দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে আলু উত্তোলনের মৌসুমে ভালো দাম পাওয়ায় ক্ষেতেই নগদ টাকায় পাইকারি দামে আলু বিক্রি করে দিয়েছেন চাষিরা। নানা হয়রানীর কারণে হিমাগারে আলু সংরক্ষণ না করে ঝামেলামুক্তভাবে ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে দেন চাষিরা।
এদিকে আলু উত্তোলন শেষ হলেও ফুলবাড়ীর একমাত্র কোল্ড স্টোরেজে এ পর্যন্ত ধারণ ক্ষমতার ৭৫ ভাগ আলু সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়েছে, ২৫ ভাগ জায়গা এখনও খালি পড়ে আছে।
হিমাগার কর্তৃপক্ষ বলছেন, হিমাগারে সংরক্ষিত আলু ব্যবসায়ী ও কৃষকরা নির্দিষ্ট একটি সময়ে উত্তোলন করে তা বাজারজাত করে থাকে। হিমাগারের জন্য কাঙ্খিত আলু না পেলে বাজারের ভারসাম্য রক্ষা করা কঠিন হবে। এতে অসাধু চক্র আলুর সঙ্কট সৃষ্টি করে ইচ্ছেমতো দাম বাড়িয়ে মুনাফা আদায় করবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ বছর এক হাজার ৮১০ হেক্টর জমিতে আলুর চাষ করা হয়। এতে আলু উৎপাদন হয়েছে ৪৪ হাজার ৮৫ মেট্রিক টন। আশানুরূপ দাম ও চাহিদা থাকায় কৃষকরা ক্ষেতেই আলু বিক্রি করে দিয়েছে। এ কারণে এক লাখ ৫৫ হাজার মেট্রিক টন ধারণক্ষমতার কোল্ড স্টোরেজ এখন অনেকটাই ফাঁকা।
হিমাগারের ব্যবস্থাপক মো. আবুল হাসনাত বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অপরদিকে ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই জমে উঠছে ঈদের বাজার। গত বছরের চেয়ে এবার জিনিসপত্রের দাম বেশি হলেও কেনাকাটা চলছে।
ব্যবসায়ী সমিতির আহ্বায়ক কমিটির অন্যতম সদস্য মো. আব্দুল কাইয়ুম বলেন, শহর ও আশেপাশের এলাকায় ছোটবড় মিলে প্রায় দুই হাজার, কাপড়, জুতা ও কসমেটিকসের দোকান রয়েছে। এ বছর বিক্রিও বেশি। ঈদের আগের রাত পর্যন্ত বেচাকেনা চলবে। ক্রেতারা মধ্যরাত অবধি পর্যন্ত কেনাকাটা করছেন। চাকরিজীবীদের বেতন-বোনাস আর কৃষকের আলু বিক্রির টাকা এবার ঈদের কেনাকাটায় গতি এনেছে।
ফুলবাড়ী শহরের মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, নজরকাড়া ডিজাইন ও রকমারী পোশাকে দোকানপাট ঝলমল করছে। এতে ইউনিয়ন পর্যায়ের মানুষ নতুন ডিজাইনের ভালো পোশাক কেনার আশায় ছুটে আসছেন শহরের দোকানগুলোতে।
শিবনগর ইউনিয়নের বুজরুজ সমশের নগর (পাঠকপাড়া) গ্রামের আলু চাষি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, দুই বিঘা জমিতে আলু লাগাই, অধিকাংশ আলু বিক্রি হয়েছে। বর্তমানে পাইকারী পর্যায়ে প্রতি কেজি আলু ৩০ থেকে ৩২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আলু বিক্রির টাকায় স্ত্রী ও সন্তানদের ঈদের বায়না নতুন পোশাকসহ আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র কিনতে পৌর শহরের মার্কেটে আসতে হয়েছে।
পলিপাড়া গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ঘরে আলু না থাকলে এবার রোজায় না খেয়ে থাকতে হতো। আর ঈদে স্ত্রী ও ছেলেমেয়ের জামা-কাপড় কেনার কোনো উপায় ছিল না। আলু বিক্রি করে সেই টাকা দিয়ে ফুলবাড়ী শহরের মার্কেট থেকে স্ত্রী ও ছেলেমেয়েদের জন্য ঈদের জামা-কাপড় কিনে দিতে হয়েছে।
নয়াশতাব্দী/এনএইচ/এনএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ