সিরাজগঞ্জের তাড়াশের বিভিন্ন অঞ্চলে বোরো ধান কাটা প্রায় শেষ। এসময় কৃষক জমিতে স্বল্প পরিসরে বিভিন্ন জাতের বর্ষাকালীন বোনা ও রোপা আউশের ধানের আবাদ শুরু করবেন। কিন্তু এ আবাদের শুরুতেই তীব্র তাপ প্রবাহ এবং বৃষ্টি না হওয়ায় পানির অভাবে সে আবাদ এখন ব্যহৃত হচ্ছে। আর এতেই তাড়াশের বিস্তীর্ণ ফসলি মাঠ যেনো গোচারণ ভূমিতে পরিনত হয়েছে।
স্থানীয় কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলা এলাকায় চলতি বছর ৩ হাজার ৪৭৫ হেক্টর রোপা আউশ ও ২ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে বোনা আমন ধানের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বোরো ধান কাটা শেষ হলে চলনবিল অধ্যুষিত এলাকায় কৃষক বিভিন্ন জাতের বর্ষাকালীন বোনা ও রোপা আউশ ধানের আবাদ করে থাকেন।
এ দিকে চলনবিলের কৃষকেরা বৃষ্টির উপর নির্ভর করে জমি চাষ, বীজতলা তৈরী, বীজ বপন ও রোপনের কাজ করে থাকেন। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে চলমান তাপ প্রবাহ এবং বৃষ্টি না হওয়ায় পানির অভাব বর্ষাকালীন রোপা আউশ ধানের আবাদে বাঁধ সেধেছে। বিশেষ করে বৃষ্টির না হওয়ায় জমি গুলো এখন খাঁ খাঁ করছে।
তবে এতই কপাল খুলেছে গবাদি পশু পালনকারীদের। বিস্তীর্ণ অনাবাদী জমির মাঠ যেন গোচারণ ভূমি। যে মাঠের দিকেই তাকানো হোক না কেন, দেখা যাচ্ছে ঝাকে ঝাকে গবাদি পশু মাঠে বিচরণ করছে। এতে গবাদি পশুর খাবার খরচ অনেকটা কমে যাওয়ায় ছোট খামারিরা একটু স্বস্তিতে আছেন। যার ফলে প্রান্তিক খামারিরা আর্থিকভাবে লাভবান হবার স্বপ্ন দেখছেন।
তাড়াশ পৌর সদরের গবাতি পশু পালনকারী হরনাথ জানান, আমরা ছোট কৃষক কেনা খাবারে গরুপালন করা আমাদের জন্য কঠিন। তাই বেশিরভাগ সময়ই গরুকে মাঠের খাবার খাইয়ে পালন করি। এখনতো প্রায় সকল মাঠই আবাদ হয়নি। আর আমার মতো যারা বাহিরের খাবারে গরু পালন করেন তাদের জন্য খুবই ভালো হয়েছে। যেহেতু কোনো মাঠেই ফসল নাই তাই নিশ্চিন্তে গরু চড়াতে পারছি। গরুগুলোকে মাঠে ছেড়ে দিয়ে নিশ্চিন্তে গাছের ছায়ায় বিশ্রাম নিতে পারছি।
তাড়াশ সদর ইউনিয়ন এলাকার কৃষক সাইদুর জানান, বৃষ্টির অভাবে অনেক কৃষক বীজতলা তৈরি, জমি চাষ, বীজ বপন ও রোপনের মতো কাজ করতে পারছেন না। আর বোরো আবাদের পর বেশিরভাগ কৃষক তাদের সেচযন্ত্র বাড়িতে নিয়ে গেছেন। এতে সেচের পানির অভাবে বর্ষাকালীন বোনা রোপা আউশ ধানের আবাদ ব্যহৃত হবার পাশাপাশি আগাম আবাদে পিছিয়ে পড়ছে।
এ প্রসঙ্গে তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, চলনবিল এলাকায় বোরো ধান কাটা প্রায় শেষ। বর্ষাকালীন রোপা ও আউস ধানের মৌসুম এখনও পুরোদমে শুরু হয়নি। আর এ সময়টিতে বিস্তীর্ণ অনাবাদী জমির মাঠ গোচারণ ভূমি হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। চলমান তাপ প্রবাহে কৃষক ও কৃষি শ্রমিকদের নিজেকে রক্ষা করে মাঠে কাজ করার পরামর্শ দেন তিনি।
নয়াশতাব্দী/এনএইচ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ