ঐ দেখা যায় তাল গাছ, ঐ আমাদের গাঁ, ঐ খানেতে বাস করে কানা বগির ছা। গাঁয়ে এখন বকের ছানা থাক বা না থাক, তালগাছগুলাতে কিন্তু কচি তালে ভরে গেছে। তালের শাঁস খাওয়ার এখনই সময়। অনেক ফল যখন ফরমালিনের বিষে নীল, অন্যদিকে তালের শাঁসে ফরমালিন ও কীটনাশকের ছোয়া নেই বললেই চলে।
এ জন্য আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু ছাড়াও অন্যতম আরকেটি ভিন্নধর্মী ফল তালের শাঁসের চাহিদা নাটোরের বাগাতিপাড়ায় গ্রাম-শহরের সর্বত্র। বাগাতিপাড়ার স্থানীয় ভাষায় “তালকুর” নামে পরচিতি। এই সুস্বাদু ফল প্রতিটি দশ টাকায় বিক্রি করতে পেরে খুশি বিক্রিতারা।
বর্তমানে উপজেলার বাজার থেকে শুরু করে গ্রামের বিভিন্ন মোড় এলাকায় এই মৌসুমী ফল তালের শাঁস বিক্রি বেড়ে গেছে । অনেকে মৌসুমী ব্যবসায়ীরা তাল গাছ থেকে অপরিপক্ক তালের শাঁস পাইকারী কিনে এনে কেটে বিক্রি করছে । তবে নরম অবস্থায় তাল শাঁসের দাম অনেক বেশি পাওয়া যায়। কিন্তু দিন যতই বাড়ে তালের শাঁস শক্ত হয়ে দাম কমে যায়।
উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে সিএনজি অটো ভ্যানস্ট্যান্ড এবং অলি গলিতে তালের শাস বিক্রি করে অতি দরিদ্র মানুষ জীবন নির্বাহ করেছে।
এমনিভাবে বাগাতিপাড়া তালকুর বিক্রেতা রমজান আলী জানান, তারা প্রতি বছরই এ সময়ে তালের শাঁস বিক্রি করেন। গ্রাম অঞ্চলে ঘুরে ঘুরে তাল ক্রয় করে গাছ থেকে পেড়ে এনে শাঁস বিক্রি করেন। তবে গাছ ওঠে বাঁধা ধরে পাড়া সবচেয়ে কষ্টকর। বৈশাখ থেকে জৈষ্ঠ্য মাসে অধিকাংশ সময়ে তালকুর থাকে গাছে। এই সময়ের মধ্যে ব্যবসায়ীর প্রতিদিন প্রায় ২০০ থেকে ৩০০ তালের শাঁস বিক্রি করে বলে জানান। একটি শাঁস/তাল আকার ভেদে থেকে ১৫ টাকা দরে বিক্রি করছে। এতে করে তালের সাজ বিক্রি করে সংসার ভালোই চলে।
ক্রেতারা জানান, বর্তমানে বাজারে অধিকাংশ ফল ফলাদি ও শাক সবজি সহ মাছ মাংস সব কিছুই কোন না কোন ভাবে ফরমালিন অথবা নানা ধরনের কীটনাশকের মাধ্যমে বাজার জাত করে। কিন্তু তালের শাঁসে ভেজাল কিছুই থাকে না ১০০% নেচারাল ফল বিধায় বাজারে সব সময় চাহিদা বেশি থাকে। তাছাড়াও ফলটা লোভনীয় হওয়ায় বাজারে এসে আমরা নিজেরা বিক্রেতার নিকট বসে খায়, এবং পরিবারের জন্য পার্সেল করে বাসায় নিয়ে যায়।
উপজলো স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক তালের শাঁসের পুষ্টি গুণ সম্পর্কে বলেন, তাল শরীরের জন্য খুব উপকারী একটি ফল। গরমের দিন তালের শাঁসে থাকা জলীয় অংশ পানি শূন্যতা দূর করে। এছাড়াও তাতে ক্যালসিয়াম, ভিটামিন সি এবং ভিটামিন বি সহ নানান ধরনের ভিটামিন রয়েছে। তালে থাকা এন্টিঅক্সিডেন্ট শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। কচি তালের শাঁস রক্তশূন্যতা দূর করে, চোখের দৃষ্টিশক্তি ও মুখের রুচি বৃদ্ধি করে থাকে।
নয়াশতাব্দী/এনএইচ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ