ঢাকা, রোববার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

কাউখালীর জোলাগাতি মাদরাসা খোলা আকাশের নিচে পাঠদান

প্রকাশনার সময়: ০৩ জুন ২০২৪, ১৫:৫০

পিরোজপরের কাউখালী উপজেলায় শিয়ালকাঠী ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী জোলাগাতী ইসলামিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদরাসার টিনশেড বিল্ডিং এর ছয়টি শ্রেণিকক্ষ অধ্যাক্ষের কক্ষ, বঙ্গবন্ধু কর্ণার ও একটি কাঠের ঘরের শ্রেণিকক্ষ, কম্পিউটার, রুমের আসবাবপত্র সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শ্রেণিকক্ষের লেখাপড়ার কার্যক্রম চালিয়ে নিতে এখন নিতে হচ্ছে খোলা আকাশের নিচে ক্লাশ।

১৯৬৪ সালে প্রতিষ্ঠিত পুরাতন মাদরাসাটিতে নূরানী বা শিশু শ্রেনী থেকে ফাজিল (ডিগ্রি) পর্যন্ত পার্শ্ববর্তী দুটি সীমান্তবর্তী উপজেলা ভান্ডারিয়া, রাজাপুর সহ শিয়ালকাটি ইউনিয়নের ৯টি গ্রামের ৭০০ ছাত্র-ছাত্রী নিয়মিত পাঠ দান করে আসছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাদরাসায় পুরানো আমলের লম্বা একটি মাত্র টিনের ঘর, ২ রুম বিশিষ্ট একটি পাকা ঘর, ৫ পাঁচ কক্ষ বিশিষ্ট একটি বহুতল ভবনের কাজ চলছিলো। কিন্তু ঘূর্ণিঝড়ের কারণে এসব ঘরের টিনের ছাউনি উড়ে যায়। টিনসেট লম্বা যে শ্রেণিকক্ষটিতে নিয়মিত ক্লাস হতো সেটিতে গাছ পড়ে সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ে মাদরাসাটিতে প্রায় অর্ধ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

মাদরাসার ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাফিসা আক্তার বলে, ঘূর্ণিঝড় আমাদের মাদরাসা উড়িয়ে নিয়ে গেছে। সামনে আমাদের পরীক্ষা। ক্লাস না করলে আমরা পিছিয়ে পড়বো। তাই রোদের মধ্যে খোলা আকাশের নিচে আমাদের ক্লাস করানো হচ্ছে। অতিদ্রুত আমরা মাদরাসার ভবন চাই।

মো তানভীর নামের আরেক শিক্ষার্থী বলে, এখনই ভবন নির্মাণের উদ্যোগ না নিলে আমাদের ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে পড়বে। খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করতে অসুবিধা হচ্ছে। রোদ আর গরমে বসে থাকা যায় না। এ বিষয়ে এমপি মহোদয়ের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করছি।

অভিভাবক মো আবুল বাশার জানান, ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে পুরো মাদরাসাটি লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। সামনে পরীক্ষা। তাই এখন শিক্ষার্থীদের খোলা আকাশের নিচে লেখাপড়া করতে হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ের কোন সিগনাল পেলে গ্রামবাসী গবাদিপশু নিয়ে মাদরাসার পাকা বিল্ডিং এসে আশ্রয় নেয়। তাই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করছি এই মাদরাসায় একটি সাইক্লোন সেন্টার নির্মাণ করা হোক।

শিয়ালকাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী সিদ্দিকুর রহমান জানান, এটা একটি এই অঞ্চলের পুরাতন মাদরাসা আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করছি বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখার জন্য।

মাদরাসার অধ্যক্ষ মো. আব্দুর রহিম বলেন, শিক্ষার্থীরা লেখাপড়ায় যেন পিছিয়ে না পারে তাই বাধ্য হয়ে খোলা আকাশের নিচে, ভেঙে পড়া জরাজীর্ণ ভবনে, মসজিদের বারান্দায় ও এতিমখানায় ক্লাস নিতে হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে সহযোগিতা চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। যেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ভালোভাবে পাঠদানে অংশ নিতে পারে।

এ বিষয়ে মাদরাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এডভোকেট হুমায়ুন কবির তালুকদার রাজু বলেন, ঐতিহ্যবাহী এই মাদরাসাটির আধুনিক ভবন সহ সকল প্রকার সুযোগ সুবিধা করে দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা যাচ্ছে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সজল মোল্লা বলেন, শিক্ষা আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। ক্ষতিগ্রস্ত মাদরাসটি পরিদর্শন করেছি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিষয়টি দেখা হবে।

নয়াশতাব্দী/এনএইচ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ