ঈদের আগে আরও বেড়েছে মাংসের দাম। এমন অবস্থায় মাংসের চাহিদা মেটাতে মাসজুড়ে চাঁদা তুলে সেই টাকায় ঈদের আগে গরু কিনে মাংস ভাগ করে নিচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষ।
পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে কম দামে গরুর মাংস পৌঁছে দিতে গড়ে উঠেছে ব্যতিক্রমী এক উদ্যোগ। লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার পাড়া-মহল্লায় গড়ে ওঠা এই সংগঠন বা সমিতি এখন আলোচনার তুঙ্গে। স্থানীয়রা এই সংগঠনের নাম দিয়েছেন ‘মাংস সমিতি’।
স্থানীয়রা বলছেন, ঈদ উপলক্ষে গরুর মাংসের চাহিদা বেশি থাকে। এখন দেশে গরুর মাংসের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকায়। একবারে এতো টাকা দিয়ে গরুর মাংস কিনে খাওয়া অনেকটা সাধ্যের বাইরে চলে গেছে নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবিত্তের। তাই নিম্ন আয়ের মানুষের মাংসের চাহিদা মেটাতে সদস্যদের কাছ থেকে মাসজুড়ে জনপ্রতি মোট এক হাজার টাকা করে চাঁদা তোলে এই সমিতি। সেই চাঁদার টাকায় ঈদের আগে গরু কিনে জবাই করে মাংস ভাগ করে নেয় সবাই।
মাংস সমিতির সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিটি মাংস সমিতির সদস্য সংখ্যা ৮০ থেকে ১০০ জন। সমিতির প্রতি সদস্য মিলে সমিতিতে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ জমা দেন। ঈদুল ফিতরের আগে জমা করা সেই টাকা দিয়ে কেনা হয় গরু। ঈদের আগের দিন ওই গরু জবাই করে সমিতির সদস্যদের মাঝে ভাগ করে দেওয়া হয়। এতে মাংস ব্যবসায়ীরা যেমন বঞ্চিত হন মুনাফা থেকে, তেমনি নিম্ন আয়ের মানুষও ঈদের আনন্দ ভাগ করে নিতে পারেন।
কালীগঞ্জ উপজেলার দুহুলীর গ্রামের বাসিন্দা খোকন মিয়া জানান, তাদের সমিতিতে এবার সদস্য ৮০ জন। প্রতি সপ্তাহে সদস্য প্রতি এক হাজার টাকা করে চাঁদা জমা করা হয়েছে। রোজার ঈদের আগে জমানো সেই টাকা দিয়ে গরু কিনে সমিতির সদস্যদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হবে। তুলনামূলক বাজার দরের চেয়ে কম দামে এবং একসঙ্গে বেশি পরিমাণ মাংস পেয়ে প্রত্যেকেই খুব খুশি হন।
আর এভাবেই দিন দিন এই উপজেলায় বাড়ছে মাংশ সমিতির সংখ্যা। এ বিষয়ে কালীগঞ্জ উপজেলার চলবলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজু বলেন, ‘গ্রামগঞ্জে বেশিরভাগ গরিব শ্রেণির মানুষ বসবাস করে। এসব মানুষ নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবিত্ত। তাদের পক্ষে চড়া দামে গরুর মাংস কেনা কষ্টকর। তাই সমিতির মাধ্যমে গরু জবাই করে মাংস বণ্টন করে নেওয়ায় সদস্যরা কম দামে গরুর মাংস পাচ্ছেন। গরীব মানুষের জন্য এটি একটি ভালো উদ্যোগ।’
নয়াশতাব্দী/এনএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ