ঢাকা, রোববার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১, ৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

টুং টাং শব্দে মুখরিত কামার পল্লী

প্রকাশনার সময়: ০৪ জুন ২০২৪, ১৯:৩০
ছবি- নয়া শতাব্দী

কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন লালমনিরহাটের বিভিন্ন হাট-বাজারের কামার শিল্পীরা। দিন যতই যাচ্ছে, ততই তাদের ব্যস্ততা বাড়ছে।

কোরবানি ঈদে গরু, ছাগল, মহিষ, উট কোরবানির পশু হিসেবে জবাই করা হয়। ঈদের দিন সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত পশু জবাই চলে। এসব পশুর গোশত কাটতে দা-বটি, ছুরি, ধামা, চাপাতি ইত্যাদি ধাতব হাতিয়ার অপরিহার্য। যেহেতু কোরবানির পশু কাটা-কুটিতে ধারালো দাঁ-বটি, চাপাতি ও ছুরি প্রয়োজন। তাই কামারেরা এখন এসব তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, কালীগঞ্জ উপজেলার চাপারহাট বাজারের কামার শিল্পীরা ব্যস্ত হয়ে পড়েছে দাঁ-বটি, ছুরি, চাপাতিসহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি তৈরিতে। কয়লার চুলায় দগদগে আগুনে গরম লোহার পিটাপিটিতে টুং টাং শব্দে মুখর হয়ে উঠেছে। দম ফেলারও যেন সময় নেই কর্মীদের। নাওয়া-খাওয়া ভুলে কাজ করছেন তারা। ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কাজ চলে তাদের। সারা বছর তেমন কাজ না থাকলেও কোরবানির মৌসুমে ঈদকে কেন্দ্র করে কয়েকগুণ ব্যস্ততা বেড়েছে কামারদের।

কয়েকজন কামারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পশুর চামড়া ছাড়ানো ছুরি ১২০ থেকে ২৪০ টাকা, দাঁ ৪৫০ থেকে ৮০০ টাকা, বটি ৩০০ থেকে ৫৫০, পশু জবাইয়ের ছুরি ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকা, চাপাতি ৬০০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে কেজি ওপরের নির্ভর করে দাম নির্ধারণ করা হয়। পশু জবাইয়ের সরঞ্জামাদি কিনতেও লোকজন ভিড় করছেন কামারের দোকানে। আগে যেসব দোকানে দু’জন করে শ্রমিক কাজ করতো, এখন সেসব দোকানে ৩-৫ জন করে কাজ করছেন।

কামারদের অভিযোগ, কোরবানির ঈদ উপলক্ষ্যে কয়লার দাম ও লোহার দাম বেড়ে গেছে। অপরদিকে ক্রেতাদের অভিযোগ দাঁ, চাপাতি ও ছুরির দাম বেশি নেয়া হচ্ছে। ছুরি শান দেয়ার জন্য ৩০ টাকা থেকে শুরু করে কাজের গুণাগুণের উপর ভিত্তি করে ১০০ টাকা পর্যন্ত নেয়া হচ্ছে।

চাপারহাট বাজারের জাহাঙ্গীর বলেন, সারা বছর তেমন কাজ থাকে না। কোরবানির ঈদের সময় আমাদের কাজের চাহিদা বেড়ে যায়। ঈদ চলে গেলে আমাদের বসে থাকতে হয়, কাজ থাকে না।

শিয়ালখোওয়া উজ্জল সরকার নামে এক কর্মকার বলেন, ঈদকে সামনে রেখে কাজের চাপ বেশি। কাজের চাপে কখন খাওয়ার সময় চলে যাচ্ছে আমরা টেরও পাই না। ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে বিক্রি তত বাড়ছে।

কামারের দোকানে চাপাতি বানাতে আসা সাইফুল বলেন, আর কয়দিন পর কোরবানি ঈদ। তাই চাপাতি বানাতে কামারের দোকানে আসছি। আগে যে চাপাতি কিনতাম ৪১০ থেকে ৫৪০ টাকা, সেই চাপাতি এখন নিজে লোহা দিয়ে ৬৫০ টাকা দিয়ে বানিয়ে নিলাম।

বটি বানাতে আসা সাইফুল মিয়া বলেন, আগের চেয়ে দাম অনেক বেশি। আগে যে বটি বানাতাম ২০০-৩০০ টাকা, সেই বটি এখন বানাতে হয় ৪০০-৫০০ টাকায়। তবে কেজি প্রতি নিচ্ছে ৭০০ টাকা।

নিজের লোহা দিয়ে চাপাতি বানাতে আসা সুজন মিয়া বলেন, আগের চেয়ে দাম বেশি চাচ্ছে। নিজে লোহা দিলাম তারপরও মজুরি চায় ৩০০-৪০০ টাকা। তারা বলছে কয়লার দাম নাকি বেশি।

নয়া শতাব্দী/এসআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ