ঢাকা, রবিবার, ১২ জানুয়ারি ২০২৫, ২৮ পৌষ ১৪৩১, ১১ রজব ১৪৪৬

তিন দশক পর যশোরে ফিরছে বৈশাখী মেলা

প্রকাশনার সময়: ০৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৯:৪২

তিন দশক পর যশোরে ফিরছে বৈশাখী মেলা। আগামী ৩০ চৈত্র (১৩ এপ্রিল) বর্ণাঢ্য আয়োজনে যশোর টাউন হল ময়দানে এই মেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হবে। দশ দিনব্যাপী মেলায় গ্রামবাংলার ঐতিহ্য ও লোকজ সংস্কৃতিকে তুলে ধরার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

সোমবার (৮ এপ্রিল) দুপুরে টাউন হল ময়দানে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান লোকজ সাংস্কৃতিক উৎসব ও বৈশাখী মেলা ১৪৩১ এর সদস্য সচিব, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট যশোরের সাধারণ সম্পাদক সানোয়ার আলম খান দুলু।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ও যশোর ইনস্টিটিউট যৌথভাবে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় ১০ দিনব্যাপী লোকজ সংস্কৃতি উৎসব ও বৈশাখী মেলা ১৪৩১ আয়োজন করেছে। মেলার উদ্বোধন হবে ৩০ চৈত্র ১৪৩০ এবং শেষ হবে ৯ বৈশাখ ১৪৩১। সমগ্র আয়োজনে যশোরসহ জেলা ও উপজেলার মোট ১৩০টি সাংস্কৃতিক সংগঠন অংশগ্রহণ করবে। বাংলা সংস্কৃতি পরিচয়বাহী কবিগান, পটগান, গম্ভীরা, জারিগান, সঙ যাত্রা, লাঠিখেলা, সাপ খেলাসহ গ্রাম বাংলার লোকজ আঙ্গীক ধারাবাহিকভাবে প্রদর্শিত হবে।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। প্রতিদিন বিকেল থেকে সমস্ত সংগঠনের শিশুদের নিয়ে শিশুতোষ আয়োজন থাকবে। আগামী প্রজন্মকে এগিয়ে নিয়ে যেতে এটি আমাদের বিশেষ উদ্যোগ। পাশাপাশি প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে যশোরের সর্বস্তরের সংস্কৃতিকর্মীরা অনুষ্ঠান উপস্থাপন করবেন।

এই উৎসব কেন্দ্র করে স্থানীয় সরকার যশোরের উপ-পরিচালক রফিকুল হাসানকে আহ্বায়ক ও সানোয়ার আলম খান দুলুকে সদস্য সচিব করে ১৫ সদস্য বিশিষ্ট উদযাপন কমিটি গঠন করা হয়েছে। মূল কমিটি ছাড়াও কয়েকটি উপকমিটি গঠন এবং দায়িত্ব বণ্টন করা হয়েছে।

সানোয়ার আলম খান দুলু আরও জানান, আমাদের উৎসবের সম্ভাব্য ব্যয় ১০ লাখ টাকা। মেলা কমিটির পক্ষ থেকে বিভিন্ন বিনোদনমূলক ক্রীড়া আয়োজকদের ভাড়া দেয়া হয়েছে। এ ছাড়াও উন্মুক্ত আহ্বানের মাধ্যমে স্টল বরাদ্দ থেকে অর্থ সংকুলানের চেষ্টা চলমান রয়েছে। জেলা প্রশাসনের কাছে আর্থিক সহায়তার জন্য আবেদন করা হয়েছে। এ ছাড়াও বাঙালি সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল সকলের কাছে অনুদান প্রদানের অনুরোধ জানাচ্ছি যা আমাদের আয়োজন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সহায়তা করবে।

আয়োজকরা জানিয়েছেন, তাদের জানা মতে, সর্বশেষ ১৪০১ বঙ্গাব্দে যশোরে সর্বশেষ বৈশাখী মেলা হয়েছে। এরপর এমন আয়োজন এই জেলায় আর হয়নি। সেই হিসেবে তিন দশক পর বৈশাখী মেলা উদযাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

লোকজ সাংস্কৃতিক উৎসব ও বৈশাখী মেলা ১৪৩১ উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক স্থানীয় সরকার যশোরের উপ-পরিচালক রফিকুল হাসান জানান, টাউন হল ময়দানের এই বৈশাখী মেলায় ৬০টি স্টল থাকবে। স্টলগুলোতে গ্রামবাংলার ঐতিহ্য ও লোকজ সংস্কৃতি ফুটিয়ে তোলা হবে। ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন পণ্য সম্ভার স্টলগুলোতে স্থান পাবে। যশোরের বরেণ্য ব্যক্তিদের নামে ‘প্যাভেলিয়ন’ থাকবে এবং জেলার প্রয়াত সংস্কৃতিজনদেরও মেলায় নানা আঙ্গিতে সম্মান জানানো হবে।

রফিকুল হাসান আরও জানান, অত্যন্ত স্বচ্ছতার সাথে এই বৈশাখী মেলার আয়োজন করা হয়েছে। সরাসরি স্টল বরাদ্দ দিয়ে সেই অর্থ থেকে মেলা আয়োজনের চেষ্টা করা হচ্ছে। এই আয়োজন সফল করার মধ্যে দিয়ে গ্রামবাংলার ঐতিহ্য বৈশাখী মেলাকে ফিরিয়ে এনে নতুন প্রজন্মের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হবে। তিনি মেলা সফল করতে যশোরবাসীর সহযোগিতা কামনা করেন।

অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- উদযাপন কমিটির সদস্য জেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি দীপংকর দাস রতন, সাবেক সভাপতি হারুন অর রশিদ, প্রেসক্লাব যশোরের সাধারণ সম্পাদক এসএম তৌহিদু রহমান, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা সাজ্জাদুর রহমান খান বিপ্লব, তরিকুল ইসলাম তারু, পান্না লাল দে, আজাহার হোসেন স্বপন, শাহরিয়ার বাবু, রওশনারা রাসু, কামরুল হাসান রিপন প্রমুখ।

নয়া শতাব্দী/এসআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ