সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার বাজারে ময়লা ফেলার কোনো নির্দিষ্ট জায়গা নেই। ফলে বাজারের মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া নলজুর নদীতে অবাধে আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। এতে করে একাংশ ভরাট হয়ে নদীটি মরে যাচ্ছে, দূষিত হচ্ছে পরিবেশ।
বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সরেজমিনে দেখা গেছে, নলজুর নদীর অবস্থান জগন্নাথপুর বাজারের মাঝখানে। বাজারে মাংস, মাছ, কাঁচা তরকারিসহ নানান পণ্যের দোকান আছে। ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে এলাকাবাসীরা প্রকাশ্যে নদীতে ময়লা ফেলছেন। ময়লার স্তূপ থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। বর্জ্য নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেই। ডাম্পিং স্টেশনের অভাবে সবাই নদীতে ময়লা ফেলছেন। এছাড়াও নদীর দুপাশে অবৈধ স্থাপনাও গড়ে উঠেছে। সবমিলিয়ে নদীটি দিন দিন সংকীর্ণ হয়ে খালে পরিণত হয়েছে। বর্ষায় নদীর ঢাল ময়লা-পলিথিনে ছেয়ে যায়। জীববৈচিত্র্য হুমকিতে পড়ে। দূষণে শুষ্ক মৌসুমে নদীটি মৃতপ্রায়।
স্থানীয় বাসিন্দা সাইফুর রহমান মিনহাজ বলেন, 'জবাই করা পশুর বর্জ্য, ময়লা-আবর্জনা, পচা মাছ ইত্যাদি নদীতে ফেলা হচ্ছে। এসব ময়লা-আবর্জনা থেকে তীব্র গন্ধ বের হচ্ছে। প্রশাসন ব্যবস্থা নিলে নদী বাঁচত, আমরাও বাঁচতাম।'
নলজুর নদীর শহীদ মিনারের পাশেই বাড়ি সংবাদকর্মী সাংবাদিক আমিনুল হক সিপনের। তিনি বলেন, নলজুর নদী সিলেটের কুশিয়ারা নদী থেকে উৎপন্ন হয়ে কুশিয়ারা নদীতে মিলেছে। একসময় নদীটি খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। যাত্রী পারাপারের পাশাপাশি পণ্য পরিবহন করা হতো। একসময় এটি কৃষি, বাণিজ্য ও যোগাযোগে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখত। বর্তমানে দখল, দূষণ ও ভরাটের কারণে নদীর অস্তিত্ব বিপন্ন।'
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার ৩ নম্বর মিরপুর ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার মাহবুব হোসেন বলেন, বাজারের ময়লা-আবর্জনা নিষিদ্ধ পলিথিনে ভরে নদীতে ময়লা ফেলা হচ্ছে। নদীতে বর্জ্য ফেলা কোনোভাবেই কাম্য নয়। নদী সচল থাকলে পরিবেশ ভালো থাকে। পরিবেশ-প্রকৃতি ভালো থাকলে আমরাও ভালো থাকি। নদী খনন করে এর স্বাভাবিক প্রবাহ নিশ্চিত করা প্রয়োজন বলেও জানান তিনি।
জগন্নাথপুর উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শারমিন আরা আশা বলেন, নলজুর নদীর ঐতিহ্য শুনে ছিলাম এখানে আসার পর এখন আর নেই।সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর পৌরসভার মেয়র আক্তার হোসেন বলেন, কোনোভাবেই নদীতে ময়লা আবর্জনা ফেলে নদী ভরাট করা যাবে না। আমি ময়লা আবর্জনা নির্দিষ্ট স্থানে ফেলার জন্য বাজার কমিটিকে দায়িত্ব দেবো। তারপরও যদি ময়লা আবর্জনা নদীতে ফেলা হয় তাহলে মোবাইল কোর্ট বসানো হবে।
নয়াশতাব্দী/এনএইচ/এসএ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ