লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে ধান কাটাকে কেন্দ্র করে কৃষিশ্রমিকের হাটগুলো এখন জমজমাট। উপজেলার কয়েকটি বাজারে ধান কাটার মৌসুমে শ্রম বিক্রি হয়। উপজেলার চাপারহাট, সোনারহাট, শিয়ালখোওয়া এসব বাজারে ভোর হলেই শ্রমিকরা এক জায়গায় জড়ো হোন। তবে এবার ধান কাটার শ্রমিকের মজুরি গত বছরের চেয়ে বেশি। এতে এক মণ ধানের দামেও মিলছে একজন শ্রমিকের মজুরি।
কালীগঞ্জসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে ধান কাটার কৃষিশ্রমিকরা দলে দলে ধান কাটার কাঁচি, ধানের আঁটি বহন করার প্রয়োজনীয় রশি ও স্থানীয় ভাষায় বাঁশের তৈরি বাইগ নিয়ে হাটগুলোতে শ্রম বিক্রির জন্য হাজির হচ্ছেন। প্রতিদিন ভোর ৫টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত জমজমাট থাকে শ্রমের বাজার। কৃষকের মধ্যে প্রতিযোগিতা চলে কার আগে কে মজুরির ফয়সালা করে মাঠে নিয়ে যাবে। ফয়সালা হয়ে গেলে তারা মাঠে নিয়ে যান।
সরেজমিনে দেখা যায়, চলবলা , গোড়ল, চন্দ্রপুর, কাকিনা, তুষভান্ডার, মদাতী, ভোটমারী, দলগ্রাম কালীগঞ্জ উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের কৃষক পরিবার ধানের ওপর নির্ভরশীল। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর বোরো ধানের ফলন ভালো হয়েছে। তবে গত বছরের মতো এবারো ধানের দর একই অবস্থায় বিক্রি হচ্ছে। গত বছর প্রতি মণ ধানের বাজার দর ছিল ৯শত টাকা থেকে ১০০০ টাকা। এবার ধান কাটা শ্রমিকের মজুরি ১০০০ টাকা।
উপজেলার চলবলা ইউনিয়নে মহেশ কুমার গ্রামের কৃষক বলেন, এ বছর ঝড়-তুফান না থাকাতে ফলন ভালো হয়েছে। তবে আমাদের এলাকায় শ্রমিকের মজুরি ১০০০ টাকা। শ্রমিকের মজুরি অনুপাতে ধানের মূল্য কম। তাই ধান আবাদ করেও প্রতিবছর লোকসানে পড়তে হয়।
গোড়ল ইউনিয়নের নওদাবাস গ্রামের কৃষক শাওন জানান, ধান কাটার জন্য ভোরে চাপারহাট বাজার থেকে ৫ জন শ্রমিক এনেছি। যার মূল্য প্রতিজন ১০০০ টাকা। এ বছর একমণ ধান বিক্রি করে একজন শ্রমিকের মূল্য পরিশোধ করা যাচ্ছে না। শ্রমিকের মজুরি বেশি থাকায় নিজেই ধান কাটছি।
চলবলা ইউনিয়নের ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন, মাঠ পর্যায়ে কৃষক পাকা ধান কাটছে। শ্রমিকের মূল্য একটু বেশি হলেও ফলন ভালো হয়েছে। এ বছর ব্রি ২৮ ও ২৯ জাতের ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। নতুন জাতের মধ্যে বিনা ধান ২৫, ব্রি ধান ৮৯, ৯২, ১০০ ধানের ভালো ফলন হয়েছে। রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ বেশি ছিল না। আশা করছি নতুন জাতগুলো সম্প্রসারণের মাধ্যমে কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা হলে আরও লাভবান হবেন।
নয়া শতাব্দী/এনএইচ/এসআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ