ঢাকা, মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারি ২০২৫, ২৩ পৌষ ১৪৩১, ৬ রজব ১৪৪৬

আকস্মিক বন্যায় বিপর্যস্ত সিলেট

প্রকাশনার সময়: ৩১ মে ২০২৪, ০৭:৫৯

সিলেটে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। সুরমা-কুশিয়ারা নদীর অন্তত ১৫ স্থানে ডাইক (নদী প্রতিরক্ষা বাঁধ) ভেঙে প্রবল বেগে পানি ঢুকছে। বিভিন্ন স্থানে অন্তত দুই কিলোমিটার এলাকা দিয়ে নদীর পানি উপচে লোকালয়ে প্রবেশ করছে। এতে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট এলাকার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি এরই মধ্যে জরুরি বৈঠক করেছে

পরিস্থিতি বিবেচনায় সিলেটের বিভিন্ন এলাকার পর্যটনস্পট বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সেইসঙ্গে স্থানীয়দের সতর্কতা অবলম্বন করে চলতে বলা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে অবিরাম বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢলে সিলেটের সুরমা, কুশিয়ারা ও সারি নদীর পানি মঙ্গলবার থেকেই ছিল বিপৎসীমার ওপরে। বুধবার রাতে ভারতের মেঘালয় থেকে আরও ঢল নামতে শুরু করেছে। বুধবার রাতে সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার অন্তত ৪-৫টি স্থানে কুশিয়ারা নদীর ডাইক ভেঙে প্রবল বেগে লোকালয়ে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। তা ছাড়াও অন্তত এক কিলোমিটার এলাকায় নদী উপচে পানি প্রবেশ করছে। ওই উপজেলার সুরমা নদীর বেড়ি বাঁধগুলোও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। যে কোনো সময় ডাইক ভেঙে পানি ঢুকতে পারে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, কুশিয়ারা নদীর অন্তত ১৫ স্থানে নদী প্রতিরক্ষা বাঁধ (ডাইক) ভেঙে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করছে। তাছাড়া অন্তত দুই কিলোমিটার এলাকায় সুরমা-কুশিয়ারা নদীর পানি বাঁধ উপচে লোকালয়ে প্রবেশ করছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদের টিম কাজ করছে। কিন্তু প্রবল স্রোতের কারণে ভাঙা ডাইক মেরামত করা সম্ভব হচ্ছে না। তিনি বলেন, কুশিয়ারার বাঁধ ভেঙে পানি প্রবেশ করলেও সুরমায় এখন পর্যন্ত কোথাও ভাঙনের খবর পাওয়া যায়নি। তবে বিভিন্ন স্থানে নদী উপচে পানি প্রবেশ করছে।

প্রবল বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে আকস্মিক বন্যায় প্লাবিত হয়েছে সিলেটের গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট ও জকিগঞ্জের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। পানিবন্দী হয়েছেন অন্তত তিন লক্ষাধিক মানুষ। বন্যায় গোয়াইনঘাটে ৮০ শতাংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ২৫০টির বেশী পরিবার আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।বন্যায় প্লাবিত হয়েছে সিলেট-তামাবিল মহাসড়কসহ এ চার উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ অনেক সড়ক। এতে ব্যাহত হচ্ছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। যান চলাচল বন্ধ রয়েছে বিভিন্ন সড়কে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্যমতে, গতকাল সকাল ৯টায় সুরমা নদী কানাইঘাট উপজেলা পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৬৬ সেন্টিমিটার ওপরে ও কুশিয়ারা নদী জকিগঞ্জের অমলসীদ পয়েন্টে ২০২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলায় সারি নদী বিপৎসীমার ৯৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে এবং গোয়াইনঘাট উপজেলায় সারিগোয়াইন নদী ৬৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বুধরাতে সিলেটের গোয়াইনঘাটের জাফলংয়ে ৩৫৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে।

একইসময়ে জৈন্তাপুরের লালাখালে রেকর্ড হয়েছে ১৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত। ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, গত চব্বিশ ঘণ্টায় ভারতের মেঘালয় রাজ্যের চেরাপুঞ্জিতে ৬৩৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। সিলেটে বৃষ্টিপাত ও ভারতের বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্ট পাহাড়ি ঢলেই সিলেটের নদ-নদীর পানি দ্রুত বেড়ে প্লাবিত হয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা। জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী জানিয়েছেন, উপজেলার উঁচু এলাকা ছাড়া সব প্লাবিত, কোথাও কোথাও মানুষের বাড়ির চালা পর্যন্ত পানিতে ডুবে গেছে। রাতে প্রবল স্রোতে উদ্ধার অভিযান ভালোভাবে পরিচালনা করা না গেলেও ভোর ৪টা থেকে পুরোদমে উদ্ধার অভিযান চলছে। উপজেলার ৪৬টি আশ্রয়কেন্দ্র উদ্বোধন করা হয়েছে।

গোয়াইনঘাটের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম জানান, বন্যায় উপজেলার ৮০ ভাগ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী হয়েছেন লক্ষাধিক মানুষ। পর্যটন এলাকার পর্যটকবাহী নৌকা নিয়ে উদ্ধার অভিযান চলছে। উপজেলার ৫৬টি আশ্রয়কেন্দ্রে অন্তত ২৫০ পরিবার আশ্রয় নিয়েছেন। অনেক মানুষ পার্শ্ববর্তী উঁচু এলাকায় আশ্রয় নিয়েছেন। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুনজিত কুমার চন্দ বলেন, পরিস্থিতি বিবেচনায় উপজেলার সব পর্যটন স্পট বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তা ছাড়া উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।

সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোবারক হোসাইন বলেন, জেলা ও উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির জন্য কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি এরই মধ্যে বৈঠক করেছে। দ্রুত উদ্ধার অভিযান চলছে। সেনাবাহিনীও এরই মধ্যে রেকি করে গেছে। প্রয়োজনে তারাও উদ্ধারাভিযান ও ত্রাণ বিতরণে যোগ দেবে।

সুনামগঞ্জে বৃষ্টি ও উজানের ঢলে সুরমা নদীসহ বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বাড়ছে। তবে বড় কোনো বন্যার আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। সুনামগঞ্জের পাউবোর তথ্যমতে, সুনামগঞ্জ পৌর শহরের সুরমা নদীর ষোলঘর পয়েন্টে গতকাল বিকেল ৩টায় সুরমা নদীর পানির উচ্চতা ছিল ৬ দশমিক ৯৮ সেন্টিমিটার। বুধবার একই সময়ে পানির উচ্চতা ছিল ৬ দশমিক ২৮ সেন্টিমিটার। এক দিনে পানির উচ্চতা বেড়েছে দশমিক ৭০ সেন্টিমিটার।

এখানে সুরমা নদীর পানির বিপৎসীমা ৭ দশমিক ৮০ মিটার। সে হিসাবে নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার নিচে আছে। সুনামগঞ্জে বৃষ্টি হয়েছে ৩৯ মিলিমিটার। একই সময়ে সুনামগঞ্জের উজানে ভারতের চেরাপুঞ্জিতেও বৃষ্টি হচ্ছে। এ কারণেই উজান থেকে পাহাড়ি ঢল নামছে। সুনামগঞ্জে বৃষ্টি কম হলেও উজানের নামা ঢলে নদী ও হাওরে পানি বাড়ছে। সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার জাদুকাটা, পাটলাই, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার রক্তি, বৌলাই, ছাতকের চেলা, সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার চলতি, জগন্নাথপুর উপজেলার কুশিয়ারা নদীর পানি বাড়ছে। তবে হাওরে এখনো পানি কম আছে। সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার সুরমা নদীর তীরের ইব্রাহিমপুর গ্রামের বাসিন্দা আকরাম উদ্দিন বলেন, নদীতে পানি বাড়ছে। সিলেটের কোথাও কোথাও বন্যা হওয়ায় সুনামগঞ্জেও বন্যার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় লোকজন।

সুনামগঞ্জ পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, বৃষ্টি ও উজান থেকে নামা পাহাড়ি ঢলে সুরমা নদীর পানি বাড়ছে। উজানের ঢল নামা অব্যাহত থাকলে পানি বাড়া অব্যাহত থাকবে। এতে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। তবে সুনামগঞ্জে এখনো বন্যার কোনো আশঙ্কা তারা দেখছেন না। গতকাল সকাল ৬টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত জেলায় ৩৬ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে বলে সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মোহাম্মদ সজিব হোসেন জানান। সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল সকাল ৯টায় সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলায় ‘সারি নদীর’ পানি একদিনে ২০২ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৯৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

সুরমা নদীর’ পানি কানাইঘাট উপজেলা পয়েন্টে ১৯৬ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ১৬৬ সেন্টিমিটার ওপরে এবং ‘কুশিয়ারা নদীর’ পানি জকিগঞ্জের অমলসীদ পয়েন্টে ২২০ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ২০২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পাঁচ উপজেলার মধ্যে গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর ও কানাইঘাট উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি সবচেয়ে ‘খারাপ’ বলে সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ মোবারক হোসাইন জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘সেনাবাহিনী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে; প্রয়োজনে তারাও উদ্ধার অভিযানে যোগ দেবেন। জেলা ও উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির বৈঠক হয়েছে। উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে কন্ট্রোল-রুম খোলা হয়েছে। বন্যা কবলিত মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা হচ্ছে। বর্তমানে গোয়াইনঘাটে খাবার বিতরণ করা হচ্ছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে সবার কাছে ত্রাণ পৌঁছে দেয়া হবে।’ সিলেট জেলা প্রশাসন থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, এরই মধ্যে বন্যা কবলিত পাঁচ উপজেলায় ১০০০ বস্তা শুকনো খাবার ও ৭৫ টন চাল বিতরণ করা হয়েছে। ২ লাখ ৫০ হাজার টাকার ত্রাণসামগ্রী উপজেলাগুলোতে বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে।

বিকালে গোয়াইনঘাট উপজেলা সদরের বাসিন্দা ও বাজারের ব্যবসায়ী সোহাগ চক্রবর্তী বলেন, ‘বুধবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে বাসাতে পানি প্রবেশ করেছিল। রাতে বাসার ভেতরে হাঁটু সমান পানি হয়েছিল; খুব কষ্টে রাত কাটিয়েছি। গতকাল বিকেল ৩টার দিকে বাসার পানি কমেছে। তবে বাজারের পানি এখনো পুরো নামেনি; আমার দোকানেপানি ছিল।’

গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তৌহিদুল ইসলাম বলছেন, ‘উপজেলার ৭৫ ভাগ এলাকা প্লাবিত হয়ে লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। জাফলং-বিছনাকান্দিসহ সব পর্যটন এলাকার পর্যটকবাহী নৌকা নিয়ে উদ্ধার অভিযান চলছে। এ উপজেলার ৫৬টি আশ্রয়কেন্দ্রে বুধবার রাতেই ১৬৭টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছেন।

গতকাল সকালে থেকে যা ২৫০ এ ছাড়িয়েছে। অনেক মানুষ নিজের বাড়িঘর ছেড়ে পাশের উঁচু বাড়িঘরে আশ্রয় নিয়েছেন।’ জৈন্তাপুর নিজপাট এলাকার বাসিন্দা সুভাষ দাশ বাবলু বলেন, ‘গত রাতে হঠাৎ করে উজানের ঢল নেমে আমাদের নিজপাট ইউনিয়ন প্লাবিত করে দেয়। এতে পুরো এলাকার মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। মানুষজন নৌকার জন্য বিভিন্ন জায়গায় ছোটাছুটি করতে শুরু করে।’ নিজপাট ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মঞ্জুর এলাহি সম্রাট বলেন, ‘হিদেরখাল এলাকায় একটি বাঁধের কারণে আমাদের এলাকা প্লাবিত হয়। এই বাঁধ দেয়ার পর থেকেই আমাদের এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।’

জৈন্তাপুর উপজেলায় বন্যা কবলিতদের মাঝে এরই মধ্যে ত্রাণ বিরতণ করা হয়েছে বলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মে সালিক রুমাইয়া জানিয়েছেন।

তিনি বলছিলেন, ‘পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিতে উপজেলার সবকটি ইউনিয়নে বন্যা হয়েছে। তবে সকালের তুলনায় দুপুরে পানি একটু কমেছে। আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি এবং নিম্নাঞ্চলের জনসাধারণ ও গবাদিপশু নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে। ‘উপজেলায় ৪৮টি আশ্রয়কেন্দ্র খেলা হয়েছে; উপজেলার সব স্কুল-কলেজও আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে খোলা রাখা হয়েছে।’ কানাইঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা নাসরিন বলেন, ‘উপজেলা সদর, পৌরসভা ও ইউনিয়নগুলোতে বন্যা ছড়িয়ে পড়েছে। মানুষজন আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছেন। বন্যা দুর্গতদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ চলছে। প্রশাসন সর্তক অবস্থানে রয়েছে।’

সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মোহাম্মদ সজিব হোসেন জানান, মে মাসের ২৯ দিনে সিলেটে ৭০৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। মে মাসে সিলেটে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ৫৬৯ দশমিক ৬ মিলিমিটার থেকে ৫৭০ মিলিমিটার। ২০২২ সালে মে মাসে সিলেটে বৃষ্টির পরিমাণ ছিল ৮৩৯ মিলিমিটার। ২০২৩ সালে মে মাসে ৩৩০ দশমিক ০ মিলিমিটার এবং চলতি বছরের মে মাসে ৭০৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। এর আগে গত ২৪ ঘণ্টায় সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সিলেটে ১৯ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আগামী কয়েকদিন সিলেটে অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারী ধরনের ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান সজিব। অবিরাম বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলে সিলেটের কোম্পানিগঞ্জ উপজেলার ধলাই নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে কোম্পানিগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন। কোম্পানিগঞ্জ উপজেলা পর্যটন উন্নয়ন কমিটির আহ্বায়ক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুনজিত কুমার চন্দ স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এতদ্বারা সম্মানিত পর্যটকসহ সংশ্লিষ্ট সবার অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে, অবিরাম বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলের কারণে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ধলাই নদীর পানি অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং পর্যটন কেন্দ্রসমূহ পানিতে নিমজ্জিত হওয়ায় বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সাদাপাথর পর্যটন ঘাটসহ সব পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করা হলো। জৈন্তাপুর নিজপাট এলাকার বাসিন্দা সুভাষ দাশ বাবলু বলেন, আমাদের ইউনিয়নে গতরাতে হঠাৎ করে উজানের ঢল নেমে পুরো ইউনিয়ন প্লাবিত হয়ে গেছে। এতে পুরো এলাকার মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। মানুষজন নৌকার জন্য বিভিন্ন জায়গায় ছোটাছুটি করছেন।

নয়াশতাব্দী/জিএস

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ