ঢাকা, রবিবার, ১২ জানুয়ারি ২০২৫, ২৮ পৌষ ১৪৩১, ১১ রজব ১৪৪৬

মিরসরাইয়ে বিদ্যুতের লোডশেডিং, চরম দুর্ভোগ

প্রকাশনার সময়: ০৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৭:৫৩ | আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৯:১৫

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে পবিত্র রমজান মাসের শেষের দিকে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠি হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ।

প্রতিদিন কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে দফায় দফায় বিদ্যুৎ যাওয়া আসা করায় গরমে জীবন অতিবাহিত করা দুষ্কর হয়ে পড়েছে। শীত শেষে গ্রীষ্ম মৌসুমের শুরুতে তীব্র দাবদহের মধ্যেই পবিত্র রমজান মাসে রোজা রাখছে মানুষ। রমজানের শুরুর দিকে তেমন লোডশেডিং না থাকলেও শেষের দিকে এসে তা দুষ্কর আকার ধারণ করেছে। সেহেরি, তারাবি ও ইফতারের সময় অনেক স্থানে বিদ্যুৎ না থাকায় ক্ষোভে ফুঁসছেন মুসল্লিরা।

আসন্ন ঈদ বাজারেও এর ব্যাপক প্রভাব পড়ছে। বিদ্যুৎ না থাকায় গরমে মার্কেটগুলোতে ক্রেতাদের সমাগম কম হচ্ছে। ফলে লোকসান গুনতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। ক্ষুদ্র মাঝারি ব্যবসায়ীরা হতাশায় দিন অতিবাহিত করছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিদিন কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে ৫ থেকে ৬ বার বিদ্যুৎ যাওয়া আসা করে। উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসাভায় একই চিত্র লক্ষ্য করা গেছে। অনেক স্থানে সেহেরি, তারাবি ও ইফতারে সময় বিদ্যুৎ যাওয়া আসা করে বলে অনেকেই অভিযোগ করছেন।

অন্যদিকে, সারাদিন রোজা শেষে ইফতারের পর সন্ধ্যায় মার্কেটে ক্রেতা সাধারণের আনাগোনা বেশি থাকে। দিনের ক্লান্তি শেষে ইফতারের পর অনেকে কেনাকাটা করতে পছন্দ করলেও বিদ্যুৎ না থাকলে তীব্র গরমে দোকানগুলোতে ক্রেতারা যেতে চান না বলে অভিযোগ বিক্রেতাদের। ফলে লোকসানের আশঙ্কা করছেন তারা।

এদিকে, হঠাৎ লোডশেডিংয়ের ফলে বেড়েছে মোমবাতি ও চার্জলাইটের কদর। চাহিদা না থাকায় বাজারে সংকট দেখা গেছে এ গৃহস্থলী পণ্যের। বাজারে কয়েকটি দোকান ঘুরেও পাওয়া যাচ্ছে না। এর সুযোগ নিয়ে বাড়তি দামে বিক্রয় করছেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, বাজারে চাহিদা না থাকায় পণ্যগুলো দোকানে তেমন একটা রাখা হয় না। রাখলেও বিক্রি হয় না। ফলে অনেক পণ্য নষ্ট হয়।

একাধিক ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে বলেন, আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ধার দেনা করে দোকানে বিনিয়োগ করেছেন কিন্তু লোডশেডিংয়ের কারণে প্রচন্ড গরমে ক্রেতা শূন্য মার্কেট। এ অবস্থায় হতাশা ও অনিশ্চয়তায় দিন পার করছেন তারা। লাভ তো দূরের কথা পুঁজি উঠাতে পারবেন কি না সেই চিন্তায় রয়েছেন।

দুর্গাপুর, মিঠানালা, হাইতকান্দি, সাহেরখালী ইউনিয়নের একাধিক রোজাদার ও মুসল্লীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পবিত্র রমজানের মাসে মানুষ আল্লহর সন্তুষ্টি অর্জনে এবাদত করবে মানুষ। বছর শেষে একবার আশে রমজান মাস। অন্তত এ মাসে শতভাগ বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারতো। তারা সেটাও দিতে পারে না। তাহলে দেশ আর উন্নত হইলো কই। শান্তিমতো সেহরি ও ইফতার করবে মানুষ সেই টাইমে বিদ্যুৎ থাকে না। আমরা লোডশেডিংয়ের থেকে বাঁচতে চাই, নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুত চাই।

ইছামতি গ্রামের বাসিন্দা ফেরদৌস এয়ার আলী বলেন, তীব্র গরমে সারাদিন রোজা রেখে অস্থির লাগে। ঠিকমত কারেন্টও থাকে না সারাদিন তো যাওয়া আসা করে। সন্ধ্যার পর ৫ থেকে ৬ বার আসে আর যায়। অনেক সময় তারাবি, সেহেরি ও ইফতারেও সমস্যা করে।

পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের জোনাল কর্মকর্তা আদনান আহমদ জানান, জাতীয় গ্রিডে জেনারেশন কম থাকায় লোড বরাদ্দ কম পাওয়া যাচ্ছে। চাহিদার চেয়ে কম বিদ্যুত বরাদ্দের কারণে সাময়িকভাবে লোডশেডিং হচ্ছে। আমরা পর্যায়ক্রমে সবাইকে এলাকাভিত্তিক সমহারে বিদ্যুৎ সরবরাহ করার চেষ্টা করছি। আমাদের এখানে কোনো কারিগরি ত্রুটি নেই। আশা করছি অতি দ্রুত লোডশেডিং সমস্যার সমাধান হবে।

নয়া শতাব্দী/এনএইচ/এসআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ