ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জনবল সঙ্কটে ধুঁকছে ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতাল

প্রকাশনার সময়: ২৬ মার্চ ২০২৪, ১৫:০৩

উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁওয়ের পাঁচ উপজেলার চারটিই ভারতের সীমান্ত ঘেঁষা। সদর উপজেলার সঙ্গে ঘেঁষা দেশের সর্ব-উত্তরের জেলা পঞ্চগড়। অন্য কোনো জেলার সঙ্গে সহজ কোনো সংযোগ বা যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায়, চিকিৎসার জন্য একমাত্র আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতাল।

জেলার পার্শ্ববর্তী জেলা পঞ্চগড়, নীলফামারী ও দিনাজপুরের বীরগঞ্জ ও খানসামা উপজেলার মানুষ চিকিৎসা নিতে ছুটে আসেন এখানেই। ১০০ শয্যা বিশিষ্ট আধুনিক সদর হাসপাতালটি ২৫০ শয্যায় উন্নীত করলেও, এখনো জনবল সঙ্কটে ভুগছে। এতে চিকিৎসা পেতে চরম ভোগান্তি ও বিড়ম্বনার শিকার হতে হচ্ছে রোগীদের।

হাসপাতাল সূত্র বলছে, হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ১৩ হাজার থেকে ১৫ হাজার মানুষের যাতায়াত ঘটে। সেই সঙ্গে গড়ে ভর্তি থাকেন ৫০০ থেকে ৬০০ রোগী এবং জরুরি বিভাগ থেকে চিকিৎসা নেন ৮০০ থেকে ১০০০ জন মানুষ। একদিকে হাসপাতালের ধারণ ক্ষমতার বেশি রোগী চিকিৎসা নিতে আসায় সেবা দিতে প্রতিনিয়ত হিমশিম খাচ্ছেন কর্তৃপক্ষ। শয্যার বিপরীতে রোগী বেশি হওয়ায় অধিকাংশ রোগীকে সেবা নিতে হচ্ছে বারান্দায়।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের জনবল সঙ্কট, দালালদের দৌরাত্ম্য, বিশুদ্ধ খাবার পানির সঙ্কট, ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের দৌরাত্ম্যসহ নানা সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও স্বজনদের।

জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার রত্নাই গ্রাম থেকে চিকিৎসা নিতে আসা গরু ব্যবসায়ী আলী আকবর বলেন, তিনদিন ধরে ছেলেকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছি। বেডে জায়গা না পেয়ে মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছি। একটা বেডে তিন-চারজন করে রোগী ভর্তি আছে। মেঝেতে থাকায় হাসপাতাল থেকে সুযোগ সুবিধা পাচ্ছি না। সব ওষুধ বাইরে থেকে কিনে নিতে হচ্ছে। কেউ কেউ দালালদের কাছে টাকা দিলে সব ধরনের ওষুধ পাচ্ছেন।

এসময় বেড সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি যারা বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।

চিকিৎসা নিতে আসা স্কুল শিক্ষক শাহজাহান আলী বলেন, রোগীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় হাসপাতালে চাপ বেড়েছে, এটা সত্য। তবে হাসপাতালের ভেতরে ব্যবস্থাপনা একেবারে যাচ্ছেতাই। আমরা সেবার জন্য এখানে আসি। কিন্তু সঠিক সময়ে আমরা প্রাপ্য সেবাটুকু পাইনা। এখানে ভর্তি হয়ে থাকলেও বিশুদ্ধ খাবার পানি আশপাশে পাওয়া যায় না। আমরা চাই এগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাধান করা হোক।

২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমরা সর্বোচ্চ ভালো সেবা দিয়ে থাকি। এ কারণে রোগীর চাপ অনেক বেশি থাকে। যার ফলে হাসপাতালটি ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হলেও জনবল সঙ্কট রয়েছে। ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের আলাদা সময় বেধে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও দালালের মাধ্যমে ওষুধ বিক্রয়ের বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেবো।

সিভিল সার্জন ডা. নুর নেওয়াজ আহমেদ বলেন, কিছুটা জনবল সঙ্কট রয়েছে। এটি সমাধানে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি যাতে ভালো সেবা সাধারণ মানুষকে পৌঁছে দেওয়া যায়।

নয়াশতাব্দী/এনএইচ/এনএস

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ