সড়কের দীর্ঘ ২৩ কিলোমিটার এলাকার ছোট-বড় গর্ত আর গর্ত। তাতে কাদাপানিতে একাকার। দেখে মনে হয় ধানের চারা রোপণের জন্য জমি প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে। এরই মধ্যে কোনো রকমে হেলেদুলে চলছে যানবাহন।
ভালুকার সিডস্টোর থেকে পশ্চিম দিকে পাড়াগাঁও গতিয়ারবাজার, কাচিনা, বাটাজোড় হয়ে ২৩ কিলোমিটার সড়কটি মিশেছে টাঙ্গাইলের সখিপুরে। এ সড়কটির প্রায় পুরোটা জুড়েই দীর্ঘদিন ধরে এমন বেহাল দশা। এ কারণে প্রতিদিন দুর্ভোগ সহ্য করেই যাত্রী ও চালকদের এই সড়ক দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।
এ সড়কের গর্তে পড়ে প্রতিদিনই যানবাহন উল্টে দুর্ঘটনায় মানুষ আহত হচ্ছে। সড়কে পানির কারণে পায়ে হেঁটে যাওয়ারও উপায় নেই। অসুস্থ ও নারী-শিশুদের জন্য এই পথে চলাই দায়।
সড়কটি অভিভাবকহীন উল্লেখ করে কাচিনা এলাকার এনামুল হক নামে এক বাসিন্দা বলেন, গত পাঁচ বছরে এই সড়কে কোনও সংস্কার কিংবা মেরামতের কাজ হয়নি। সড়কের দুইপাশে রানার কোম্পানির কারখানাসহ অসংখ্য কারখানা আছে। কিন্তু এই সড়কের উন্নয়নে জনপ্রতিনিধি কিংবা সরকারের যেন কোনও মাথাব্যথা নেই।
চরম ভোগান্তির বিষয়ে তিনি বলেন, সড়কের অবস্থা বেহাল হওয়ায় গুরুতর রোগী ঢাকা কিংবা ময়মনসিংহ মেডিকেলে নেওয়া অনেক সময় সম্ভব হয় না। বিশেষ করে গর্ভবতী নারীদের চিকিৎসা করাতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে রয়েছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় গতিয়ারবাজারের ব্যবসায়ী মনসুর আলীর ভাষ্য, সড়কটি খালের মতো অবস্থায় রয়েছে। এ কারণে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালামাল আনা সম্ভব হয় না। সড়কের খানাখন্দের কারণে যানবাহনে মালামাল আনতে অতিরিক্ত টাকা খরচ করতে হয়। সময় মতো দোকানের মালামাল আনা সম্ভব না হওয়ায় লোকসানের মুখে রয়েছি। পরিবহন খরচ বেশি পড়ার কারণে মালের দাম বেশি চাইলে ক্রেতারাও ঝগড়া করেন। সব মিলিয়ে ব্যবসায়ীরা খুব ক্ষতির মুখে রয়েছেন বলে জানান তিনি।
বাটাজোড় এলাকার কৃষক জমশেদ আলী বলেন, বর্ষার পানি জমে সড়কটি ভেঙে ও গর্ত হয়ে এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। মানুষ ঝুঁকি নিয়ে যানবাহনে যাতায়াত করে। কৃষিপণ্য নিয়ে যাওয়া অনেক কষ্টের বিষয়। সময়মতো কৃষিপণ্য বাজারে নিতে না পারায় ন্যায্য দাম থেকেও বঞ্চিত হচ্ছি আমরা। সড়কের সংস্কার ও মেরামতের মাধ্যমে স্থানীয়দের দুর্ভোগ লাঘবের দাবি জানান তিনি।
সড়কের বেহালদশায় মানুষর দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহিদুজ্জামান বলেন, ‘সড়ক সংস্কার ও মেরামতের জন্য বরাদ্দ চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।’ আগামী বর্ষার আগেই সড়কের উন্নয়ন করা হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ