এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জে একটি মাহফিল থেকে ফেরার পথে দুর্বৃত্তদের অতর্কিত হামলায় স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা এম সজীবসহ ৪ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এসময় কুপিয়ে জখম করা হয়েছে আরও দুজনকে।
শুক্রবার (১২ মার্চ) দিবাগত রাত ২টার দিকে সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের পাঁচপাড়া গ্রামের যৈদের পুকুরপাড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
শনিবার (১৩ এপ্রিল) ভোরে চন্দ্রগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মফিজ উদ্দিন হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
আহত এম সজীব চন্দ্রগঞ্জ কফিল উদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি পদপ্রত্যাশী। আহত অন্যরা হলেন- ছাত্রলীগ কর্মী সাইফুল পাটওয়ারী, সাইফুল ইসলাম জয়, রাফি ও রাব্বীসহ ৬ জন। আহতরা সবাই চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এম মাসুদুর রহমান মাসুদের অনুসারী বলে জানা গেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে এম মাসুদুর রহমান মাসুদ জানান, রাত দেড়টার দিকে এম সজীব, সাইফুল পাটোয়ারী, রাফি, রাব্বীসহ ৬ জন মাহফিল শেষে তাকে চন্দ্রগঞ্জ বাজারে পৌঁছে দিয়ে যায়। ফেরার পথে যৈদের পুকুরপাড় নামীয় বাজারের পাশে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা তাদের মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে হামলা ও গুলি চালায়।
চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, পরে খবর পেয়ে স্বজনসহ আমরা গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে যাই। এসময় আহত সজীব, সাইফুল ও রাফির অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায়, তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। আহত জয়সহ অন্যদের সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চেয়ে এম মাসুদুর রহমান দাবি করে বলেন, ‘দ্বিতীয় রমজান থেকেই স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা কাজী মামুনুর রশিদ বাবলুর সঙ্গে আমার বিরোধ চলে আসছে। এর জেরেই আমার লোকজনের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চাই।’
তবে, এ অভিযোগ অস্বীকার করে চন্দ্রগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক কাজী মামুনুর রশিদ বাবলু বলেন, ‘সদরের এমপি গোলাম ফারুক পিঙ্কুসহ আমরা অনেকেই হযরত আব্দুল হক (র.) ছোট মিয়ার মাজারে বার্ষিক মাহফিলে যাই। রাত সাড়ে ১১টায় উনাকে বিদায় দিয়ে আমি বাসায় চলে আসি।’
ছাত্রলীগ নেতা মাসুদের সঙ্গে বিরোধের বিষয়টি স্বীকার করে কাজী বাবলু বলেন, ‘মাসুদসহ তাদের সঙ্গে আমার দূরত্ব আছে, এটা সঠিক। কিন্তু হামলার সঙ্গে আমি বা আমার কোনো লোকজন জড়িত নয়। আমাদের দ্বন্দ্বের সুযোগে বিএনপির সন্ত্রাসীরাও এ ঘটনায় জড়িত থাকতে পারে। আমি এর সঠিক তদন্ত দাবি করছি।’
এদিকে চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এম ছাবির আহম্মেদ ঘটনার পর তাৎক্ষণিক আহতদের দেখতে সদর হাসপাতালে যান। এরপর তিনি ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের নিয়ে ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে শনিবার (১৩ এপ্রিল) সকাল ১০টায় বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচির ঘোষণা দেন।
এসব বিষয়ে চন্দ্রগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মফিজ উদ্দিন বলেন, হামলা-মারামারি ও গুলিবিদ্ধের ঘটনা ঘটেছে। এতে কয়েকজন আহত হওয়ার খবর পেয়েছি। পুলিশ ঘটনাস্থলসহ এলাকায় টহল জোরদার করেছে। এ ঘটনায় মামলা হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নয়াশতাব্দী/এনএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ