চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগে অভিযুক্ত স্বামী মোহাম্মদ সালা উদ্দীনকে (৩৫) আটক করেছে থানা পুলিশ।
মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) দুপুরে সালা উদ্দীনকে জেল হাজতে পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কামাল উদ্দিন।
এর আগে সকাল ১১টার দিকে উপজেলার বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নের পিএইচপি গেইট এলাকার চারের কান্দি থেকে তাকে আটক করে পুলিশ।
এদিকে এ ঘটনায় মঙ্গলবার স্বামী মোহাম্মদ সালা উদ্দিনকে প্রধান আসামি করে শ্বশুর নুর সোলেমানের নাম উল্লেখ করে সীতাকুণ্ড মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী ফারজানা আক্তার।
আটক মোহাম্মদ সালা উদ্দীন উপজেলার বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নের নড়ালিয়া গ্রামের ৯নং ওয়ার্ডের নুর সোলেমানের ছেলে।
তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সর সাবেক স্বাস্থ্য সহকারী এবং দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে সতন্ত্র এমপি প্রার্থী ছিলেন।এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফারজানার ছোট ভাই ইউসুফ বেলাল ছোটন মুঠোফোনে জানান, ২০০৯ সালে ফেব্রুয়ারির ৬ তারিখ পারিবারিকভাবে সালাউদ্দিনের সাথে আমার বোনের বিয়ে হয়। তাদের দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছেন। আমার বোন উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগে চাকুরী করেন। তার স্বামী প্রায় সময় বোনকে টাকা দিতে চাপ প্রয়োগ করত। গত রোববার টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আমার বোনকে তার স্বামী সালাউদ্দিন ও তার শ্বশুর নুর সোলেমান মাথায় কুপিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করেন। গত ৩১ এপ্রিল আমার বড় বোন ফারজানাকে মাথা পাঠিয়ে রক্তাক্ত করেন তারা। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। তাদের চাকুর আঘাতে তার মাথায় ৬টি সেলাই, চোখ ও মুখ কেটে যায়।
এ বিষয়ে সীতাকুণ্ড মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল উদ্দিন জানান, আটক সালাউদ্দিন তার স্ত্রীর কাছ থেকে টাকা না পেয়ে মারাত্মকভাবে কুপিয়েছে। এর আগে তার ভাই ও এলাকাবাসীকে কোপাচ্ছে। সে যেকোনো সময় আরও বড় ধরনের ঘটনা ঘটাতে পারে। ভুক্তভোগী স্ত্রী হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে থানায় এসে মামলা দায়ের করার পর তাকে তার ফার্মেসী থেকে আটক করা হয়। দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
গত সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হন সালাউদ্দিন। এরপর মনোনয়নপত্রে সরকারি কর্মচারী হিসেবে চাকরিতে থাকার তথ্য গোপন করে চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড ও চট্টগ্রাম নগরের আংশিক) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মোহাম্মদ সালাউদ্দিন আদালতের যে আদেশে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছিলেন, পরে তা প্রত্যাহার করা হয়েছে।
এরপর আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম রোববার এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে আদালত সালাউদ্দিনকে খরচ হিসেবে এক লাখ টাকা সাত দিনের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের ডে কেয়ার সেন্টারে জমা দিতে বলেছেন।
এ ছাড়া স্বাস্থ্য সহকারী হিসেবে চাকরিরত সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে তদন্ত করে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও চট্টগ্রামের সিভিল সার্জনকে নির্দেশ দেওয়া হয়।
নয়াশতাব্দী/টিএ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ