বৃহস্পতিবার, ০৪ জুলাই ২০২৪, ২০ আষাঢ় ১৪৩১

নাটোরে বড়শি দিয়ে মাছ ধরার উৎসব

প্রকাশনার সময়: ২৪ মে ২০২৪, ১৮:১৫

নাটোরের বাগাতিপাড়ায় পুকুরে টিকিট কেটে বড়শি দিয়ে দিনব্যাপি মাছ শিকারের আয়োজন করা হয়েছে।

শুক্রবার (২৪ মে) দয়ারামপুর ইউনিয়নের হাটগোবিন্দপুর এলাকার পুকুরে মাছ শিকারের আয়োজন করা হয়।

এফ রহমান মৎস্য ভান্ডারের মালিক ফজলুর রহমান জানান, এই মাছ ধরার উৎসব সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত মাছ শিকার করা হবে।

তিনি আরও জানান, অনলাইন ও বিভিন্ন এলাকার মৎস্য শিকারিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে এবারই প্রথম টিকিটের মাধ্যমে মাছ ধরার আয়োজন করা হয়েছে। তার এই ৮ বিঘা পুকুরে ৬ বিঘা জলকর রয়েছে, এবং পানির গভীরতা রয়েছে ৮-১০ ফুট, তাতে রুই, কাতলা, মৃগেল, কালবাউস মাছ আছে । সর্বোচ্চ ৯ কেজি ওজনের মাছ পুকুরে রয়েছে। অনেকই বড় বড় মাছ পাচ্ছেন। মৎস শিকারিরা পুকুরে এসে দারুন খুশি। এবং তিনি চান প্রতিটি মৎস শিকারি যেনো বেশি বেশি মাছ পায় এবং আগামীতেও যেন তারা আসেন, তিনি প্রতি মাসে এই আয়োজন করবেন বলে জানান।

ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, দেশের বিভিন্ন স্থান ঢাকা, রাজশাহী, বগুড়া,নওগাঁ ও আশাপাশের উপজেলা থেকে ২৬ টি সিটে ৭৮ জন মাছ শিকারি বাহারী রঙের ছিপ দিয়ে মাছ শিকার করছেন। প্রতিটি সিট ১৫ হাজার টাকা হারে কিনেছেন তারা। ওই এলাকায় দীর্ঘ দিন পরে এ ধরনের আয়োজন হওয়ায় তা দেখতে পুকুর পাড়ে আসেন অনেক লোকজন।

মাছ শিকার দেখতে আসা রাজশাহী চারঘাট এলাকার লালন ফিশিং জন এর স্বত্বাধিকার আসাদুজ্জামান লালন তিনি জানান, এই এলাকায় মৎস শিকারের কথা শুনে তিনিও এসেছেন। এ রকম মৎস শিকারের আয়োজন দেখে তিনি খুব খুশি তাই দেখতে এসেছেন। তার নিজের পুকুরে তিনিও টিকিট বিক্রি করে মাছ শিকার করেন।

তিনি আরও বলেন, এই এক কাঠা দুই কাঠা খেলা এ এলাকার একটি ঐতিহ্যবাহী খেলা। কালের বিবর্তনের সঙ্গে এই এলাকা থেকে এই খেলা উঠে যায়। তিনিই প্রথম গত বছর তার লালন ফিশিং জোনে প্রায় ২৩ বার খেলিয়েছেন। এবং সফল ভাবে সম্পর্ণ করেছেন। এবং এই খেলাতে সবাই নেশা, পেশা না ভেবে সৌখিন ভাবে নেওয়ায় আহ্বান জানান।

সুদূর ঢাকার শান্তিনগর,উত্তরা-৬,মিরপুর-২ ও গাজীপুর থেকেও অনেকেই আসছেন,তার মধ্যে থেকে মৎস শিকারে আসা আলাউদ্দিন আলী (৪৭) জানান, তিনি প্রথম ঢাকার বাহিরে মৎস শিকার করতে আসছেন। তারা দলে ৮ জন এসেছেন। তিনি বলেন সুন্দর মনোরম পরিবেশে মৎস শিকার হচ্ছে। সবাই মাছ পাচ্ছেন। মাচের সর্বনিম্ন ওজন ১৪ শত গ্রাম থেকে ৫-৭ কেজি। তিনি নিজের ছিপেও ৩ থেকে ৪ কেজি ওজনের রুই, কালবাবুস,মৃগেল সহ বেশ কয়েকটি মাছ ধরেছেন। এর আগেও তিনি অনেক জায়গায় মাছ শিকার করেছেন কিন্তু এরকম সুন্দর পরিবেশ কখনও দেখেননি। তিনি মালিক পক্ষকে এই আয়োজনে করার জন্য ধন্যবাদ জানান।

বাগাতিপাড়া উপজেলার মৎস শিকার প্রেমী মামুন জানান, তিনি দূর-দুরান্তে মাছ শিকারে গিয়েছেন, তবে আজকের খেলাটা অনেক ভালো লাগে, আয়োজকদের আয়োজনটি অন্তত ভালো, যে পরিমাণের টাকা দিয়ে টিকিট ক্রয় করেছে। তার চেয়ে বেশি মাছ পাওয়ার সম্ভবনা দেখছেন তিনি, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অনেক মাছ তিনি ধরতে পেরেছেন বলে জানান, বিকেলে আরও মাছ পাবেন বলে আশা করেন তিনি।

মাছ শিকার দেখতে আসা দয়রামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুব ইসলাম মিঠু জানান, বাগাতিপাড়া ছোট উপজেলা তেমন কোন বড় পুকুর নেই, এছাড়াও এই পুকুরে সাতাঁর কাটা সরকারি ভাবে নিষেধ, তার পরও ছোট খাটো যে পুকুর গুলো রয়েছে সেগুলোতে অনেক দূর-দুরান্ত থেকে মৎস শিকারে আসেন, সেগুলো দেখতে আমাদের এলাকার অনেকেই আসছে, আমিও আসছি কারণ বড়শি মাছ শিকার দেখতে অনেক ভালো লাগে।

নয়াশতাব্দী/এনএইচ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ