ঢাকা, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আত্মহত্যা করলে ঋণ মাফ করবে, মারপিটের পর বললেন ব্র্যাকের কর্মী

প্রকাশনার সময়: ০২ এপ্রিল ২০২৪, ১৯:২৫ | আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০২৪, ১৯:২৭

নড়াইলের লোহাগড়ায় কিস্তির টাকা পরিশোধ না করায় রবিউল ইসলাম নামে এক সেবাগ্রহীতাকে মারপিট ও হুমকি-ধামকির ঘটনা ঘটেছে। এ নির্যাতনে ভুক্তভোগী রবিউল সইতে না পেরে বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। গুরুতর অবস্থায় তাকে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ ভর্তি করা হয়; তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন আছেন।

জানা গেছে, এর আগে দাতব্য সংস্থা ব্র্যাক অফিস থেকে নেওয়া লোন এর গত মার্চ মাসের একটি কিস্তি দিতে ব্যর্থ হন রবিউল। আর এতেই রবিউলকে মারপিটের পাশাপাশি অকথ্য গালিগালাজসহ বিষ খেয়ে আত্মহত্যার পরামর্শও দেন ব্র্যাক অফিসের কর্মী সেলিম ও প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজার জামিনুর রহমান। এতে অপমানিতবোধ করে বাজার থেকে বিষ কিনে পান করে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন তিনি।

এ ঘটনায় আহত রবিউল ইসলামের স্ত্রী রেবেকা লোহাগড়া থানায় ব্র্যাক অফিসের ম্যানেজার এবং কর্মীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

ভুক্তভোগী সূত্রে অভিযোগ, গত ২-৩ মাস আগে লোনটি তোলেন, এবং ২ মাসে ২ টি কিস্তি পরিশোধ করেন রবিউল। কিন্তু গত মার্চ মাসের কিস্তি দিতে ব্যর্থ হন তিনি।

এতে রবিউল ইসলাম অফিসে ডেকে নিয়ে আসেন ম্যানেজার জামিনুর রহমান এবং কর্মী সেলিম। একপর্যায়ে রবিউলকে পাশের ১ টি রুমের মধ্যে নিয়ে মারপিট করেন ওই দুই কর্মী। শুধু তাই নয়, ব্রাক অফিসের কর্মী সেলিম ৩৪টি মার্ডার করে ব্র্যাক অফিসে চাকরি করতে এসেছেন বলেও রবিউলকে ভয়ভীতি দেখানো হয়। এ সময় সংশ্লিষ্ট ওই দুই কর্মী রবিউলকে জানায়, বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করলে তার (রবিউলের) ঋণের টাকা মাফ করে দেবেন।

এমন পরিস্থিতি রবিউল সইতে না পেরে ব্র্যাক অফিস থেকে বের হয়ে লোহাগড়া বাজার থেকে ধানে ব্যবহার করা বিষ কেনেন। বাড়িতে যেয়ে কাউকে না জানিয়ে ওই বিষ খেয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন রবিউল।

বিষ পানের বিষয়টি পরিবারের লোকজন জানতে পেরে রবিউল ইসলামকে উদ্ধার করে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ নিয়ে এসে তাকে সেখানে ভর্তি করেন, এরপর রবিউল ইসলামের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসা দেয়ার জন্য খুলনায় ২৫০ শয্যা মেডিকেল হাসপাতালে পাঠায়।

এদিকে ব্র্যাক অফিসে সাংবাদিকরা গেলে সেখানে আরও দুইজন গ্রাহকের হয়রানির অভিযোগ উঠে আসে।

এ বিষয়ে লোহাগড়া ব্র্যাক অফিসের ম্যানেজার জামিনুর রহমান ও মাঠকর্মী সেলিম এর সাথে কথা বলার জন্য অফিসে গেলে তারা সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে সেখান থেকে সটকে পড়েন। এরপর একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে প্রথমে ফোনে রিং ঢোকে পরবর্তীতে ফোন বন্ধ দেখায়।

এ বিষয়ে ব্র্যাক অফিসের প্রসেসিং অফিসার নাজমিন আক্তার বলেন, অফিস থেকে গ্রাহকদের সাথে খারাপ ব্যবহারের কোন সুযোগ নেই, যদি কেউ গ্রাহকের সাথে খারাপ ব্যবহার করে তার বিরুদ্ধে আমাদের অফিসিয়ালি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ ঘটনায় নড়াইল জেলা ব্র্যাক সমন্বয়কারী অফিসার জাহিদ হোসেন বলেন, কি ঘটনা ঘটেছে আমরা বিষয়টি জেনে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

এ বিষয়ে লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি কাঞ্চন কুমার রায় বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নয়াশতাব্দী/ডিএ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ