ঢাকা, শনিবার, ১১ জানুয়ারি ২০২৫, ২৭ পৌষ ১৪৩১, ১০ রজব ১৪৪৬

লঞ্চ মালিকদের সিন্ডিকেটে জিম্মি যাত্রীরা

প্রকাশনার সময়: ১৬ মে ২০২৪, ১৯:১৪

ঢাকা টু চরফ্যাশনের বেতুয়া রুটে চলাচলকারী লঞ্চ মালিকদের রোটেশন সিন্ডিকেটের কারণে প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন যাত্রীরা। এতে করে যাত্রীরা বাধ্য হয়ে অন্য ঘাট দিয়ে যাতায়াত করছেন। স্থানীয়রা জানান, ঢাকা-বেতুয়া নৌরুটে লঞ্চ সার্ভিস চালু করা এখন চরফ্যাসনবাসীর দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি। জানা গেছে, স্থানীয় এমপি আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকবের প্রচেষ্টায় এই রুটে একাধিক কোম্পানীর লঞ্চ চালু হয়। নিয়মিত বিভিন্ন কোম্পানির একাধিক লঞ্চ চালুর কারণে তখন থেকেই ঘাটটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।

সম্প্রতি লঞ্চ মালিকেরা রোটেশন সিন্ডিকেট করে দৈনিক একটি লঞ্চ বেতুয়া থেকে ঢাকায় ছাড়েন। এক মালিকের লঞ্চ হওয়ায় যাত্রীদের জিম্মি করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়সহ খারাপ আচরণ করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।

লঞ্চ মালিকদের রোটেশন সিন্ডিকেটে চরফ্যাশনের বেতুয়া ঘাটটি এখন প্রায় যাত্রীশূন্য। ঢাকাগামী অধিকাংশ যাত্রী বাধ্য হয়ে এখন অতিকষ্টে ঘোষেরহাট, পার্শ্ববর্তী উপজেলা লালমোহন ও জেলা সদর ভোলা ঘাটের লঞ্চযোগে যাতায়াত করছেন।

ঘাটের দায়িত্বশীল একাধিক সুত্রে জানা যায়, ঢাকা টু বেতুয়া নৌরুটে লঞ্চ চলাচল শুরুর পর পর্যায়ক্রমে এই রুটে তিনটি লঞ্চ কোম্পানি যুক্ত হয়। সরকারি অনুমোদন অনুযায়ী প্রত্যেক কোম্পানির একটি করে লঞ্চ দৈনিক যাতায়াতের কথা থাকলেও রোটেশন অনুযায়ী প্রথমে তিন কোম্পানির দৈনিক ৩টি লঞ্চ নিয়মিত যাতায়াত করতো। দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে ৩টি লঞ্চের পরিবর্তে এক মালিকের দৈনিক ২টি লঞ্চ যাতায়াত করে। বর্তমানে ১টি লঞ্চ যাতায়াত করছে। কবির হোসেনসহ একাধিক যাত্রী জানান, মালিকরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে যাত্রীদের হয়রানি করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছেন। হাতে বহনকারী ব্যাগ বা বস্তা থেকেও তারা ভাড়া নিচ্ছেন। একসময় প্রতিযোগীতায় লঞ্চ চালিয়ে ঢাকা ঘাটে যেত এসব লঞ্চ। তখন যাত্রীরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তাদের গন্তব্যে পৌঁছতে পারতো। কিন্তু এখন আর ঠিক সময়ে পৌছতে পারেনা। ঘাট লেবার শ্রমিক সর্দার এছাক বলেন, ‘আগে প্রতিদিন ৩-৪টা লঞ্চ ছাড়তো। আমরা যাত্রীদের সেবা দিয়ে পরিবার নিয়ে ডাইল ভাত খাইতাম। এখন দৈনিক ১টা লঞ্চ চলে আগের মত কামাই নাই।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক লঞ্চের সুপারভাইজার বলেন, ‘এভাবে লঞ্চ চালিয়ে মালিকরা অনেক লাভবান হয় কিন্তু লঞ্চ স্টাফদের অনেক লোকসান হয়, দুই তিন দিন পর পর একটা ট্রিপ পাই, আমরা কি করব? মালিকরা যেভাবে সিদ্ধান্ত দেয় আমরা তাদের কথা মেনে সেভাবেই লঞ্চ চালাতে হয়।’

কর্ণফুলী লঞ্চ মালিক মো.সালাউদ্দিন মিয়া বলেন, ‘পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর থেকে এ রুটে যাত্রী কিছুটা কম এজন্য এখন একটি লঞ্চ চলে।’ যাত্রীদের ভোগান্তির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা সকল লঞ্চ মালিকরা খুব শিগগিরই আলোচনা করে চলমান সমস্যা সমাধান করবো।’

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ও চরফ্যাশন উপজেলা সহকারী কমিশনার সালেক মূহিদ বলেন, ‘এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিআইডবিওটিএ এর সঙ্গে কথা বলে সমস্যাটি নিরসনের চেষ্টা করা হবে।’

নয়াশতাব্দী/ডিএ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ