কক্সবাজারের উখিয়ায় সংরক্ষিত বনের পাহাড় কেটে মাটি পাচারকালে আটকানোর সময় ডাম্প ট্রাকের চাপায় বনবিট কর্মকর্তার হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন বন কর্মকর্তা, কর্মচারি সহ পরিবেশ ও বন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার প্রতিনিধিরা।
মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) দুপুরে কক্সবাজার শহীদ সরণীস্থ বনবিভাগীয় কার্যালয়ে সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এমন দাবি জানানো হয়।
আয়োজিত মানববন্ধনে কক্সবাজার চলাচলকারি অবৈধ ড্রাম্প ট্রাক বন্ধ করার দাবিও জানানো হয়।
প্রায় ৫ শতাধিক বনকর্মীর উপস্থিতিতে আয়োজিত মানববন্ধনের শুরুতে নিহতের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। এতে বক্তারা বলেন, কক্সবাজারে সংঘবদ্ধ চক্র বেপরোয়াভাবে পাহাড় কাটা অব্যাহত রেখেছে। এই সংঘবদ্ধ চক্রের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক অভিযানে ক্ষুব্দ হয়ে পরিকল্পিতভাবে বিট কর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামিদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়।
এ সময় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন- কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগীয় কর্মকর্তা মো. সরওয়ার আলম, উত্তর বনবিভাগীয় কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন সরকার, কক্সবাজার প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. মুজিবুল ইসলাম, কক্সবাজার বন ও পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি দীপক শর্মা দীপু সহ অন্যান্যরা।
রোববার (৩১ মার্চ) ভোরে উখিয়া উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের হরিণমারা এলাকায় পাহাড় কেটে মাটি পাচার করছিল একদল বনদস্যু। খবরে পেয়ে বনবিভাগের দোছড়ি বিটের কর্মকর্তা মো. সাজ্জাদুজ্জামান (৩০) সহ কয়েকজন বনকর্মী ঘটনাস্থলে যান। এ সময় তিনিসহ মোটরসাইকেল আরোহী দুইজনকে পাচারকারিদের মাটিভর্তি ডাম্পট্রাক চাপা দেয়। এতে সাজ্জাদুজ্জামান ঘটনাস্থলে মারা যান এবং মোহাম্মদ আলী নামের এক বনরক্ষী আহত হন।
নিহত মো. সাজ্জাদুজ্জামান কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের উখিয়া রেঞ্জের দোছড়ি বনবিটের বিট কর্মকর্তার দায়িত্বে ছিলেন। তিনি মুন্সিগঞ্জ জেলার গজরিয়া উপজেলার মোহাম্মদ শাহজাহানের ছেলে।
এ ঘটনায় আহত বনরক্ষী মোহাম্মদ আলী (২৭) টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের ঝিমংখালী এলাকার আবুল মঞ্জুরের ছেলে।
উখিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. শফিউল আলম বাদী হয়ে ১০ জনের বিরুদ্ধে উখিয়া থানায় মামলা করেছেন।
মামলার আসামিরা হলেন- উখিয়া উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের পশ্চিম হরিণমারা এলাকার মোহাম্মদ কাশেমের ছেলে ও ডাম্পার ট্রাকটির চালক মো. বাপ্পী (২৩), একই এলাকার সুলতান আহম্মদের ছেলে ছৈয়দ আলম ওরফে কানা ছৈয়দ (৪০) ও তার ছেলে মো. তারেক (২০), রাজাপালং ইউনিয়নের তুতুরবিল এলাকার নুরুল আলম মাইজ্জার ছেলে হেলাল উদ্দিন (২৭), হরিণমারা এলাকার মৃত আব্দুল আজিজের ছেলে ছৈয়দ করিম (৩৫), একই এলাকার আব্দুল আজিজের ছেলে আনোয়ার ইসলাম (৩৫), আব্দুর রহিমের ছেলে শাহ আলম (৩৫), হিজলিয়া এলাকার ঠান্ডা মিয়ার ছেলে মো. বাবুল (৫০), একই এলাকার ফরিদ আলম ওরফে ফরিদ ড্রাইভারের ছেলে মো. রুবেল (২৪) এবং হরিণমারা এলাকার শাহ আলমের ছেলে কামাল উদ্দিন ড্রাইভার (৩৯)।
মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন- এজাহারভুক্ত ৫ নম্বর আসামি ছৈয়দ করিম (৩৫)। জব্দ করা হয়েছে ড্রাম্প ট্রাকটিও।
উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শামীম হোসেন বলেন, মামলার অপর আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
নয়াশতাব্দী/টিএ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ