বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েটে) ভর্তি পরীক্ষায় ১০৪১তম হয়েছেন মিরাজ বাবু। তবে বুয়েটে চান্স পেয়েও টাকার অভাবে ভর্তি ও পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে এ মেধাবী শিক্ষার্থীর। আগামী ২৮ মার্চ বুয়েটের ভর্তির শেষ সময়।
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধার ফকির পাড়া গ্রামের আতোয়ার রহমান ও মা মরিয়ম বেগমের ছেলে মিরাজ বাবু। তিনি বড়খাতা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০২১ সালে এসএসসিতে জিপিএ ৪.৭২ ও হাতীবান্ধা সরকারি আলিমুদ্দিনের ডিগ্রি কলেজ থেকে ২০২৩ সালে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন।
মিরাজের বাবা একজন বর্গা চাষি। নিজের জায়গা জমি বলতে কিছুই নেই বাড়ি ভিটা ছাড়া। অন্যের জমি বর্গা নিয়ে তিনি চাষাবাদ করেন। মিরাজের বড় বোন আয়েশা সিদ্দিকার টিউশনির টাকা ও সে নিজে টিউশনি করে এত দিন পড়াশুনা চালিয়ে আসছেন। দারিদ্র্যের সঙ্গে সংগ্রাম করে এতদূর এগিয়ে আসার পরও অর্থ-সংকটে প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ও পড়াশোনার উচ্চ শিক্ষার স্বপ্ন পূরণে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে মিরাজের।
মিরাজের বাবা আতোয়ার রহমান বলেন, অন্যের জমিতে চাষাবাদ করে কোনো রকম সংসার চালাই। এখন ছেলে বুয়েটে চান্স পেয়েছে, তার ভর্তি ও পড়াশোনার খরচ চালানোর মতো সাধ্য আমার নেই। কেউ যদি সাহায্য করে তাহলে ছেলেকে পড়াশোনা করাতে পারবো।
মিরাজ বাবু বলেন, অষ্টম শ্রেণি পাস করার পর থেকে আমি টিউশনি করাই। সেই টাকা দিয়ে কষ্ট করে পড়াশোনা করছি। এতে স্কুলের শিক্ষক ও কলেজের স্যাররা আমাকে খুবই সহযোগিতা করেছে, বিনা টাকায় প্রাইভেটও পড়িয়েছেন। এর আগে গুচ্ছ পরীক্ষায় চুয়েট ও রুয়েট পরীক্ষাও আমি টিকেছি। এখন বুয়েটের চান্স পেয়েছি, আমার শখ আমি প্রকৌশলী হব। কিন্তু পরিবারের পক্ষ থেকে পড়াশোনা চালানো সম্ভব নয়। তাই পড়াশোনার জন্য বিভিন্ন সংস্থার কাছে সহযোগিতা চাই।
এবিষয়ে বড়খাতা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহিদুল বারি বলেন, মিরাজ ছোট থেকে অনেক কষ্ট ও পরিশ্রম করে পড়াশোনা চালিয়ে গেছে। এখন বুয়েটে ভর্তির চান্স পেয়েছে। তার পরিবারের পক্ষে লেখাপড়ার খরচ চালানো অসম্ভব। সহযোগিতায় কেউ এগিয়ে আসলে হয়তো মিরাজের স্বপ্ন পূরণ হবে।
হাতীবান্ধা নির্বাহী কর্মকর্তা আতিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি জানা নেই তবে, অফিসে আমার সঙ্গে দেখা করলে বিষয়টি নিয়ে ডিসি স্যারের সাথে কথা বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে।
নয়াশতাব্দী/এনএইচ/এসআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ