ঢাকা, রবিবার, ৫ জানুয়ারি ২০২৫, ২১ পৌষ ১৪৩১, ৪ রজব ১৪৪৬

ডিমলায় হাত বাড়ালেই পাওয়া যাচ্ছে মাদক

প্রকাশনার সময়: ২৭ মে ২০২৪, ১৯:১৩

উত্তরের সীমান্ত ঘেষা উপজেলা নীলফামারীর ডিমলায় গড়ে উঠেছে ভয়াবহ মাদকের অভয়ারাণ্য। হাত বাড়ালেই পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন জাত প্রজাতের মাদক। এতে দিন দিন ধ্বংসের পথে যাচ্ছে শিশু-কিশোররা। চুরি ছিনতাই, ধর্ষণ, হত্যাসহ বিভিন্ন অপকর্ম বেড়েই চলছে এই উপজেলায়।

প্রতিদিন সকাল থেকে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত ডিমলা উপজেলা সদরের বিশেষ করে থানার আশপাশ এলাকার শীবমন্দির পাড়া, পোষ্ট অফিস মোড়, টিএন্ডটি রোড, মেডিকেল মোড়সহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এমন কি গ্রাম অঞ্চলেও প্রকাশ্যে মাদক কারবাবিরা হিরোইন, ইয়াবা, ফেন্সিডিল, গাজাসহ বিভিন্ন নেশাজাত দ্রব্যের রমরমা মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন নির্বিঘ্নে। হাত বাড়ালেই পাওয়া যাচ্ছে সহজলভ্য মাদক। যার কারণে বিশেষ করে ১২ বছর থেকে ১৬ বছর বয়সী শিশু-কিশোররা মাদক সেবনে আসক্ত হয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠছে। বাড়িতে অভিভাবকদের সাথে মাদকের টাকা না পেয়ে দুর্ব্যবহার করছে ও মাদকের টাকা জোগাতে সমাজ বিরোধী বিভিন্ন অপকর্মে জড়িয়ে পড়ছে খুব সহজেই। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী থানা পুলিশ কতৃক ভয়াবহ নিষিদ্ধ মাদক নিয়ন্ত্রণ ও দমনে তেমন কোন ভূমিকা না থাকায় ভুক্তভোগী অভিভাবকরা তাদের সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে চরম হতাশায় ভুগছেন।

ডিমলা উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের অন্যতম সদস্য আবু সায়েম সরকার বলেন, ডিমলা উপজেলায় মাদকের করাল গ্রাসে যুবসমাজ ও শিশুকিশোর ধ্বংসের দারপ্রান্তে। অবৈধ এই মাদকের ছড়াছড়ি উপজেলাজুড়ে হলেও ডিমলা সদরেই বেশি। আমি এই মাদকের বিষয়ে ডিমলা থানার ওসির সাথে কথা বলেছি। কথা বলে কাজ হয় হয় না এমন অবস্থা। কমে আবার বাড়ে।

তিনি আরও বলেন, ডিমলা পরপর দুটি ধর্ষণের ঘটনা, চুরি ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধের সাথে এই মাদক সেবীরাই জড়িত। তাদের আইনের আওতায় এনে কঠিন শাস্তির দাবি করছি। এ বিষয়ে শুধু থানা পুলিশ নয় সাংবাদিকদেরও ভূমিকা রাখতে হবে বলে আমি মনে করি।

ডিমলা থানা সংলগ্ন শীবমন্দির পাড়ার বাসিন্দা (সরকারি চাকরিজীবী) নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমরা এই গ্রামে বসবাস করি। বেশ কিছুদিন থেকে দেখছি প্রতিদিন ২৪ ঘণ্টাই এখানে মাদক বেচাকেনা হয়। আমরা বিভিন্ন সময় প্রতিবাদ করলে মাদক কারবারিরা বলে, আমরা ডিমলা থানা পুলিশকে মাসিক মাসোয়ারা দিয়ে ব্যবসা করি। এতে কার কি সমস্যা তা আমাদের দেখার বিষয় নয়।

তিনি আরও বলেন, এই গ্রামে একাধিক ডিমলা থানার এসআই কনস্টেবল ভাড়া থাকলেও প্রতিদিন সিনেমা হলের টিকিটের মত প্রকাশ্যে বিক্রয় করা হচ্ছে এই ভয়াবহ মাদক। পুলিশ মাঝে মধ্যে তাদের ধরতে আসলেও মাদক বিক্রেতারা বলেন, আমরা থানায় মাসিক মাসোয়ারা দিয়ে ব্যবসা করি। আপনার তবুও আমাদের ডিস্টার্ব করেন কেন। তবে থানার কাকে মাসিক মাসোয়ারা দেন এ বিষয়ে স্পষ্ট কোন ব্যক্তি বা কর্মকর্তার নাম বলেনি।

ডিমলা থানার (অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দেবাশীষ রায়ের ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে (ওসি তদন্ত) আব্দুর রহিম বলেন, মাদক কারবারিদের হতে থানা পুলিশের মাসিক মাসোয়ারার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, প্রতিদিন থানা পুলিশের মাদকবিরোধী অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এরমধ্যে মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করে নিয়মিত মামলা রুজু করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়। থানা এলাকায় রমরমা মাদক ব্যবসার বিষয়ে তিনি কোন মন্তব্য করেননি।

নয়া শতাব্দী/এসআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ