কোনো যানবাহন সমস্যা দেখা দিলে কিভাবে সেই যানবাহনকে অতি তাড়াতাড়ি রিমুভ করা যায় তা গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। মাটিবাহী ট্রাক ও কম গুরুত্বপূর্ণ পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। এ ছাড়াও রাস্তার পাশে পশুর হাট যেখানে যেখানে আছে সেটিকে রাস্তা থেকে দূরে বসানোর নির্দেশে দেওয়া হয়েছে।
নয়া শতাব্দী/এসআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ