ঢাকা, রবিবার, ১২ জানুয়ারি ২০২৫, ২৮ পৌষ ১৪৩১, ১১ রজব ১৪৪৬

‘আমার মাকে ফেরত চাই, মা ছাড়া আমার ঘুম আসে না’

প্রকাশনার সময়: ২৩ মার্চ ২০২৪, ১৬:০৮ | আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২৪, ১৬:৩৮
অভিযুক্ত আইয়ুব দফাদার- ছবি নয়া শতাব্দী

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে উজানচর ইউনিয়নের দফাদার, টিকটকার খ্যাত আইয়ুব আলী (৫০) তিন সন্তানের জননীকে বিয়ে করে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছেন। ওই মহিলার তিন সন্তান রয়েছে। তারা মাকে ফিরে পেতে আকুতি জানিয়েছেন। স্ত্রীকে ফিরে পেতে অসহায় স্বামী ঘুরছেন দ্বারে দ্বারে।

স্থানীয়রা জানান, উজানচর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের হাজী আ. গফুর মন্ডল পাড়ার বাসিন্দা মিলন শেখ একজন ইটভাটার শ্রমিক। তাদের দুই ছেলে ও একটি মেয়ে সন্তান রয়েছে। বড় ছেলে অনিক শেখ (১৭), মেজো ছেলে সজীব (১৩) সবার ছোট মেয়ে মাহিয়া আক্তার (৮)। আসমা ও মিলন দম্পতি ঢাকার সাভারে থাকেন। আসমা সেখানে একটি গার্মেন্টসে এবং মিলন ইটভাটায় কাজ করেন। সম্প্রতি তাদের মধ্যে কিছুটা পারিবারিক কলহের সৃষ্টি হয়।

ঝামেলা মীমাংসার জন্য গ্রামের বাড়ি থেকে মিলনের বাবা আফতার শেখ সরল বিশ্বাসে আইয়ুব দফাদারকে সাভারে পাঠান। সেখান থেকেই শুরু হয় আসমার সাথে আইয়ুব দফাদারের প্রেমের সম্পর্ক। এর কিছুদিন পরেই আসমা মিলনকে তালাক দিয়ে আইয়ুব দফাদারকে বিয়ে করেন।

এর জের ধরে চলতি মাসের ৭ তারিখ আসমার সাবেক স্বামী (মিলন) আসমাকে কুপিয়েছেন বলে গোয়ালন্দ ঘাট থানায় মামলা দায়ের করা হয়। মিলন বর্তমানে সেই মামলা ঘাড়ে নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।

মামলার ২ নম্বর আসামি মিলনের বাবা আদালত হতে জামিন পান। কিন্তু আসমার তিন সন্তানকে নিয়ে তিনি বেশ সমস্যার মধ্যে রয়েছেন। মামলা থেকে অব্যাহতি পেতে এবং তার ছেলের বৌকে ফেরত পেতে ঘুরছেন দ্বারে দ্বারে।

আসমা বেগমের ছোট মেয়ে মাহিয়া আক্তার বলেন, ‘আমি আমার মাকে ফেরত চাই। মা ছাড়া আমার ঘুম আসে না।’

অভিযুক্ত আইয়ুব দফাদার মুঠোফোনে জানান, তিনি ইসলামী শরিয়া মোতাবেক আসমা বেগমকে বিয়ে করেছেন।

৩ সন্তানের জননী আসমা বেগম বলেন, ‘আমার আগের স্বামী (মিলন) ঠিকমতো ভাত-কাপড় দিতে পারতো না। আমি সুখে থাকার জন্য আইয়ুব দফাদারকে বিয়ে করেছি। এজন্য মিলন আমাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য লিয়াকত হাসান লিপু মন্ডল জানান, ‘আইয়ুব দফাদার আমাদের এলাকার একটি বিষফোঁড়া। বিদেশে লোক পাঠানোর নামে এরআগে, তিনি এলাকার অনেককে নিঃস্ব করেছেন। রাজবাড়ী আদালতে মানব পাচার আইনে দুটি মামলা চলমান রয়েছে। আমরাও তার অনেক সালিশ-বিচার করেছি। তিনি নিয়মিত টিকটিক করে বেড়ায়। আরও বিভিন্ন অপরাধের সাথে সে জড়িত। এলাকাবাসী তার উপযুক্ত বিচার চায়।’

উজানচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলজার হোসেন মৃধা জানান, শুনেছি আইয়ুব দফাদার তিন সন্তানের জননীকে বিয়ে করেছে। বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করব। প্রাথমিকভাবে তার বেতন স্থগিত করা হয়েছে।

গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রানবন্ধু চন্দ্র বিশ্বাস জানান, আইয়ুব দফাদারের বিরুদ্ধে মানব পাচার মামলায় আদালতের দুইটি ওয়ারেন্ট রয়েছে। তিনি বর্তমানে পলাতক রয়েছেন। আমরা তাকে খুঁজছি।

নয়া শতাব্দী/এসএ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ