মৃত্যুর পর নাম-পরিচয়ের জটিলতা কাটিয়ে ১১ দিন পর অবশেষে প্রকৃত নাম নিয়ে সুবজ শেখের পরিবারে ফিরলো সাংবাদিক বৃষ্টির নিথর দেহ।
মৃত অভিশ্রুতি শাস্ত্রী ওরফে বৃষ্টি খাতুনের গ্রামের বাড়িতে পারিবারিক কবরস্থানেই তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
সোমবার (১১ মার্চ) রাত ১০টার দিকে কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার বেতবাড়ীয়া ইউনিয়নের গ্রামের বাড়িতে তাকে জানাজা শেষে দাফন করা হয়।
সাংবাদিক অভিশ্রুতি শাস্ত্রীর আসল নাম বৃষ্টি খাতুন এটা প্রমাণ হয়েছে। এদিন গ্রামের বাড়িতে তার মরদেহ পৌঁছানোর পর কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজনরা। এ সময় বৃষ্টির বাবা-মা বার বার মূর্ছা যাচ্ছিলেন।
জানা যায়, রাজধানীর বেইলি রোডে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনায় নিহত হওয়া অভিশ্রুতি শাস্ত্রী ওরফে বৃষ্টি খাতুনের মরদেহ ১১ দিন পর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে সিআইডি। সোমবার বিকেল ৩টার দিকে বৃষ্টি খাতুনের বাবা সবুজ শেখের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়।
এর আগে, ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে তার মরদেহ শনাক্ত করা হয়। বাবা সবুজ শেখ ওরফে শাবলুল আলম এবং মা বিউটি খাতুনের দেওয়া ডিএনএ নমুনার সঙ্গে মিলেছে বৃষ্টির ডিএনএ। গত ২৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে নিহত হন বৃষ্টি খাতুন।
বৃষ্টি তার বন্ধু ও সহকর্মীদের কাছে অভিশ্রুতি শাস্ত্রী নামে পরিচিত ছিলেন। তিনি মূলত মুসলিম পরিবারের সন্তান। কিন্তু অভিশ্রুতি শাস্ত্রী নামে নিজেকে পরিচয় দেওয়ার কারণে তার মরদেহ হস্তান্তর নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। মৃত্যুর পর রমনা মন্দিরের পুরোহিত বৃষ্টিকে সনাতন ধর্মাবলম্বী এবং সবুজ শেখ ও বিউটি খাতুন নিজের সন্তান বলে দাবি করেন। ধর্ম পরিচয় নিয়ে চারদিকে শুরু হয় নানা আলোচনা সমালোচনা। এতে আটকে দেওয়া হয় মরদেহ হস্তান্তর। মরদেহ শনাক্তে নেওয়া হয় ডিএনএ নমুনা। নমুনা নেওয়ার ১১ দিন পর বৃষ্টির ডিএনএর সঙ্গে তার বাবা-মায়ের ডিএনএ মিলেছে।
বৃষ্টির বাবা সবুজ শেখ বলেন, আমি আমার মেয়ের মরদেহ ফিরে পেয়েছি। তাকে গ্রামের বাড়িতে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে। কারা আমার মেয়ের মরদেহ নিয়ে ষড়যন্ত্র করল, আমি জানি না। যারা ষড়যন্ত্র করেছে আল্লাহ তাদের বিচার করবে।
বৃষ্টির গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার বেতবাড়ীয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বনগ্রাম গ্রামের পশ্চিমপাড়ায়। কলেজের সার্টিফিকেট, জন্মনিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্রে তার নাম বৃষ্টি খাতুন।
গত ২৯ ফেব্রুয়ারি বেইলি রোডের গ্রীন কোজি কটেজ ভবনে আগুনে ৪৬ জন নিহত হন। তাদের ৪৪ জনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তবে অভিশ্রুতি শাস্ত্রীর মরদেহের একাধিক দাবিদার থাকায়, তার ডিএনএ পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেয় পুলিশ।
নয়াশতাব্দী/এনএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ