বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের বীজ উৎপাদন কেন্দ্রের দেবীগঞ্জ অফিসের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তার কক্ষ থেকে টাকাসহ গুরুত্বপূর্ণ নথি চুরির অভিযোগ উঠেছে। এরপর তদন্তের জন্য ৫ সদস্যের কমিটির গঠন হয়েছে। তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও তারা জানেন না কি নথি ও কত টাকা হারিয়েছে।
তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন, মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. অমল কুমার দাস, বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোসাদ্দিকুর রহমান রাহি, ভিগুরাম বর্মণ, বৈজ্ঞানিক সহকারী মোসাদ্দেকুর রহমান ও অফিস সহকারী গোলাম রাব্বানি। তবে নথি ও টাকা চুরির বিষয়ে তদন্ত শুরু হলেও কি নথি ও কত টাকা হারিয়েছে এ বিষয়ে জানেন না তদন্ত কমিটির সদস্যগণ। সংবাদকর্মীরা তদন্ত কমিটি ও তদন্ত শেষে প্রতিবেদনের কাগজপত্র দেখতে চাইলে কাগজও দেখাতে পারেননি তারা।
জানা গেছে, গত ১৭ই জানুয়ারি অফিসের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তার কক্ষ থেকে টাকা ও মূল্যবান কিছু নথি চুরি হয়। মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা খোরশেদুজ্জামানের দেবীগঞ্জ অফিস থেকে রংপুর বুড়িরহাট অফিসে বদলী হওয়ার খবর নিশ্চিত হলে বিষয়টি প্রকাশ করে কর্মচারীরা। এ নিয়ে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
তদন্তের বিষয়ে বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোস্তাদ্দিকুর রহমান রাহি টাকা ও নথি চুরির বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, কত টাকা চুরি হয়েছে বা কি নথিপত্র চুরি হয়েছে সেটি স্যার আমাদের অবগত করেননি। এ অবস্থায় তদন্ত প্রতিবেদন কর্তৃপক্ষের নিকট জমা দেওয়া হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অফিসের একাধিক কর্মচারী জানান, ঘটনার কয়েকমাস আগে থেকে অফিসের সিসি ক্যামেরা নষ্ট ছিল। তবে আশ্চর্যজনক বিষয় হলো- যে কক্ষে চুরি হয়েছিল, সে কক্ষের দরজার তালা সম্পূর্ণ অক্ষত অবস্থায় ছিল। এ সময় অফিসের ড্রয়ার ও আলমারির তালা খোলা ছিল। আসল ঘটনাকে চাপা দিতে চুরির নাটক সাজানো হয়েছে বলে তারা মনে করছেন।
তৎকালীন দায়িত্বে থাকা হিসাব রক্ষক আজাহারুল ইসলাম জানান, অফিসের নিয়ম অনুযায়ী আর্থিক সংশ্লিষ্ট হিসাব অফিসের হিসাব রক্ষকের কাছে থাকার কথা থাকলেও মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা খোরশেদুজ্জামান অফিসিয়াল কাজে ব্যয়ের কথা বলে ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা আমার কাছ থেকে স্বাক্ষর করে নেন।
মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. একেএম খোরশেদুজ্জামান জানান, চুরির বিষয়ে আইনি কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তদন্ত কমিটি ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ প্রয়োজন মনে করলে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। দোষ যিনিই করুক না কেন আমি তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।
দায়িত্বপ্রাপ্ত মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. অমল কুমার দাস জানান, কক্ষের ভিতরের অবস্থা দেখে কোনোভাবে মনে হয়নি যে বাইরের কেউ ঢুকে চুরি করেছে। কারণ সে সময় কর্মকর্তা কক্ষের কাজ শেষে বের হবার পর ওই কক্ষ তালাবন্ধ ছিল। এ ঘটনায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অভিযোগ বা মামলা করতে নির্দেশ না দেওয়ায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে তিনি জানান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক ড. দেবাশীষ সরকার জানান, এই বিষয়ে ইতোপূর্বে কেউ আমাদের অবগত করেনি।
নয়া শতাব্দী/এসএ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ