ঢাকা, রোববার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

সিলেটে বন্যার শঙ্কা, বিপদসীমার ওপরে ৫ নদীর পানি

প্রকাশনার সময়: ৩০ মে ২০২৪, ০৯:০৪ | আপডেট: ৩০ মে ২০২৪, ১১:৪৩

ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে টানা দুই দিন ঝড়বৃষ্টির পর বুধবারও (২৯ মে) সিলেটে বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। সঙ্গে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেটে বড় বন্যার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

বৃষ্টিপাত কিছুটা কমলেও পাহাড়ি ঢলের কারণে নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধির মাত্রা অব্যাহত রয়েছে। নতুন করে পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে জৈন্তাপুর, কানাঘাট, কোম্পানীগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা। তলিয়ে গেছে গ্রামীণ রাস্তাঘাট ও বাড়িঘর।

বুধবার (২৯ মে) সন্ধ্যা ৬টায় বিপদসীমা ছাড়িয়ে যায় পাঁচটি নদীর পানি। এর আগে দুপুর ১২টা পর্যন্ত তিনটি নদীর পানি ছিল বিপদসীমার ওপরে। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

এদিকে, প্রবল স্রোতের কারণে বিভিন্ন স্থানে সুরমা নদীর ডাইকে (নদী প্রতিরক্ষা বাঁধ) ভাঙনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। যেকোনো সময় বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করতে পারে। এতে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন সুরমা নদীর তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দারা।

উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঝুঁকিপূর্ণ ডাইক পরিদর্শন করা হয়েছে। ডাইক ভেঙে যাতে পানি প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সংশ্লিষ্ট উপজেলাগুলোর সবকয়টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের তথ্যমতে, বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ১২০ সেন্টিমিটার, কুশিয়ারা নদীর পানি জকিগঞ্জের অমলশীদ পয়েন্টে ১২০ সেন্টিমিটার, সারি নদীর পানি জৈন্তাপুরের সারিঘাট পয়েন্টে ৯১ সেন্টিমিটার, সারিগোয়াইন নদীর পানি গোয়াইনঘাট পয়েন্টে ১২ সেন্টিমিটার ও ডাউকি নদীর পানি জাফলংয়ে ৪১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

এর আগে বুধবার দুপুর ১২টায় সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ৮৫ সেন্টিমিটার, কুশিয়ারা নদীর পানি জকিগঞ্জের অমলশীদ পয়েন্টে ৩৭ সেন্টিমিটার, সারি নদীর পানি জৈন্তাপুরের সারিঘাট পয়েন্টে ৫৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

এদিকে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় সীমান্তবর্তী কানাইঘাট উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সুরমা নদীর ডাইকে ভাঙনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন স্থানে নদীর পানি ঢুকে ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এতে দোকানপাট, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন বিভিন্ন এলাকার মানুষ।

কানাইঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা নাসরিন বলেন, উজান থেকে আসা আকস্মিক পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টিপাতের কারনে সুরমা ও লোভা নদীর পানি বেড়ে গিয়ে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক পরিস্থিতি মনিটরিং করা হচ্ছে।

ইউএনও আরও বলেন, সুরমা ডাইকের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ভেঙে পানি যাতে লোকালয়ে প্রবেশ করতে না পারে, সেজন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিলে তা মোকাবিলায় উপজেলার সবকয়টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

জৈন্তাপুরের ইউএনও উম্মে সালিক রুমাইয়া বলেন, পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। নিম্নাঞ্চলের জনসাধারণকে নিরাপদ আশ্রয়ে গবাদি পশু সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে।

নয়াশতাব্দী/জিএস

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ