ভারত মহাসাগরে জলদস্যুর কবলে বাংলাদেশি পণ্য বহনকারী জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর ২৩ নাবিকের মধ্যে রয়েছেন টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার সাব্বির হোসেন।
একমাত্র ছেলের জিম্মির খবর পেয়ে কাঁদছেন আর বিলাপ করছেন বাবা হারুন অর রশিদ ও মা সালেহা বেগম। ভাইয়ের জন্য সবার কাছে দোয়া প্রার্থনা করছেন একমাত্র বোন মিতু আক্তার।
তাদের কান্না থামাতে বাড়িতে এসে ভিড় করছেন গ্রামের লোকজন। গ্রামের লোকজন ও আত্মীয়স্বজন বাড়িতে এসে তাদের সান্ত্বনা দিচ্ছেন। পরিবারের দাবি, সরকার যেন দ্রুত সাব্বিরকে মুক্ত করে আনে।
সাব্বির হোসেনের বাড়ি নাগরপুর উপজেলার সহবতপুর ইউনিয়নের ডাঙ্গা ধলাপাড়া গ্রামে। তিনি নাগরপুরের সহবতপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১৪ সালে এসএসসি পাস করেন। টাঙ্গাইলের কাগমারি এমএম আলী কলেজ থেকে ২০১৬ সালে ইন্টারমিডিয়েট পাস করে ভর্তি হন চট্রগ্রাম মেরিন একাডেমিতে। সেখান থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে পাস করে ২০২২ সালের জুন মাসে এমভি আব্দুল্লাহ নামক পণ্যবহনকারী ওই জাহাজে মার্চেন্ট কর্মকর্তা হিসেবে চাকরি নেন।
সাব্বিরের চাচাতো ভাই আহম্মেদ হোসেন রানা বলেন, এক ভাই এক বোনের মধ্যে সাব্বির ছোট। সে অনেক কষ্ট করে লেখাপড়া করেছে। তার বাবা কৃষিকাজ করে সংসার চালাতেন। বোনের বিয়ে হয়েছে। সাব্বিরের বাবা মস্তিস্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে প্যারাইলাইজড হয়ে শয্যাশায়ী। সাব্বিরের চাকরি হওয়ার পর তার মা শয্যাসায়ী স্বামীকে নিয়ে সহবতপুর তার বাবার বাড়িতে বসবাস করেন। তাদের সহবতপুরের ডাঙ্গা ধলাপাড়া গ্রামের বাড়িতে এখন আর কেউ থাকেন না। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম সাব্বির। তার কিছু হয়ে গেলে তাদের আর চলার উপায় থাকবে না। সরকারের কাছে দাবি জানাই, সাব্বিরসহ সবাইকে যেন জিম্মিদশা থেকে দ্রুত মুক্ত করে আনা হয়।
সাব্বিরের একমাত্র বোন মিতু আক্তার বলেন, আমার ভাই সোমবার (১১ মার্চ) বিকেলে ফেসবুকে আপলোড দিয়েছে যে, বিষুব রেখা অতিক্রম করলাম। মাথা ন্যাড়া করে ছবি আপলোড করে সে। এক মাস আগে সে বাড়ি আসছিল। একদিন থেকেই চলে গেছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। মঙ্গলবার দুপুরে এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজটি জলদস্যুদের কবলে পড়ার খবর পেয়ে সবাই আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি। বাবা-মা খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। তারা শুধু কেঁদেই চলছে আর বলছে, আমার ছেলেকে এনে দাও।
একমাত্র ভাইয়ের কিছু হলে বাবা-মাকে বাচাঁনো যাবে না উল্লেখ করে মিতু আক্তার অতি দ্রুত তার ভাইকে মুক্ত করে আনার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান।
নয়াশতাব্দী/এনএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ