সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে হাওরের ফসল রক্ষা বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও সংস্কার কাজ দ্বিতীয় দফা বর্ধিত সময়েও শেষ হয়নি। বুধবার (৬ মার্চ) দ্বিতীয় দফায় বাড়ানো সময় শেষ হয়ে গেছে। এদিকে সময়মতো বেড়িবাঁধের কাজ শেষ না করায় তিন প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি পিআইসির দায়িত্বশীলদের শোকজ করা হয়েছে।
সরেজমিনে হাওর ঘুরে দেখা গেছে, কয়েকটি প্রকল্পে এখনও মাটি ফেলার কাজ বাকি রয়েছে। আবার কিছু প্রকল্পে শেষ মুহূর্তের কাজ ঘাস লাগানো ও ড্রেসিং চলছে। জেলার অন্যতম বৃহৎ হাওর নলুয়ার হাওর ঘুরে দেখা গেছে, হাওরের ৮, ১১, ১৪ নম্বর প্রকল্পে এখনও অনেক জায়গায় মাটি পড়েনি। মাটির কাজ শেষ করতে আরও কয়েকদিন সময় লাগবে। বৃষ্টি হলে কাজ আরও পিছিয়ে যাবে। ৯, ১০ নম্বর প্রকল্পে মাটি কাটার কাজ শেষ হলেও ড্রেসিংসহ আনুষাঙ্গিক কাজ বাকি আছে।
৮ নম্বর প্রকল্পের সভাপতি সুজাত মিয়া বলেন, মাটি কাটার যন্ত্র নষ্ট হয়ে যাওয়া ও বৃষ্টির কারণে কিছু দিন কাজ ব্যাঘাত হয়। বর্তমানে জোরেশোরে কাজ চলছে। দুই এক দিনের মধ্যে কাজ শেষ হবে।
১১ নম্বর প্রকল্পের সভাপতি মফিজ আলী বলেন, আমার প্রকল্পের মাটির কাজ আজ শেষ হয়ে যাবে। ড্রেসিং ও ঘাস লাগানোর কাজ চলবে।১৪ নম্বর প্রকল্পে এখনও অনেক জায়গায় মাটি পড়েনি। প্রকল্পের সদস্য চিলাউড়া হলদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য বলেন, ১৪ নম্বর প্রকল্পের কাজ দ্রুত শেষ কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। ঝুঁকিপূর্ণ অংশে মাটির কাজ শেষ।
হাওর বাঁচাও আন্দোলন জগন্নাথপুর উপজেলা কমিটির আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ফসল রক্ষা বেড়িবাঁধের কাজ শেষ করার নিয়ম থাকলেও কাজ শেষ না হওয়ায় দ্বিতীয়দফা ৬ মার্চ পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়। বর্ধিত সময়ে কাজ শেষ না হওয়া দুঃখজনক। তিনি বলেন, হাওরে এখনো ২০ প্রকল্পের কাজ অসমাপ্ত রয়েছে তাই আগাম বন্যার ঝুঁকি নিয়ে চিন্তিত আমরা।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী সবুজ কুমার শীল জানান, সময়মতো কাজ শেষ না করায় ৮, ১১, ১৪ নম্বর প্রকল্প কমিটির সভাপতিকে শোকজ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার জবাব দেওয়ার শেষ সময়। এবার ৩৩টি প্রকল্পের মাধ্যমে চার কোটি টাকা ব্যয়ে এ উপজেলার ফসল রক্ষা বেড়িবাঁধের কাজ হচ্ছে। আমরা মাঠে তদারকিতে আছি।
বুধবার নলুয়া হাওর পরিদর্শন শেষে জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল বশিরুল ইসলাম স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, নলুয়া হাওরের ১ থেকে ১৪ নম্বর প্রকল্পের কাজ পরিদর্শন করেছি। এরমধ্যে ৮, ১১ ও ১৪ নম্বর প্রকল্পের এখনও শেষ হয়নি। তবে আগামী শুক্রবারের মধ্যে হয়তো শেষ হয়ে যাবে। অপর প্রকল্পের কাজ সন্তোষজনক। জগন্নাথপুরে এরমধ্যে ৯০ শতাংশ বাঁধের সম্পন্ন হয়েছে বলে তিনি জানান। বাঁধের কাজে আর কোনো সময় বাড়ানো হবে কিনা এমন প্রশ্ন করা হলে বলেন, এ বিষয়ে জেলা কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবেন।
নয়া শতাব্দী/এসএ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ