ছেলেকে হেলিকপ্টারে করে বিয়ে করাবেন। পুত্রবধূকে নিয়ে আসবেন সেই হেলিকপ্টারে এমন আশা ছিল বাবার। অবশেষে বাবার সেই স্বপ্নপূরণ হলো।
ময়মনসিংহের নান্দাইলে খারুয়া ইউনিয়নের মহেষকুড়া গ্রামের বিশিষ্ট সমাজসেবক আফতাব উদ্দিন ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের সেক্রেটারি জেনারেল আলহাজ মো. ওয়ালিউল্লাহ ধুমধামের মধ্য দিয়ে ছেলেকে বিয়ে করালেন। হেলিকপ্টারে চড়ে ছেলেকে পাঠালেন কনের বাড়ি। আর সেই হেলিকপ্টারেই বউ আনলেন ছেলে।
শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার আফতাব উদ্দিন দাখিল মাদরাসার মাঠ থেকে হেলিকপ্টারে চড়ে মাত্র পাঁচ মিনিটে কনের বাড়ি গফরগাঁও পৌরসভার জামতলা মোড় সংলগ্ন এস এম মাইনদ্দিন পার্টি প্যালেসের সামনের মাঠে গিয়ে পৌঁছায় হেলিকপ্টার। এ সময় বরের সঙ্গে ছিলেন তার বাবা মো.ওয়ালিউল্লাহ, কাকা মোহাম্মদ জুনাইদ।
কনের বাড়ি গফরগাঁও উপজেলায় পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডে। কনের নাম হাফসা সিদ্দিকা। তার বাবার নাম আব্দুস সালাম সবুজ। তিনি একজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী।
এসময় হেলিকপ্টারে বরযাত্রা দেখতে এলাকায় শত শত উৎসুক নারী-পুরুষ ভিড় জমান।
বরের পরিবার সূত্রে জানা যায়, বিশিষ্ট শিল্পপতি রিচম্যান, লুবনান ও ইনফিনিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান আলহাজ মোহাম্মদ জুনাইদের বড় ভাই বিশিষ্ট সমাজসেবক মো. ওয়ালিউল্লাহর তৃতীয় ছেলে মো.জাকির হোসেন। জাকির রিচম্যান, লুবনান ও ইনফিনিটি গ্রুপের এইচ আর সেলস অ্যান্ড অপারেশন সিনিয়র অফিসার হিসাবে কর্মরত। তার বাবা ওয়ালিউল্লাহ এলাকার বিশিষ্ট সমাজসেবক ও রাজনীতিবিদ। বাবার স্বপ্ন পূরণ করতেই তিনি হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ে করার উদ্যোগ নেন।
হেলিকপ্টার থেকে নেমে বাদ্যবাজনা বাজিয়ে হায়েস গাড়িতে চড়ে জামতলা মোড় সংলগ্ন এস এম মাইনদ্দিন পার্টি প্যালেসে যান বর। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে নববধূকে নিয়ে আবার হেলিকপ্টারে চড়ে নিজ গ্রামে ফিরে আসেন। তার বিয়ের এমন আয়োজন দেখে অবাক গ্রামবাসী।
মেয়ের জামাই হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ে করতে আসায় খুশি জাকির হোসেনের শ্বশুর বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম সবুজ। তিনি বলেন, আমি গর্বিত যে জামাই হেলিকপ্টারে আমার মেয়েকে নিতে এসেছে। খুবই আনন্দিত।
বর জাকির হোসেনের বাবা মো. ওয়ালিউল্লাহ জানান, অনেক আগে থেকেই তার স্বপ্ন ছিল ছেলের বিয়েটি তিনি স্মরণীয় করে রাখবেন। হেলিকপ্টারে করে রাজকীয়ভাবে ছেলের বউকে তার বাড়িতে আনবেন। সেই শখ পূরণে তিনি ব্যতিক্রমী এই আয়োজন করেন।
তিনি বলেন, আমার ছোট ভাই শিল্পপতি মোহাম্মদ জুনাইদ হেলিকপ্টারের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে আমার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। এই বিয়েতে বরযাত্রী গিয়েছেন ২শত এর অধিক। তাদেরকে মাইক্রোবাসে কনের বাড়িতে পাঠানো হয়।
বর জাকির হোসেন বলেন, বাবার স্বপ্ন ছিল হেলিকপ্টারে বিয়ে করতে যাব। বাবা সেই স্বপ্ন পূরণ করতেই আমাকে হেলিকপ্টারে করে বিয়ে করিয়েছেন। আমার গর্বিত বাবার জন্য দোয়া করি। অনেক ভালো লাগছে। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন।
স্থানীয়রা জানায়, এই অঞ্চলে হেলিকপ্টারে করে এ ধরনের বিয়ে এটাই প্রথম। এর আগে কোনোদিন এরকম রাজকীয় বিয়ে হয়নি।
নয়া শতাব্দী/এসআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ