অ্যাডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী ও মুজিবুর রহমান কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন রয়েছে নয় উপজেলা, চার পৌরসভা ও এক সাংগঠনিক উপজেলা। এসব সাংগঠনিক উপজেলায় কমিটি গঠনসহ চারটি সংসদীয় আসনে প্রার্থী মনোনয়ন হয়েছে এ দুজনের স্বাক্ষরে। সরকার দলীয় সংগঠনের জেলার প্রধান হিসেবে ক্ষমতাধর হিসেবেই পরিচিত তারা।
এতো ক্ষমতার পরও লোভে পড়ে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেছেন এ দুজন। জেলা সভাপতি ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী কুতুবদিয়া এবং মুজিবুর রহমান কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বুধবার শেষ হওয়া চলতি সময়ের প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দুজনই করুণভাবে হেরেছেন।
দীর্ঘদিন দল ক্ষমতায় থাকলেও সাংগঠনিক কার্যক্রম বৃদ্ধি এবং তৃণমূলকে সংগঠিত করতে সময় দেননি তারা। ফলে নিজস্ব বলয়ের নেতাকর্মী ছাড়া তৃণমূলদের সাথে তাদের যোগাযোগ ছিল না বললেই চলে। সাথে রয়েছে কমিটি গঠন এবং পদবীর বিপরীতে অনৈতিক লেনদেনের অভিযোগ। আবার দুঃসময়ের ত্যাগী এবং পরীক্ষিতদের অবমূল্যায়নও এর সাথে যুক্ত। দলের নেতাকর্মীদের সাথে বাড়তে থাকা এ দূরত্বের কারণেই জেলা আওয়ামী লীগের দুই শীর্ষ নেতার লজ্জাজনক পরাজয় বলে উল্লেখ করেছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।
কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান আনারস প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ২৭ হাজার ৮৩৩ ভোট। তার প্রতিদ্বন্দ্বী কক্সবাজার পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা নুরুল আবছার মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৩৬ হাজার ৬০০ ভোট। তার চেয়ে ৮ হাজার ৭৬৭ ভোট কম পেয়ে পরাজিত হন মুজিবুর রহমান।
কুতুবদিয়ার উপজেলা নির্বাচনের ভোটে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট ফরিদুল ইসলাম মোটরসাইকেল প্রতীকে ৩ হাজার ৯৬৫ ভোট। তার প্রতিদ্বন্দ্বী হানিফ বিন কাশেম ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ২৭ হাজার ২৪৯ ভোট। অপর প্রার্থী আসহাব উদ্দিন আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ৫ হাজার ৪৩৮ ভোট। এতে তিন প্রার্থীর মাঝে তৃতীয় অবস্থানে ঠাঁই পেয়েছেন ফরিদুল ইসলাম। এতে তিনি জামানতও হারাতে পারেন বলে মনে করছেন সাধারণ ভোটাররা। তবে, ভোটের দুদিন আগে থেকে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।
নির্বাচন কার্যালয় সূত্র জানায়, কুতুবদিয়ার ছয়টি ইউনিয়নে ভোটার সংখ্যা ৯৭ হাজার ১৭০ জন। সেখানে ৩৬ হাজার ৬৫২ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। এখানে ভোট পড়েছে ৩৭ শতাংশ।
অপরদিকে, মহেশখালীতে আওয়ামী লীগের কোন প্রার্থীই ছিলেন না। এ উপজেলায় প্রার্থী হয়েছিলেন আওয়ামী লীগের স্থানীয় সাংসদ আশেক উল্লাহ রফিকের চাচাত ভাই বিএনপির বহিস্কৃত নেতা হাবিব উল্লাহ ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফার ভাগিনা জামায়ত সমর্থিত জয়নাল আবেদীন এবং সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শরীফ বাদশা। তিনি (শরীফ বাদশা) মনোনয়ন প্রত্যাহারও করেননি, আবার ছিলেন না ভোটের প্রচারণায়ও। ভোট শেষে কেন্দ্রভিত্তিক এজেন্টদের দেয়া তথ্য মতে- জয়নাল আবেদীন নির্বাচিত হওয়া কথা প্রচার পেলেও রাত ১০টায়ও বেসরকারি ফলাফল ঘোষণা হয়নি।
নির্বাচন কার্যালয় সূত্র জানায়, মহেশখালীতে এক পৌরসভা ও ৮ ইউনিয়ন মিলে ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৫৭ হাজার ৪৫৮ জন। ফলাফল না আসায় কি পরিমাণ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন এবং কত শতাংশ ভোট পড়েছে তা উল্লেখ করা সম্ভব হয়নি।
নয়া শতাব্দী/এসএ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ