ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রেমালের ব্যাপক তান্ডব, এবারও বুক চিতিয়ে লড়েছে সুন্দরবন

প্রকাশনার সময়: ২৭ মে ২০২৪, ১২:১৯

বঙ্গোপসাগরে বিভিন্ন সময়ে জন্ম নেয়া ঘূর্ণিঝড়ে স্থলভাগের ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি ঠেকাতে বরাবরই ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছে সুন্দরবন। সাতক্ষীরার উপকূল এলাকায় ব্যাপক তান্ডব চালিয়েছে ঘূর্ণিঝড় রেমাল। এদিকে, এবারও ঢাল হয়ে খুলনা অঞ্চলকে আরও ভয়ানক ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করেছে সুন্দরবন। বাতাসের গতিবেগ অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছে এই বন।

রোববার (২৬ মে) রাতে সাতক্ষীরার বুড়িগোয়ালীনি এলাকায় অবস্থান করা সাংবাদিক আসাদুজ্জামান আসাদ জানান, ঘূর্ণিঝড় রেমাল জেলাজুড়ে ব্যাপক তান্ডব চালিয়েছে। অনেক গাছপালা উপড়ে গেছে। জোয়ারে মাছের ঘের ভেসে গেছে। তবে সুন্দরবনের এবারও রক্ষা করেছে। বাতাসের গতিবেগ অনেক কমিয়ে দিয়েছে।

আশাশুনির প্রতাপনগর এলাকার সাইদুল ইসলাম জানান, বর্তমানে প্রতাপনগর অঞ্চলে ঝোড়ো হাওযার গতিবেগ কমেছে। ঘূর্ণিঝড় রেমাল দুর্বল হয়েছে কিছুটা।

স্থানীয় মুনজিতপুর এলাকার আমিনুর রহমান আলম বলেন, রেমালের কবল থেকে সাতক্ষীরার উপকূল এখন প্রায় বিপদমুক্ত বলা যায়। শুধু বেড়িবাঁধের দিকে খেয়াল রাখতে হবে যেন নদীর পানি ভেতরে প্রবেশ করতে না পারে।

তিনি আরও জানান, সাতক্ষীরা শহর এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় ঝোড়ো বাতাসের গতিবেগ মাঝে মাঝে এতো বেশি যে, অফিস থেকে বাইক চালিয়ে বাসা পর্যন্ত আসা খুবই কষ্টকর ছিল। মাঝে মাঝে মনে হয়েছে, এই বুঝি বাইকসহ উল্টে গেলাম। যদিও বাইক ১০ কিলোমিটারের নিচে ছিল। বাসায় আসার পথে দেখলাম, অধিকাংশ দোকানের সাইনবোর্ড ছিঁড়ে পড়ে গেছে। কোনোটা ঝুলে আছে।

কালিগঞ্জের ওলিউর রহমান বলেন, আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহর রহমতে আবারও সুন্দরবন বুক চিতিয়ে রক্ষা করলো আমাদের সাতক্ষীরা উপকূলকে।

সাতক্ষীরা সদরের মমিনুর রহমান সবুজ বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমালের তান্ডবে দক্ষিনাঞ্চলের অন্যতম বাণিজ্যিক এলাকা সাতক্ষীরা সদরের ঝাউডাঙ্গা বাজারের কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ।

শ্যামনগরের সুলতান শাহজাহান বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমাল উপকূলে ব্যাপক তান্ডব চালিয়েছে। অনেক গাছগাছালি উপড়ে চলাচলের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। এখনো গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টির পাশাপাশি ঝোড়ো হাওযা বয়ে চলছে। নদ-নদীগুলো এখনও উত্তাল। জোয়ারের পানি এখনও কমেনি।

তিনি আরও বলেন, বৃষ্টিতে বাঁধের মাটি নরম হয়ে গেছে। ভাটিতে পানি কমার কথা থাকলেও পানি কমছে না। এতে অনেক এলাকায বাঁধে ফাটল দেখা দিতে পারে। ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সেটা জানা যায়নি।

সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি সাতক্ষীরা অতিক্রম করেছে। রাত ১টায় এখানে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ৭২ কিলোমিটার। সন্ধ্যা থেকে রাত ৩টা পর্যন্ত এই জেলায় ৬৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মতিউর রহমান সিদ্দিকী জানান, গভীর রাতে সুন্দরবন সংলগ্ন মুন্সিগঞ্জ-শ্যামনগর সড়কের উপর ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে অনেক গাছ-গাছালি ভেঙে পড়ে। ফলে কিছু সময়ের জন্য যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। প্রচণ্ড ঝড়-বৃষ্টির মধ্যে শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তার নেতৃত্বে পুলিশ দা-কুড়াল ও করাত দিয়ে গাছ কেটে রাস্তা যানবাহন চলাচলের উপযুক্ত করে তোলে।

নয়াশতাব্দী/এনএইচ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ