সাতক্ষীরা উপকূলে ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে ঘূর্ণিঝড় রেমাল। বিদ্যুতের খুঁটি উপরে তার ছিঁড়ে এবং সঞ্চালন লাইনে গাছপালা উপড়ে পড়ে জেলার ছয় লাখের বেশি মানুষ বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। বিদ্যুৎ না থাকায় মোবাইল নেটওয়ার্কেও সমস্যা দেখা দিচ্ছে।
জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে রোববার (২৬ মে) সকাল থেকেই জেলার অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘ্ন ঘটে। শ্যামনগর, কালিগঞ্জ, ও আশাশুনির প্রায় অধিকাংশ এলাকায় সারা দিনই বিদ্যুৎ ছিল না। অন্যান্য এলাকাতেও বিদ্যুৎ ছিল আসা–যাওয়ার মাঝে। তবে জেলা সদরের পৌর শহরে রোববার রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রেখেছিলো। তবে ঝড়ে সঞ্চালন লাইনে গাছপালা উপড়ে পড়ায় রাত ১১টার পর পুরোপুরি বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।
বুড়িগোয়ালীনী এলাকার আব্দুল হালিম বলেন, ‘আমার ফোনে চার্জ শেষ হয়ে গেছে আছে। ফোন বন্ধ হয়ে যাবে। অনলাইনে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করা যাবে না।’
উপকূলের জান্নাতুল নাইম বলেন, ‘নেটওয়ার্ক সমস্যা ও মোবাইলে চার্জ না থাকায় সকলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিনা।’
সাতক্ষীরা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার জিয়াউর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমালে জেলার ৬ লাখ ২৫ হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ঝড়ে পল্লী বিদ্যুতের মূল সঞ্চালন লাইনের বিভিন্ন স্থানে গাছপালা উপড়ে পড়ায় বিদ্যুৎ–সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিলো। ঝড়ে বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়েছে। এতে কমবেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। দুর্যোগ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা কাজ শুরু করেছি। ইতোমধ্যে অনেক লাইন বিদ্যুৎ–সংযোগ পুনরায় চালু করেছি । ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনই জানানো যাচ্ছে না। পরে বলতে পারবো কি পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
সাতক্ষীরা বিদ্যুৎ সরবরাহ ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির সহকারী প্রকৌশলী মতিয়ার রহমান বলেন, আমাদের ৫৬ হাজার গ্রাহক। ঘূর্ণিঝড় রেমালে মূল সঞ্চালন লাইনের বিভিন্ন স্থানে গাছপালা উপড়ে পড়ায় এবং কয়েকটি খুঁটি ভেঙ্গে পড়ায় রোববার রাত ১১টার পর থেকে বিদ্যুৎ–সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিলো। ঝড় থামার পরপরই বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে আমরা কাজ শুরু করছি। ১১টি ফিডারের মধ্যে আটটি চালু করতে পেরেছি। ৫৬ হাজার গ্রাহকের মধ্যে ৪০ হাজার গ্রাহকের বিদ্যুৎ নিশ্চিত করতে পেরেছি। বাকিদের বিদ্যুৎ সরবরাহ আমরা কাজ করছে যাচ্ছি। ঝড়ে কি পরিমানে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এখনই বলা হচ্ছে না। ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ আমরা কাজ করছি।
নয়াশতাব্দী/এনএইচ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ