চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে টানা ২৪ দিন মাঝারি থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এতে অস্বস্তি আরও বেড়েছে। সকালে তাপমাত্রা মৃদ থাকলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে সূর্যের উত্তাপ বাড়তে থাকে। বাড়ে তাপমাত্রার পারদও।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সকাল ৯টায় ৩৩ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সেসময় বাতাসের আর্দ্রাত ছিল ৪৪ শতাংশ। এরপর বেলা ১২ টায় ১৬ শতাংশ বাতাসের আর্দ্রতার সাথে তাপমাত্রা বেড়ে ৪০ ডিগ্রিতে উঠে আসে। বেলা ৩টায় আবহাওয়া অফিস তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের সাথে বাতাসের আর্দ্রতা রেকর্ড করে ১৪ শতাংশ।
তীব্র রোদের তাপের কারণে শ্রমিক, দিনমজুর, ভ্যান-রিকশা চালকরা কাজ করতে না পেরে অলস সময়ও পার করছেন। একটু প্রশাস্তির খোঁজে গাছের ছায়া ও ঠান্ডা পরিবেশে স্বস্তি খুঁজছে স্বল্প আয়ের মানুষরা। বেলা বাড়ার সাথে সাথে রাস্তা ঘাটে লোকজনের চলাচল সীমিত হয়ে পড়ছে। আবার অনেকে জরুরি প্রয়োজন ও জীবন-জীবিকার তাগিদে প্রচন্ড তাপদাহ উপেক্ষা করে কাজে বের হচ্ছেন।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা গেছে, চলমান তাপপ্রবাহের কারণে ভূপৃষ্ঠ চরম উত্তপ্ত যা শীতল করতে বা তাপমাত্রা কমানোর জন্য টানা বৃষ্টির প্রয়োজন। সেই সাথে মেঘের কারণে সূর্যের তাপ যাতে মাটিতে পড়তে না পারে, তাহলে তাপপ্রবাহ কমে যাওয়াসহ পরিস্থিতির উন্নতি হবে। তবে আপাতত তার কোনো লক্ষণ নেই।
এদিকে, প্রচণ্ড তাপপ্রবাহের কারণে জেলায় বেড়েছে নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা। সব বয়সীরা গরমে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন। আর শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে নিউমোনিয়ায়। রোগীর চাপ এতোটাই বেশি যে শয্যা সংকটে পড়েছে রোগীরা। শিশু ও ডায়রিয়া ওয়ার্ডে বেড না পেয়ে রোগীরা মেঝেতে অবস্থান করেছে। রোগীর চাপ সামলাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে দায়িত্বরত ডাক্তার ও নার্সরা।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ওয়ার্ডে প্রতিদিন গড়ে রোগী আসছে ৪০ থেকে ৫০ জন। তাদের সবার বয়স ৩ মাস বয়স থেকে ১ বছর পর্যন্ত। বেশিরভাগই নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। গত এক সপ্তাহে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা নিয়েছে তিন শতাধিক।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ আসাদুর রহমান মালিক খোকন বলেন, কয়েকদিন ধরে সদর হাসপাতালে নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। ফলে হাসপাতালে অনেক রোগীর চাপ। এই তীব্র তাপপ্রবাহ আর তীব্র গরমের কারণে এমন অবস্থা। তবে ডাক্তার ও নার্সরা নিয়মিতভাবে রোগী দেখছে।
চুয়াডাঙ্গার প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, চলতি এপ্রিল মাসে মৃদু থেকে শুরু করে মাঝারি ও তীব্র, এমনকি অতি তীব্র তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। ২ থেকে ২২ এপ্রিল পর্যন্ত ২১ দিনের মধ্যে ৯ দিনই দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে এ জেলায়। এপ্রিলের বাকি দিনগুলোতে তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে।
নয়া শতাব্দী/এসআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ