বাগেরহাটের নারী কর্মীরা ঘরে বসে হাতে তৈরি করছেন বিভিন্ন নান্দনিক ডিজাইনের পাখির বাসা, বিড়াল-কুকুরের ঘর। এসব পাখির বাসা, বিড়াল-কুকুরের ঘর, খেলনা শুধু দেশেই নয় রপ্তানি হচ্ছে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। নারকেলের ছোবড়া থেকে এসব তৈরির পাশাপাশি আরও অনেক বিচিত্র সামগ্রী তৈরি করছেন বাগেরহাটের নারী উদ্যোক্তা রোজী আহমেদ। ফেলে দেওয়া কাঁচামাল দিয়ে তার এই অপ্রচলিত পণ্য উৎপাদনে কর্মসংস্থান হয়েছে অর্ধশতাধিক নারীরও।
করোনাকালে বাগেরহাট শহরের বাসাবাটি এলাকার নারী উদ্যোক্তা রোজী আহমেদ ঘরে বসে না থেকে নিজ বাড়িতে কয়েকজন নারীকর্মী নিয়ে প্রথমে নারকেলের ফেলে দেওয়া ছোবড়ার আঁশ দিয়ে থালা-বাসন পরিস্কারের মাজুনি তৈরি শুরুর পাশাপাশি অনলাইনে বিক্রি শুরু করেন। এতে আর্থিকভাবে বেশ লাভবান হওয়ায় ব্যবসার প্রসার বৃদ্ধিতে শুরু করেন ১২ প্রকারের পাখি বাসা, বিড়াল-কুকুরের ঘর তৈরি ও বাজারজাতকরণ। বর্তমানে অর্ধশতাধিক নারী কর্মীদের দিয়ে পাখির বাসা, বিড়াল-কুকুরের ঘর তৈরির পাশাপাশি নিজ বাসায় নারকেলের ছোবড়াসহ দেশীয় কাঁচামাল দিয়ে হাতে তৈরি ২৫ প্রকারের অপ্রচলিত পণ্য উৎপাদন করছেন তিনি।
অপ্রচলিত পণ্য উৎপাদন করে মাত্র ৪ বছরের ব্যবধানে গৃহিণী থেকে সফল উদ্যোক্তা বনে যাওয়া রোজী আহমেদের এসব পণ্য এখন দেশের গণ্ডি পেরিয়ে রপ্তানি হচ্ছে ইউরোপে। প্রতি মাসে এক কনটেইনার ভর্তি উৎপাদিত পণ্য রপ্তানি হচ্ছে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। বিদেশের বাজারে দিন দিনই বাড়ছে পাখির বাসা, বিড়াল-কুকুরের ঘর, খেলনার চাহিদা।
সকাল থেকে শিফট করে দল বেধে নারী কর্মীরা হাতের নিপুণ ছোঁয়ায় প্রতিদিন ১২টি মডেলের পাখির বাসা, বিড়াল-কুকুরের বাসা, খেলনাসহ ২৫ প্রকারের অপ্রচলিত পণ্য তৈরি করেন অর্গানিক প্রোডাক্ট কারখানার মালিক বাগেরহাট শহরের বাসাবাটি এলাকায় রোজী আহমেদের বাড়িতে বসে। এসব নারী কর্মীদের মধ্যে কেউ কেউ নিজ উপার্জনে চালাচ্ছেন উচ্চ শিক্ষার খরচ। পাশাপাশি অন্যরা ছেলে মেয়েদের লেখাপড়াসহ পরিবারের স্বচ্ছলতা এনেছেন। নারী বান্ধব কাজের পরিবেশ থাকায় নারীরা নির্বিঘ্নে এখানে কাজ করতে স্বাচ্ছ্যন্দবোধ করেন বলে জানালেন উদ্যোক্তা রোজী আহমেদ।
বিসিক বাগেরহাটের পক্ষ থেকে কারখানাটি পরিদর্শনের পাশাপাশি তাকে ঋণ সুবিধাসহ বিদেশে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে যদি কোনো জটিলতা থেকে থাকে তবে সেটিকে সহজ করতে সার্বিক সহায়তার আশ্বাস দেন শিল্প নগরী কর্মকর্তা। বাগেরহাটে রোজী আহমেদ এর মতো আরও নারী উদ্যোক্তা এগিয়ে এসে বিভিন্ন মানসন্মত পণ্য বিদেশে রপ্তানির মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে এমনটাই প্রত্যাশা সকলের।
নয়া শতাব্দী/এসএ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ