দিনাজপুরের লিচু সারাদেশে স্বাদে ও রসে এগিয়ে। টুকটুকে লাল রঙে আর রসালো স্বাদের জন্য লিচুর কদর সর্বত্র জায়গায়। এর মধ্যে বেদানা লিচুর চাহিদা সব থেকে বেশি। মৌসুম এলেই লিচুর জন্য অপেক্ষায় থাকেন সবাই।
জানা গেছে, ৭ থেকে ১০ দিন পরে বাজারে আসছে দিনাজপুরের লিচু। গাছে গাছে সবুজ পাতার ফাঁকে উঁকি দিচ্ছে লালচে গোলাপি ও সুবজ রঙের লিচু। তবে এখনও অতিরিক্ত তাপদাহে গাছেই লিচু নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছে চাষিরা। কৃষি অফিসের পরামর্শে বাগানের গাছের গোড়ায় পানি ও লিচুর গাছে ছিটানো হচ্ছে কীটনাশক।
লিচুর রাজ্য দিনাজপুরে হিসেবে আলাদা সুনাম রয়েছে। ১৩টি উপজেলাতেই কম বেশি লিচুর আবাদ হয়। সবচেয়ে বেশি চাষ হয় দিনাজপুর সদরের মাসিমপুর, উলিপুর, আউলিয়াপুর, মহব্বতপুর, বিরলের মাধববাটি, করলা, রবিপুর, রাজারামপুর, মহেশপুর, বট হাট এবং চিরিরবন্দর-খানসামা উপজেলায়। মূলত লিচু চাষের জন্য উপযোগী এ অঞ্চলে। লিচু চাষে কৃষকের আগ্রহও দিন দিন বাড়ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর লিচু চাষে জমির পরিমাণ প্রায় পাঁচ হাজার ৪৮৯ হেক্টর। জেলায় লিচু বাগানের সংখ্যা চার হাজারের বেশি। প্রায় ১৩ উপজেলায় লিচু চাষ হলেও সদর, বিরল ও চিরিরবন্দর উপজেলায় লিচুর চাষ বেশি।
সদর উপজেলার জয়দেবপুর গ্রামের লিচু চাষি ইদ্রিস আলি বলেন, আমার দুটি বাগানে শতাধিকের বেশি লিচু গাছ আছে। প্রত্যেকটি গাছে লিচুর ফলন মোটামুটি গতবছরের তুলনায় ভালো হয়েছে। ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে বাজারে তুলতে পারব। আশা করছি এবার লিচুর ভালো দাম পাব।
একই এলাকার আরেক লিচু চাষি সুবাস মহন্ত বলেন, আমার বাগানে লিচুতে রঙ চলে এসেছে। সামনের সপ্তাহে লিচু বাজারে বিক্রি করতে পারব। অতিরিক্ত গরমের কারণে লিচু ফেটে যেতে পারে। এখন লিচুর গাছে পরিচর্যা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছি।
চিরিরবন্দর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জোহারা সুলতানা বলেন, দিনাজপুরে লিচু বাজারে আসে মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে। জেলার ১৩টি লিচুর চাষ হলেও চিরিরবন্দর বিরল ও সদর উপজেলায় সবচেয়ে বেশি লিচু চাষ হয়। এ উপজেলায় প্রায় ৪৭৫ হেক্টর জমিতে লিচুর চাষ হয়েছে। আগাম জাতে লিচু হিসেবে বাজারে আসবে মাদ্রাজি ও বোম্বাই তারপরে আসবে বেদানা, চায়না থ্রি ও কাঁঠালি। জেলায় তাপপ্রবাহ বেশি থাকায় লিচু গুটির ক্ষতি হয়েছে। লিচু যেন গাছে নষ্ট না হয় সেজন্য মাঠ পার্যায়ে কৃষকদের গাছের গোড়ায় ও লিচুর গাছে বেশি বেশি পানি স্প্রে করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
নয়াশতাব্দী/এনএইচ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ