টানা ২০ দিন ভোগান্তির পর মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হয়েছে। এতে গ্রাহকদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
শনিবার (১৬ মার্চ) রাত সাড়ে ৭টার পর উপজেলার বাউশিয়া ও ভবেরচর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হয়।
এর আগে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ। টানা ২০দিন পর গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হওয়ায় গজারিয়ায় থাকা ২ হাজার আবাসিক ও বাণিজ্যিক গ্রাহকদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
জানা যায়, আবাসিক, শিল্প এবং বাণিজ্যিক মিলিয়ে গজারিয়ায় তিতাসের গ্রাহক ১১ হাজারের মতো। কিন্তু সেখানে এর পাঁচ গুণ গ্রাহক রয়েছে। তাদের কারও বৈধ সংযোগের কাগজ নেই। তিতাস বার বার অভিযান চালিয়েও কোনো সুরাহা করতে না পারায় গত ২৫ ফেব্রুয়ারি গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। পরবর্তী গত ৫ মার্চ বাউশিয়া ইউনিয়নের দরি বাউশিয়া এলাকায় অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে অভিযান পরিচালনা করতে গেলে স্থানীয়দের তোপের মুখে পরে তিতাসের লোকজন। ওই দিন এক পর্যায়ে স্থানীয়রা গ্যাসের দাবিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দরি বাউশিয়া এলাকা অবরোধ করে।
এতে মহাসড়কের উভয় মুখে দীর্ঘ যানজট সৃস্টি হয়। খবর পেয়ে পুলিশ মহাসড়ক থেকে আন্দোলনকারীদের সরে যেতে বললে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে এএসপি ও থানার ওসিসহ ৮ পুলিশ সদস্য এবং আন্দোলনকারী ১৮ জন নারী পুরুষ আহত হয়। এঘটনায় ৬মার্চ পুলিশ বাদী হয়ে ২ হাজার জনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করে।
এর রেশ কাটতে না কাটতে ৬দিন পর গত ১১ মার্চ বাউশিয়া ইউনিয়নের মধ্যে বাউশিয়া ও বক্তারকান্দী এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশের উপস্থিতিতে তিতাস অভিযান পরিচালনা করে ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ অবৈধ গ্যাস লাইন বিচ্ছিন্ন করে। ফের গত ১৪ মার্চ গজারিয়া উপজেলার ভবেরচর ইউনিয়নে অভিযান চালিয়ে ১১ কিলোমিটার দীর্ঘ অবৈধ গ্যাস লাইন বিচ্ছিন্ন করেছে তিতাস।
এসব লাইনের মাধ্যমে প্রায় ৩ হাজার ৭শ অবৈধ আবাসিক সংযোগ, একটি ঢালাই লোহা কারখানা এবং তিনটি রেস্টুরেন্ট চলতো বলে জানান তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ। সর্বশেষ ১৬ মার্চ শনিবার দিনব্যাপী অভিযান চালিয়ে ১১ কিলোমিটার দীর্ঘ অবৈধ গ্যাস লাইন বিচ্ছিন্ন করেছে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ। গজারিয়ার মানুষ অবৈধ গ্যাস ব্যবহার করবে না এমন নিশ্চয়তা তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হারুনুর রশীদ মোল্লাহকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা দিলে আজ সন্ধ্যায় গ্যাস সরবরাহ চালু করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে তিতাসের মেঘনা আঞ্চলিক বিপণন অফিসের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান বলেন, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি গজারিয়ার একাংশ গ্যাস সরবরাহ লাইন বন্ধ করে হয়েছিল। ওই এলাকায় গ্যাসের বকেয়া বিল আছে প্রায় ৮ কোটি টাকা। বকেয়ার জন্য বার বার তাগাদা দিয়েও কাজ হয়নি। এদিকে অবৈধ সংযোগ কেটে দিয়েও কাজ হচ্ছে না। কেটে দিলেই পরদিন আবার তা স্থাপন করে ফেলছে। অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে আজ সরবরাহ চালু করা হয়েছে।
নয়া শতাব্দী/এসআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ