চট্টগ্রামে অবাধে বিক্রি হচ্ছে নকল ও ভেজাল ওষুধ। নানা উদ্যোগেও তা বন্ধ হচ্ছে না। বিশেষ করে নগর ও গ্রামে এসব নিম্নমানের ওষুধের ছড়াছড়ি। আর এসব নকল ওষুধ মজুদ রাখতে গড়ে উঠছে বিভিন্নস্থানে ভাণ্ডার। এসব ভাণ্ডার থেকে গোপনে গোপনে নকল ওষুধ সরবরাহ হয়ে থাকে। মূল কোম্পানির ওষুধের মতো হুবহু লেবেলে নকল ওষুধ বিক্রি হচ্ছে। আর এসব ওষুধ কিনে প্রতারিত হচ্ছে ক্রেতারা। দীর্ঘদিন ধরেই চলে আসা নকল ওষুধের বিষয়টি বহুল আলোচিত। এক শ্রেণির অসৎ ও মুনাফালোভী ব্যবসায়ী বাজারে বিক্রয় করছেন বিভিন্ন ধরনের নকল, ভেজাল ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ।
বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে এই ভেজাল ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধের ব্যবসা জমজমাট। ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিভিন্ন সময়ে অভিযান চালালেও ভেজাল ওষুধের দৌরাত্ম্য কোনোভাবেই বন্ধ করা যাচ্ছে না।
এদিকে চট্টগ্রাম মহানগরের পাঁচলাইশ থানার মেহেদীবাগ এলাকার একটি ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়ে পাঁচ লাখ টাকার নকল ও অনুমোদনহীন ওষুধ জব্দ করেছে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এসময় দুইজনকে গ্রেফতারের পাশাপাশি তাদের মোট সাড়ে ৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
বুধবার (২০ মার্চ) দুপুরে শহীদ মির্জা লেইনের নূর ভিলা নামক ভবনে পরিচালিত এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন কাট্টলী সার্কেলের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আরাফাত সিদ্দিকী। এসময় তাকে সহযোগিতা করেন ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর ও পাঁচলাইশ থানা পুলিশ।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ওই ফ্ল্যাটে মো. আহসানুল কবির (৫৬) এবং সুলতানা রাজিয়া (৩৫) মিলে কর্তৃপক্ষের লাইসেন্স ছাড়াই এজেন্ট পরিচালনা করছিলেন। পাশাপাশি লাইসেন্স ছাড়া ওষুধ মজুদ ও সরবরাহ, নকল ও ভেজাল ওষুধ মজুদ এবং দামের তারতম্যের মতো অপরাধও করেছেন তারা। এসময় সেখান থেকে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ওষুধ জব্দ করা হয়।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আরাফাত সিদ্দিকী বলেন, গোপন খবরের ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে এসে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হয়ে লাইসেন্স ছাড়া কোম্পানির এজেন্সি পরিচালনা, নকল ও ভেজাল ওষুধ মজুদ ও সরবরাহ এবং আভিযানিক টিমের সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অপরাধে মো. আহসানুল কবিরকে দোষী সাব্যস্ত করে ঔষধ ও কসমেটিকস লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
রাজিয়া সুলতানা জরিমানা পরিশোধ না করায় তাকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আওতায় সাজা পরোয়ানামূলে চট্টগ্রাম জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, দুজন অপরাধীই স্বীকার করেছে তারা নকল ও ভেজাল ওষুধ বিক্রয় ও বিপণন এর সাথে জড়িত। পাশাপাশি জব্দকৃত সমস্ত ওষুধ জনসম্মুখে ধ্বংস করা হয়েছে।
এছাড়াও এই অবৈধ ওষুধ সমূহের সম্ভাব্য বিপণন দোকানসমূহে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জানানো হবে এবং যে সকল চিকিৎসক এই সব নকল, ভেজাল ও অনুমোদনহীন ওষুধ প্রেসক্রাইব করছেন তাদের ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মো. ফখরুজ্জামান বলেন, নকল-ভেজাল, অনিবন্ধিত ওষুধ এবং অবৈধ ওষুধের বিক্রি ও মজুত বন্ধের অভিযান কঠোরভাবে পরিচালনা করা হবে এবং এর সাথে আর কারা কারা জড়িত তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জনস্বার্থে এই ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
নয়া শতাব্দী/এসএ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ