ঢাকা, শনিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৪, ২০ আশ্বিন ১৪৩১, ১ রবিউস সানি ১৪৪৬

তীব্র তাপদাহে দুপুরেই ফাঁকা সড়ক, তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি 

প্রকাশনার সময়: ০৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৯:৩৮

এপ্রিলের প্রথম দিন থেকেই ঈশ্বরদীর ওপর দিয়ে বইছে মাঝারি তাপপ্রবাহ। পাবনার ঈশ্বরদীতে গরমের শুরুতেই তীব্র রোদে তেঁতে উঠেছে। প্রতিদিনই যেন বাড়ছে দিনের তাপমাত্রা। তীব্র গরমের কারণে বাসা থেকে বের হচ্ছেন না অনেকে। তাই দুপুর হতেই ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে মহানগরের প্রধান সড়কগুলো।

শনিবার( ৬ মার্চ) বিকেল ৩টায় দিনের ঈশ্বরদীতে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চলতি মওসুমের এটিই ঈশ্বরদীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।

ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিসের সহকারী পর্যবেক্ষক নাজমুল হক রঞ্জন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) ঈশ্বরদীতে ৩৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এর আগে, ১ এপ্রিল চলতি বছরে দেশের সর্বোচ্চ ৩৯ ডিগ্রি তাপমাত্রা ঈশ্বরদীতে রেকর্ড করা হয়। অন্য বছর আবহাওয়ার কিছুটা তারতম্য লক্ষ্য করা গেলেও এবার এপ্রিলের শুরুতেই সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় পুড়ছে ঈশ্বরদী। গরম বাতাস যেন শরীরে বিঁধছে আগুনের হল্কার মত। এতে হাঁপিয়ে উঠেছে শ্রমজীবীরা।

তীব্র রোদ ও গরমে রমজানের রোজাদারদের অবস্থাও কাহিল হয়ে পড়েছে। তাপপ্রবাহের কারণে দুপুরের পর প্রধান প্রধান সড়ক ফাঁকাই থাকছে। গরমে অনেককে ক্লান্ত শরীরে গাছের ছায়ায় বসে থাকতে দেখা যায়। তবে রিকশাচালকদের তীব্র রোদ উপেক্ষা করেই রিকশা চালাতে দেখা গেছে। তাপপ্রবাহের কবলে পড়েছেন দিনমজুর ও খেটে খাওয়া অন্য পেশার মানুষেরাও।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, সাধারণত দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে হলে তাকে মৃদু তাপপ্রবাহ বলা হয়। তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তাকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বলা হয়। এছাড়া ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রাকে তীব্র তাপপ্রবাহ হিসেবে ধরা হয়। আর তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপর উঠলেই তাকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিসের সহকারী পর্যবেক্ষক নাজমুল হক রঞ্জন জানান, শনিবার বিকেল ৩টায় সর্বোচ্চ ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। চলতি মওসুমে এ পর্যন্ত এটিই ঈশ্বরদীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। গত কয়েক দিনের তাপদাহে শহরের পোস্ট অফিস মোড় সংলগ্ন ঈশ্বরদী-পাবনা মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে বিটুমিন গলে যেতে শুরু করেছে। এতে সড়কে চলাচলকারী যানবাহনের চাকায় পিচ আটকে যাচ্ছে। ফলে চালকরা ধীর গতিতে গাড়ি চালাচ্ছে। তীব্র খরায় ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় টিউবওয়েলে পানি উঠছে না। ফলে উপজেলাজুড়ে তীব্র পানি সংকট দেখা দিয়েছে।

পৌর সভার পানি বিভাগের সহকারি প্রকৌশলী প্রবীর বিশ্বাস বলেন, সাপ্লাই লাইনে পানি সরবরাহের জন্য সবকটি মেশিন চালিয়েও পানি সরবরাহ করতে কষ্ট হচ্ছে। খরা মৌসুমের শুরুতেই এবারে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর অনেক নীচে নেমে গেছে।

ঈশ্বরদী রেলওয়ে মালগুদাম সেডে রেলের মালামাল খালাসের কাজে নিয়োজিত কুলি মখলেসুর রহমান বলেন, তীব্র রোদে বাতাস গরম। শরীর ঝলসে যাওয়ার মতো অবস্থা। শরীর দিয়ে অঝোড় ধারায় ঘাম ঝরছে। কাজ করতে খুবই কষ্ট হচ্ছে। গত কয়েকদিন ধরেই মাঝারি তাপমাত্রা বিরাজ করছে ঈশ্বরদীতে।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, কত দুই সপ্তাহ ধরেই ঈশ্বরদীর ওপর দিয়ে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের এর উপরে মাঝারি তাপপ্রবাহ চলছে। শনিবার সেটি তীব্র ৪০ ডিগ্রী তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এছাড়া আরও অন্তত ৩-৪ দিন তাপমাত্রা বাড়তে পারে। এ সময়ের মধ্যে এ অঞ্চলে কোনো বৃষ্টি হওয়ার সম্ভবনা নেই। তবে কালবৈশাখী বয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

নয়া শতাব্দী/এসএ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ