লালমনিরহাটে গত কয়েক বছরের চিত্র পাল্টে এবার রমজান মাসে হঠাৎ বেগুনের দাম কমে গেছে। যেই লম্বা বেগুনের দাম গত কয়েকদিন আগেও ৪০ থেকে ৫০ ছিলো কালীগঞ্জ উপজেলায় এখন সেই বেগুন পাইকারি বিক্রি হচ্ছে তিন টাকা কেজি দরে। গোল বেগুনের পাইকারি কেজি ৬ থেকে ৮ টাকা আর খুচরা দাম ১০ টাকা।
শুক্রবার (২২ মার্চ) আদিতমারী সবজি গ্রাম খ্যাত কুমড়িরহাট পাইকারি বাজারে এমন চিত্র দেখা গেছে।
জানা গেছে, প্রতি বছর রমজান মাসে বেগুনসহ অন্যান্য সবজির দাম বেড়ে যায়। রমজানে ইফতারিতে বেগুনি ছাড়া যেন জমে না।
বিগত বছরগুলোতে বেগুনের বাজার দর বেশি থাকায় রমজানে বেগুনের বেগুনি নিয়ে বেশ আলোচনা সমালোচনাও হতো। রমজানে ভালো মুনাফা পেতে রমজানকে ঘিরে বেগুন চাষাবাদ করেন অনেক চাষি।এ বছর ঘটেছে বিপত্তি। প্রথম রমজানে পাইকারি বাজারে বেগুন ৪০ টাকা কেজি বিক্রি হলেও ছয়/সাত রমজান থেকে দরপতন ঘটে। বেগুন এখন পাইকারি বিক্রি হচ্ছে তিন টাকা কেজি দরে। ফলে খেত থেকে বেগুন সংগ্রহ করার শ্রমিকের খরচই উঠছে না চাষিদের।
চাষিরা জানান, এ বছর উৎপাদন খুব বেশি হয়নি। তবুও বাজারে চাহিদা নেই। চাহিদা কম থাকায় দাম কম। বাজারে নিলে ক্রেতা নেই বেগুনের। অথচ প্রথম রমজানেও প্রতি কেজি ৪০/৫০ টাকা পাইকারি বিক্রি হয়েছে। বর্তমানে লালমনিরহাটের সবজি গ্রাম খ্যাত কুমড়িরহাটে সবজি বিক্রিতে মন্দা ভাব দেখা দিয়েছে। আগে বহিরাগত ব্যবসায়ীরা এসে খেত থেকে চাষিদের সবজি কিনে ঢাকাসহ দেশের বড় বড় সবজির বাজারে বিক্রি করতেন। তখন ভালোই মুনাফা পেতেন চাষিরা।
বর্তমানে বাজারে বহিরাগত ব্যবসায়ীরা না আসায় মন্দা বাজার যাচ্ছে। খেতের বেগুন তুলে কুমড়িরহাটের পাইকারি সবজি বাজারে এসেছেন কৃষক মাহফুজার রহমান। দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকলেও কোনো ক্রেতার দেখা মেলেনি। বিকেলে বাজারের শেষ দিকে একজন ক্রেতা দুই টাকা কেজি দাম বলায় তিন মণ বেগুন বিক্রি করেন মাত্র ৩৪০ টাকায়। এ বেগুন খেত থেকে তুলতে শ্রমিক খরচ পড়েছে ৬০০ টাকা।লোকসান হলেও গাছ ভালো রাখতে বেগুন তুলতে হয় বলে জানান কৃষক সাহিন মিয়া। তিনি বলেন, ২৫ শতাংশ জমিতে লক্ষাধিক টাকা খরচ করে বেগুন চাষ করে এ পর্যন্ত আড়াই লাখ টাকার বেগুন বিক্রি করেছি। বর্তমানে চাহিদা নেই তাই দাম কম। কাঁচা বাজার এমনই, সকালের সঙ্গে বিকেলের মিল থাকে না।
কৃষক শাহের আলী বলেন, গত সপ্তাহেও ভালো দাম ছিল। তিন/চারদিন ধরে বেগুনের ক্রেতাই নেই পাইকারি বাজারে। তবে স্থানীয় খুচরা বাজারেও সাত/আট টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে বেগুন। খেত থেকে বেগুন তুলে নিয়ে যেতে বললেও কেউ নেয় না। কারণ তোলার খরচই উঠবে না বেগুন বিক্রি করে। আগে দাম ভালো পাওয়ায় বর্তমান বাজার মন্দা হলেও বেগুন চাষিদের লোকসান হয়নি।
ক্রেতা ছমির উদ্দিন বলেন, বর্তমান বাজারে সবচেয়ে সস্তা সবজি হলো বেগুন। মাত্র ১৫ টাকা দিয়ে পাঁচ কেজি কিনেছি।
নয়া শতাব্দী/এসআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ