ঢাকা, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কা, ব্যাংকের কার্যক্রম বন্ধ

প্রকাশনার সময়: ০৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৩:৩৪

সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কায় বান্দরবানের রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচি উপজেলায় ব্যাংকিং কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। বন্ধ রয়েছে কৃষি ও সোনালী ব্যাংকও। একই সাথে জেলা সদরের প্রতিটি ব্যাংক এবং এটিএম বুথে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

নিরাপত্তার কারণে এ তিনটি উপজেলার ব্যাংকগুলোর ১৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এবং ভল্টে থাকা নগদ টাকা জেলা সদরে নিয়ে আসা হয়েছে। ঈদ মৌসুমে ব্যাংকগুলোর কার্যক্রম বন্ধ থাকায় গ্রাহকদের দুর্ভোগ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।

তবে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বন্ধ থাকা তিনটি উপজেলার ব্যাংকগুলোর গ্রাহকরা জেলা সদরের সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেন করতে পারবে। এছাড়া লামা, আলীকদম ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় স্বাভাবিক নিয়মে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালিত হবে।

খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার সোনালী ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক সমীর কান্তি চাকমা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বান্দরবানের ঘটনার পর ব্যাংকের ভার্চুয়ালি সভা হয়েছে। সেখানে নিরাপত্তা বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। আমাদের ব্যাংকের নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থাও রয়েছে।’

ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের খাগড়াছড়ি শাখার ব্যবস্থাপক সারোয়ার আলী খান বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার দিকে আমাদের কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তা বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন। তবে যেহেতু জেলা শহরে আছি, তাই নিরাপত্তা নিয়ে তেমন শঙ্কা করছি না। কিন্তু সতর্ক আছি। নিরাপত্তা কর্মীর সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। আজ থেকে দুজন গানম্যান দায়িত্ব পালন করবে। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।’

খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার মুক্তা ধর বলেন, ‘আমরা সবাইকে ম্যাসেজ দিয়েছি, তারা যেন সতর্ক থাকে। যতটুকু নিরাপত্তা দরকার ততটুকু নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’

ডাচ বাংলা ব্যাংক খাগড়াছড়ি জেলা শাখার ব্যবস্থাপক মো. নুরুউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘সকাল থেকে একাধিকবার পুলিশ সদস্যরা ব্যাংক পরিদর্শন করেছে। সরকারিভাবেই নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। ফলে নিরাপত্তা নিয়ে সংকট নেই। এছাড়া ব্যাংকের নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে।’

জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান বলেন, ‘অলরেডি বিভিন্ন ব্যাংকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ব্যাংকগুলোতে পুলিশের সদস্য সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে কোর কমিটির মিটিংয়েও ব্যাংকের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা হবে।’

মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) রাতে তারাবি নামাজের সময় বান্দরবানের রুমা শাখা সোনালী ব্যাংক ও আশপাশের এলাকা ঘিরে ফেলে শতাধিক সশস্ত্র দুর্বৃত্ত। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মসজিদ থেকে ব্যাংক ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনকে ধরে নিয়ে ব্যাংকের ভেতরে মারধর করে তারা। পরে তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এ সময় ব্যাংকের নিরাপত্তায় নিয়োজিত ১০ পুলিশ ও ৪ আনসার সদস্যকে নিরস্ত্র করে ৮টি চাইনিজ অটোমেটিক রাইফেল, ২টি এসএমজি, ৪টি শটগান ও ৪১৫ রাউন্ড গুলি ছিনিয়ে নেওয়া হয়। এছাড়া বুধবার (৩ এপ্রিল) থানচি উপজেলার কৃষি ও সোনালী ব্যাংকে পুনরায় হামলা চালিয়ে প্রায় ১৮ লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। এ সময় ২ পুলিশ সদস্য আহত হন। এ ঘটনার পর সেখানে এখন থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

এদিকে ঘটনার তিনদিন পরও খোঁজ মেলেনি রুমা উপজেলার সোনালী ব্যাংকের অপহৃত ম্যানেজার নিজাম উদ্দিনের। তাকে উদ্ধারে নিরাপত্তা বাহিনী যৌথ অভিযান পরিচালনা করছে। এছাড়া বান্দরবানের রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচি উপজেলায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সেখানে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশ টহল দিচ্ছে। জেলা সদর থেকে নেওয়া হয়েছে এপিবিএন সদস্যদের। রুমা ও থানচি উপজেলায় পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পরিদর্শন করছেন।

নয়াশতাব্দী/টিএ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ