টাঙ্গাইল সদর উপজেলার চরপৌলি এলাকাতে যমুনায় তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনে ইতিমধ্যে ৩৫ পরিবারের ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। অসময়ে এমন ভাঙনে পরিবার-পরিজন নিয়ে আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছেন নদীপাড়ের মানুষ।
স্থানীয়রা জানায়, গত মঙ্গলবার (৪ জুন) আকস্মিক বাঁধের বাইরে ভাঙন শুরু হয়। এতে সবার ঘরবাড়িসহ গাছপালা আসবাবপত্র যমুনা নদীতে মুহূর্তেই বিলীন হয়ে যায়।
চরপৌলি গ্রামের আব্দুল কাদের জিলানি বলেন, নদী ভাঙনে তিন দশকে চারবার বাপ-দাদার ভিটে হারিয়েছি। অসময়ে নদী ভাঙনে আমাদের ৬০ শতাংশ বাড়ি যমুনায় বিলীন হয়ে যায়। সহায় সম্বল হারিয়ে যমুনার দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকি। আবাসস্থল ছাড়া সন্তানদের কোথায় রাখবো সেটা নিয়ে চিন্তায় আছি।
লালবানু বেগম বলেন, যমুনার ভাঙনে বাড়িঘর সরাতে সরাতে জীবন শেষ হয়ে গেছে। দুই দিন ধরে আসবাবপত্র সরাচ্ছি। রান্নাও করতে পারিনি ঠিক মতো খেতেও পারিনি।
একই গ্রামের হুনুফা বেগম বলেন, চোখের সামনেই ঘরের টিন, চেয়ার টেবিল ও গাছপালা যমুনায় চলে গেলো। কিছুই রক্ষা করতে পারলাম না। আমরা ত্রাণ চাই না। আমরা বাঁধ চাই। নিজেদের ভিটায় থাকতে চাই।
স্থানীয় ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম বলেন, ৩০ বছর যাবত কাকুয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে যমুনার ভাঙন শুরু হয়। ইতিমধ্যে প্রায় দেড় কিলোমিটার চরপৌলি গ্রাম যমুনার ভাঙনে বিলীন হয়েছে। নদী ভাঙনে ৩৫ পরিবারের প্রায় ৩ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। বাকি বাঁধের কাজ শেষ করার জোর দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন বলেন, সদরের চরপৌলী, কালিহাতীর ভৈরববাড়ী ও আলীপুর এলাকার বাকি ১৬২৫ মিটার বাঁধের কাজের জন্য নতুন প্রকল্পের অনুমোদন হয়েছে। আগামী শুকনো মৌসুমে এটি বাস্তবায়ন করা হবে।
এ প্রসঙ্গে টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ছানোয়ার হোসেন বলেন, বিশ্ব ব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় আড়াইশ’ কোটি টাকা ব্যয়ে চরপৌলি এলাকায় চায়না বাঁধের মতো বাঁধ নির্মাণ করা হবে।
নয়াশতাব্দী/এনএইচ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ