দিনাজপুর দক্ষিণ কতোয়ালীতে ঘটেই চলেছে একের পর এক ঘটনা! ডিবি পরিচয়ে থানার এসআই অমিত জনগণের হাতে আটক হন গত ৮ মার্চ সকালে। এর আগে ডিবি পুলিশের ওপর চড়াও হয় স্থানীয়রা।
প্রথম ঘটনাটি ঘটে গোদাগাড়ী নামক স্থানে। অপর ঘটনাটি ঘটে সদর উপজেলার ৭নং উথরাইল ইউনিয়নের দক্ষিণ গোসাইপুর বটতলা নামক স্থানে।
জানা যায়, দিনাজপুর সদর উপজেলার দক্ষিণ কতোয়ালী থানার ৭নং উথরাইল ইউনিয়নে রাস্তার ওপর তল্লাশির নামে হয়রানি করার সময় জনসাধারণের কাছে আটক হন এসআই অমিতসহ সাদা পোশাকে আরও দুজন। এ সময় তাদের কাছে আইডি কার্ড দেখতে চাইলে এসআই অমিত এবং তার সহযোগী দুজন আইডি কার্ড দেখাতে না পারায় ক্ষিপ্ত হয় স্থানীয় লোকজন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে জানা যায়, রাস্তা দিয়ে মোটরসাইকেলে দুই আরোহীকে দাঁড় করানোর পর পুলিশ সদস্যরা নিজেদের ডিবি পরিচয় দিয়ে তাদের তল্লাশি করতে চান। তখন মোটরসাইকেলে থাকা ওই দুই ব্যক্তি তাদের পরিচয় এবং আইডি কার্ড দেখতে চাইলে, পুলিশ সদস্যরা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং দুই আরোহীর ওপর ক্ষিপ্ত হন। তাৎক্ষণিকভাবে আটক ব্যক্তিদ্বয়ের ডাক চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে এসে বিষয়টি শুনে পুলিশের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। পরিস্থিতি উত্তেজনা ছড়ালে ওই পুলিশ সদস্যদের আটক করে ৭নং উথরাইল ইউনিয়ন পরিষদের অফিসে রাখা হয়। এরপর বিষয়টি দিনাজপুর কোতয়ালী থানায় অবগত করা হলে, কোতয়ালী থানা পুলিশ ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তাদের উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
অপরদিকে দিনাজপুরে সদর উপজেলার ৭নং উথরাইল ইউনিয়নের দক্ষিণ গোসাইপুর বটতলা নামক স্থানে স্থানীয়দের তোপের মুখে পড়ে ডিবি পুলিশ। অনুমানিক বেলা ১১টার দিকে সোর্সকে সাহায্য করতে গিয়ে স্থানীয় ২০-২৫ জন নারীর তোপের মুখে পড়ে দিনাজপুর ডিবি পুলিশের একটি টিম।
ডিবির ওই টিমের নেতৃত্বে ছিলেন এসআই সাগর। এছাড়া নারীসহ ডিবির ৮ সদস্য উপস্থিত ছিলেন। জানা যায়, গত ৬ মার্চ রাত ১০ টার দিকে সোর্স হিসেবে কাজ করা স্থানীয় জাহাঙ্গীরের ছেলে মুন্নার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এসআই সাগরের নেতৃত্বে ডিবির একটি টিম দক্ষিণ গোসাইপুর বটতলা নামক স্থানে অভিযানে যায়।
এসময় মো. জহিরুল ইসলামের ছেলে আলম ড্রাইভার (২৭), মকছেদুল হকের ছেলে আরিফ বাবু (২২) ও আলমগীর হোসেন এবং শংকরপুর ইউনিয়নের শালকী কাউয়া পাড়া গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক বাবুকে কোনো প্রকার আলামত ছাড়াই আটক করে।
পরবর্তীতে তিনজনের কাছ থেকে ৭০ হাজার টাকা (আলম-২০, আরিফ-৩০, রাজ্জাক-১৫ এবং তাদের পকেটে থাকা পাঁচ হাজার) নিয়ে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। তবে আলমগীর হোসেনের কাছ থেকে কোনো টাকা নেয়নি ডিবি। এ ঘটনার পরদিন সকাল ১০টায় ভুক্তভোগীদের পরিবার সোর্স মুন্নাকে আটক করে মিথ্যা তথ্য দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগে তার বাবার কাছে বিচার দিলে, সোর্স মুন্নার বাবা জাহাঙ্গীর তাকে মারধর করে স্থানীয়দের সহযোগিতায় মাথার চুল কেটে দেয়। এ ঘটনায় সোর্স মুন্না ডিবির ওই টিমকে খবর দিলে ডিবির টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে উপস্থিত লোকজনকে মারধর করে। এসময় স্থানীয় নারীরা মারধরের প্রতিবাদ করে এবং ডিবির ওপড় চড়াও হয়। পরিস্থিতি বিবেচনায় ডিবি দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
এসব ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে এবং স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের সঞ্চার করছে। বিষয়গুলো সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দিনাজপুর জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন দিনাজপুর সদর উপজেলার দক্ষিণ কোতোয়ালী এলাকার বাসিন্দারা।
ডিবি পরিচয় দেওয়া থানার এসআই অমিত জনগণের হাতে আটক হন গত ৮ মার্চ সকালে। ছবি- আব্দুস সালাম
নয়াশতাব্দী/এনএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ