দিনাজপুর সদর উপজেলার সিটি পার্কের পেছনে (গোসাইপুর) এলাকায় পূর্নভবা নদীর পানি শুকিয়ে যাওয়ায় বালুর চড় ভেসে উঠেছে। আর এই নদীর মাঝখানে ভেকু মেশিন দিয়ে দিনে ও রাতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও বিক্রয় করে, সরকারের কোটি কোটি টাকা রাজস্ব ক্ষতিসাধনের অভিযোগ উঠেছে।
বালু উত্তোলন স্থানে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে একটি শ্মশান ঘাট রয়েছে, (পাশে একটি পাকা রুম বালু বিক্রয় অফিস) বালু বিক্রয়ের রসিদ প্রদানকারী ব্যক্তিকে প্রশ্ন করা হয়, এই বালু উত্তোলনের ইজারাদার কে? উত্তরে বলেন, ইজারাদারের নাম আমি জানি না। আপনার নাম কি? নাম বলতে অস্বীকৃতি জানান, প্রশ্ন করা হয় পূর্নভবা নদীর খননের কাজ অনেক আগেই শেষ হয়েছে, খননকৃত বালুও অনেক আগেই বিক্রয় শেষ করেছেন আপনারা, ফলে পূর্নভবা নদী (ড্রেজিং) খননকৃত বালু আর নেই। সরকারিভাবে ইজারা না থাকা পরেও শুকিয়ে যাওয়া নদীর মাঝখানে কয়েক মাস ধরে দিনে ও রাতে মেশিন দিয়ে কোটি কোটি টাকার বালু উত্তোলন করছেন কোন ক্ষমতার বলে? এ প্রশ্নের কোনো উত্তর দিতে পারেননি বালু উত্তোলন ও বিক্রয়কারী।
ট্রলিতে বালু পরিবহনকালে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ড্রাইভার জানান, অলিখিত ইজারাদার দিনাজপুর সুইহারি আশ্রমপাড়া এলাকার কফিল বসাক, স্থানীয় বিপদগামীদের সাথে নিয়ে অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকার বালু উত্তোলন করে বিক্রয় করছেন, সুধু তাই নয় দিনে বালু পরিবহনের জন্য ট্রলিতো রয়েছে সেই সাথে রাত্রি বেলাতেও ড্রাম ট্রাক দিয়ে বালু বিক্রয় করছেন বিভিন্ন স্থানে।
দিনাজপুর জেলা প্রশাসক অফিস সূত্রে জানা গেছে, দিনাজপুর সদরে পূর্নভবা নদীতে বালু মহালের কোন ইজারা দেওয়া হয়নি।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড, দিনাজপুর নির্বাহী প্রকৌশলী ফারুক আহম্মেদ দৈনিক নয়া শতাব্দীকে জানান, নদী (ড্রেজিং) খননের কাজ করেছেন, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহণ কর্তৃপক্ষ। আমরা কোন (ড্রেজিং) খননের কাজ এবং ভেকু মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করাচ্ছি না। সরকারি অনুমতি ছাড়া নদীর বালু উত্তোলন অবৈধ, ভেকু মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন অবশ্যই দণ্ডনীয় অপরাধ। লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহণ কর্তৃপক্ষ (বি.আই.ডাবলু.টি.এ) হট লাইন (১৬১১৩) ৯ মে দুপুরে মোবাইল করা হলে তিনি জানান, দিনাজপুরে দায়িত্বরত কর্মকর্তার নাম এবং নাম্বার আপাতত পাচ্ছি না তবে একটি নাম্বার দিচ্ছি কল করুন সব তথ্য পেয়ে যাবেন। অতঃপর ০২২২৩৩৫০২৬২/০২২২৩৩৫০২৬৮ নাম্বারে কল করা হলে কেউ মোবাইল রিসিভ করেননি।
দিনাজপুর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (উন্নয়ন ও মানব স¤পদ ব্যবস্থাপনা) দেবাশিষ চৌধুরি দৈনিক নয়া শতাব্দীকে জানান, ‘‘বালু মহালের দেখাশোনার দায়িত্বে আছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার, তিনি সভাপতি”।
তিনি আরও জানান, (ড্রেজিং) খননের বালু সরানো শেষ হয়েছে কিনা, শেষ হয়ে থাকলে, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন এবং ভেকু মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন দণ্ডনীয় অপরাধ। অবশ্যই তদন্তপূর্বক তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নয়াশতাব্দী/এনএইচ/এসআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ