ঈদুল ফিতর সামনে রেখে ক্রেতাদের ভিড়ে জমে উঠেছে ময়মনসিংহের ঈদের বাজার। নগরের ফুটপাত থেকে শুরু করে বিভিন্ন মার্কেট ও শপিংমলের বিপণিবিতানগুলো এখন জমজমাট। তবে অন্যবারের চেয়ে এবার দাম প্রায় দ্বিগুণ বলে দাবি করেছেন ক্রেতারা।
ঈদের আমেজ সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে ব্যবসায়ীরা জানান, এবারের ঈদে গ্রাহকদের চাহিদামতো পণ্য সরবরাহে ব্যবসায়ীরা নতুনভাবে পুঁজি বিনিয়োগ করায় ইতোমধ্যে বাজারে নতুনত্ব এসেছে। ঈদের দুদিন পর বাংলা নববর্ষ হওয়ায় পোশাক পছন্দের ক্ষেত্রে অনেকটা বৈশাখের আমেজও লক্ষ্য করা গেছে। পোশাকের পাশাপাশি ময়মনসিংহের বিভিন্ন মার্কেটে প্রসাধনী, জুতা ও গয়নার দোকানেও বেড়েছে ক্রেতাদের ভিড়।
বুধবার (৩ এপ্রিল) নগরের গাঙ্গিনারপাড়, নতুন বাজার, চরপাড়া ও ট্রাকপট্টি এলাকার দোকান মার্কেট ও শপিং মলগুলোতে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, অনেকেই পরিবার পরিজন নিয়ে ঈদের কেনাকাটা করতে এসেছেন। বেশি ভিড় লক্ষ্য করা গেছে, নারীদের শাড়ি, থ্রিপিসসহ বিভিন্ন পোশাক, জুতা ও প্রসাধনী সামগ্রীর দোকানগুলোতে। শপিংমলের পাশাপাশি ফুটপাতের দোকানগুলোতেও ছিল ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়।
নিজের পাশাপাশি প্রিয়জনকে ঈদ উপহার দিতে ময়মনসিংহের বিভিন্ন মার্কেট ও ফ্যাশন হাউসগুলোতে ছুটছেন ক্রেতারা। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ক্রেতা সমাগমে সরগরম প্রতিটি জামা-কাপড়ের দোকান ও শো-রুম। এ বছর সাধারণ সময়ের চেয়ে সব ধরনের পোশাকের দাম দেড় থেকে দ্বিগুণ বেশি রাখছেন দোকানিরা বলে অভিযোগ করেছেন ক্রেতারা।
এবারের ঈদে ময়মনসিংহের ফ্যাশন হাউসগুলোতে গরমের কথা মাথায় রেখে ছেলেদের জন্য পাতলা জিন্স, গ্যাবাডিনের প্যান্ট ও কটন ফেব্রিকসের মধ্যে নতুন নতুন ডিজাইনের পাঞ্জাবি, শার্ট ও গেঞ্জি সরবরাহ করা হয়েছে। আবার মেয়েদের জন্য দেশি সুতি থ্রি পিসের সঙ্গে ভারতীয় নায়রাকাট, কাঁচা বাদাম, পুষ্পা, অরগেনজা, জয়পুরি ও পাকিস্তানি শারারা-গারারাবেশি বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে, পোশাকের রং ও ধরনের সঙ্গে মিল রেখে তরুণী ও নারীরা কিনছেন বিভিন্ন গয়না, গলার সেট, হাতঘড়ি, পায়েল, ব্রেসলেট, মাথার টিকলি, সানগ্লাস ও বাহারি রঙের চুড়ি।
বিভিন্ন শো-রুমে মেয়েদের থ্রি-পিস ১ হাজার থেকে ১৫ হাজার, শাড়ি ৮০০ থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও ছেলেদের পাঞ্জাবি ৮০ থেকে ১০ হাজার, শার্ট ও গেঞ্জি বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত।
নগরীর মফিজ উদ্দিন প্লাজার এক বিক্রেতা জানান, গরম বাড়ছে, তাই গরমে পরার উপযোগী পোশাকগুলোই তারা তাদের দোকানে সাজিয়েছেন। ক্রেতারাও গরমে আরামদায়ক হবে এমন পোশাক কিনছেন।
এদিকে ঈদ সামনে রেখে মধ্যবিত্তের শেষ ভরসা হয়ে উঠেছে ফুটপাতের বাজারগুলো। শখ ও সাধ্যের মধ্যে যতটা সম্ভব মিল ঘটাতেই নিম্ন আয়ের ক্রেতাদের প্রথম পছন্দ ফুটপাতের দোকানগুলো। বিক্রেতাদের দাবি ফুটপাতের দোকানে দাম তেমন বাড়েনি।
জসিম নামে গাঙ্গিনারপাড়ের ফুটপাতের দোকানের বিক্রেতা জানান, যাদের আয়-রোজগার কম তারাই মূলত ফুটপাতের দোকানগুলোতে কেনাকাটা করতে আসেন। আমরাও তাদের কাছে সীমিত লাভে পণ্য বিক্রি করে থাকি।
নগরীর গাঙ্গিনারপাড়ে মার্কেট করতে আসা স্কুল শিক্ষক শফিকুল ইসলাম, ছাইদুল ইসলাম ও এমরান হোসেন আকন্দ নামে ক্রেতারা বলেন, শপিংমলগুলোতে কালেকশন মোটামুটি ভালো। তবে দাম আমাদের নাগালের বাইরে।
নগরীর বারী প্লাজায় নিজের এবং স্বামী-সন্তানের জন্য শপিং করতে আসা নারী শিক্ষক জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, পোশাকের দাম আগের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে। সকালে বাসা থেকে বের হয়ে দুপুর পর্যন্ত ঘুরেছেন বিভিন্ন মার্কেট ও শপিংমলে। শেষে পছন্দের ঈদ পোশাক কিনে বাড়ি ফিরছেন তারা।
নয়া শতাব্দী/এসএ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ