সাতক্ষীরা পৌর শহরে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে সাওবান আব্দুল্লাহ (৩) নামের এক শিশুকে হত্যা চেষ্টার অপরাধে সদর থানায় মামলা রেকর্ড হলেও আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এতে মামলার বাদীসহ শিশুর পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানিয়েছেন বাবা শেখ মনিরুজ্জামান।
বুধবার (৬ মার্চ) রাতে শিশু সাওবান আব্দুল্লাহকে হত্যা চেষ্টার ঘটনায় সাতক্ষীরা সদর থানায় দুইজনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা রেকর্ড করা হয়েছে।
মামলার এজহারে আসামিরা হলেন, শেখ মাতলুব হোসেন লিওন ও শেখ মাসুদ হোসেন মিনু। উভয়ে পৌর শহরের কুখরালী বলফিল্ড এলাকা শেখ মোহাম্মাদ হোসেনের ছেলে।
মামলার এজহার সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার (০৫ মার্চ) সকালে পৌরসভার কুখরালী বলফিল্ড মসজিদের পার্শ্বে শেখ মোহাম্মাদ হোসেনের ছেলে শেখ মাতলুব হোসেন লিওন ও শেখ মাসুদ হোসেন মিনুর সাথে প্রতিবেশী মৃত শেখ নুরুজ্জামানের ছেলে শেখ মনিরুজ্জামানের পৈতৃক ভিটাবাড়ির জমিজমা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। ঘটনার দিন সকাল সাড়ে ৮টার দিকে শিশু সাওবান আব্দুল্লাহকে নিয়ে শেখ মনিরুজ্জামান নিজ বাড়ি হতে রাস্তার উপরে আসলে বিবাদীগণ জমি ও পূর্ব শত্রুতার জের ধরে বিবাদীদ্বয় হাতে লোহার রড নিয়ে পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক শেখ নুরুজ্জামানসহ তার ছেলেকে লোহার রড দিয়ে বেধড়ক মারধর করে। এতে গুরুতর রক্তাক্ত হয় শেখ মনিরুজ্জামান ও তার ছেলে সাওবান আব্দুল্লাহ।
মামলার এজাহার সূত্রে আরও জানা যায়, শেখ মাতলুব হোসেন লিওন লোহার রড দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে শেখ মনিরুজ্জামানের মাথায় আঘাত করে। শেখ মাসুদ হোসেন মিনু হত্যার উদ্দেশ্যে শেখ মনিরুজ্জামানের শিশু ছেলেকে লোহার রড দিয়ে মুখের ডান পাশে আঘাত করে গুরুতর থেতলানো ফাটা রক্তাক্ত জখম করে।শেখ মনিরুজ্জামানের ডাকচিৎকারে বিবাদীরা ভয়ভীতি প্রদর্শন, লুটপাট ও ক্ষয়ক্ষতি করে প্রাণনাশ করার হুমকি প্রদান করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
শিশুর বাবা মনিরুজ্জামান বলেন, ওই ঘটনার পর থেকে আমি এবং আমার ছেলে মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি আছি । ঘটনার পর থেকে সে কিছু খাওয়া-দাওয়া করতে পারছে না এবং রাতের বেলা ঘুমের মধ্যে আতকে উঠছে। সদর থানা মামলা হলেও আসামিরা প্রকাশ্য ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং আমাদের বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। পরিবারসহ আমরা সবাই আতঙ্কে আছি। মামলার এক নম্বর আসামি আমাদের এলাকার ক্লাবের গম চুরি মামলার আসামি এবং দুই নম্বর আসামির বিরুদ্ধে ১৯৯০ সালে ছিনতাই ও মারামারির ঘটনায় দুই বছরের সাজা প্রাপ্ত আসামি এবং ঘটনায় সে জেলও খেটেছে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে বিদেশে পাঠানো নাম করে পাঁচ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ এর মামলাও রয়েছে।
এরআগে, গত ২৯ ফেব্রুয়ারি সকাল ৮টার দিকে দেশের অস্ত্র ধারাল দা, কোদাল, কুড়াল, নিয়ে আমাদের ভিটাবাড়ি জবর দখল করার উদ্দেশ্যে জমির মধ্যে অনধিকার প্রবেশ করে জমিতে থাকা বিভিন্ন প্রকার গাছগাছালি কেটে নেয়। এছাড়া অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে।
মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা সাতক্ষীরা সদর থানার এসআই সাইদুজ্জামান বলেন, এ ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কোনো আসামিকে গ্রেফতার করতে পারি নাই। তবে গ্রেফতার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। খুব শীঘ্রই আটক করতে পারবো বলে আশা করি।
নয়া শতাব্দী/এসএ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ