নাটোরের বাগাতিপাড়ায় মোহন (২২) নামের এক অটোভ্যানচালককে কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষরা।
বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০টার দিকে বাগাতিপাড়া ও রাজশাহীর বাঘা উপজেলার সীমান্ত এলাকার খাগোরবাড়িয়া নামক স্থানে এ ঘটনা ঘটে।
বাগতিপাড়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নান্নু খান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন ।
নিহত মোহন উপজেলার মহাপুর গ্রামের মো মোজাম্মেল হকের ছেলে এবং পেশায় একজন অটোভ্যানচালক ছিলেন।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পরে অটোভ্যানটি মেরামতের জন্য বাঘা উপজেলার খাগোরবাড়িয়া বাজারে মকবুল মেকানিকের কাছে যান।বিষয়টি সন্ধ্যা ৭টার দিকে মোবাইলে কথা বলে মাকে নিশ্চিত করে মোহন। এমনকি ভ্যান মেকানিক মকবুলের সাথেও কথা বলিয়ে দেয় সে। পরে রাত ১০টার দিকে পরিবারের লোকজন খবর পান মোহনকে কুপিয়ে মারাত্মকভাবে জখম করে ফেলে রেখে গেছে কে বা কারা। পরে পরিবারের লোকজন বাগাতিপাড়া থানায় খবর দিয়ে মোহনকে আনতে যায়। পথিমধ্যে কয়েকজন মোহনকে তারই ভ্যানে করে মায়ের কাছে দিয়ে যান। খবর পেয়ে সঙ্গীয় আফিসার ও ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে যায় থানার অফিসার ইনচার্জ নান্নু খান।
পরে গুরুতর আহত অবস্থায় মোহনকে উদ্ধার করে বাগাতিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে চিকিৎসকরা জরুরি ভিত্তিতে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
বাগাতিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডাক্তার ফাকিহা জান্নাত জানান, বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে মোহন নামে একজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়। রামেক হাসপালে নেয়ার পরে তার অবস্থা আরও বেশি আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়। কারণ তার শরীরের বেশকিছু জায়গায় অপারেশন থিয়েটার ছাড়া সেলাই বা চিকিৎসা দেওয়া সম্ভবনা নয়। পরে ঢাকায় নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয় বলে পরিবার সূত্রে জানা যায়।
এদিকে নিহত মোহনের মা হনুফা বেগম জানান, প্রায় তিন বছর আগে খাগোরবাড়িয়া গ্রামের জাকির হোসেন নামের এক ব্যক্তি খুন হন। সেই হত্যার সাথে জড়িত সন্দেহে তার ছেলে মোহনকে হত্যা মামলার ১ নং আসামি করা হয়। সে মামলায় তিন বছর জেলহাজতে থাকার পর প্রায় চারমাস আগে তাকে জামিনে মুক্ত করে আনা হয়।
তিনি আরও জানান, মোহনকে আসামি করেই থেমে থাকেনি নিহত জাকিরের লোকজন। জামিনের দিন তারা আদালতেই তাকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছে। মোহন জামিনে আসার পর থেকে প্রায়ই তাকে আক্রমন করতে এসেও ব্যার্থ হয়েছে তারা। কিন্তু এবার তারা আগে থেকে ওঁৎ পেতে থেকে মেরে ফেলার জন্যই এভাবে কুপিয়েছে।
যারা মোহনকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছে তাদের আইনের আওতায় এনে কঠিন শাস্তির দাবি জানান হনুফা বেগম।
বাগতিপাড়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নান্নু খান জানান, রাতে খবর পেয়েই পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পরে রাত সাড়ে ৩টার দিকে মোহনের মৃত্যুর খবর পেয়ে মরদেহ থানায় আনা হয়। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সকালে ময়নাতদন্তের জন্য নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
ওসি নান্নু আরও বলেন, এ ঘটনায় মোহনের মামা আয়নাল হক বাদী হয়ে বাগাতিপাড়া সীমান্তবর্তী এলাকার মোস্তফা, ইশতিয়াক, আল-আমিন ও রাজিবুল এই চারজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনকে আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ঘটনা জানার পর থেকেই অভিযুক্তদের আটকের জন্য অভিযান শুরু করে।
নয়া শতাব্দী/এনএইচ/এসআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ